প্রস্তুতি: গেলকে সামলানোর মহড়া চলছে নাইট রাইডার্সের আন্দ্রে রাসেলের। শুক্রবার ইডেনে। নিজস্ব চিত্র
ইডেনে যে যাঁর নিজের কাজ করছিলেন শান্তিতে। শনিবারের ম্যাচের প্রস্তুতি। মাঠকর্মী থেকে আয়োজক সংস্থা, টিভি সংস্থার কাজ করছিলেন যাঁরা, হঠাৎ সবাই সাবধান। তটস্থও বলা যায়। কার মাথায় বা শরীরে সাদা কোকাবুরা বল এসে আছড়ে পড়বে, সেই আতঙ্কে।
নেট খুলে ফেলে খোলা মাঠে বড় শট মারা শুরু করলেন আন্দ্রে রাসেল। সঙ্গে সুনীল নারাইনও। ক্যারিবিয়ান শক্তিতে ভরপুর শটগুলো মাঠের যেখানে সেখানে গিয়ে পড়তে শুরু করল। মাঝে মাঝে এক একটা শট তো মাঠের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তেও পৌঁছে যাচ্ছিল। রাসেলের যে রাক্ষুসে শটগুলো সোমবার দেখেছিল ভরা ইডেন, সেই শটগুলোই যেন ফিরে এল তাঁর ব্যাটে। শুক্রবার এতটাই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন রাসেল যে, একবার নেটে মনের মতো শট নিতে না পেরে মেজাজ হারিয়ে ব্যাটের আঘাতে স্টাম্পও ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেন।
শনিবার ইডেনে তিন রকম ঝড় আসার সম্ভাবনা নিয়ে জোর আলোচনা ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে। এক) কালবৈশাখী। যে কোনও আগাম খবরের ধার ধারে না। দুই) ক্রিস গেলের ব্যাটের ঝড়। তিন) সেই ঝড়, যা সোমবার রাসেল তুলেছিলেন তাঁর ব্যাটে। কোন ঝড় ইডেনে আছড়ে পড়বে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচে, সেই জল্পনাতেই সরগরম কলকাতা। টিকিটের চাহিদাও তুঙ্গে।
গেল ঝড়ের পাল্টা জবাব দিতেই বোধ হয় রাসেল, নারাইনদের ওই অনুশীলন। জোর চর্চা শোনা গেল এই নিয়েও। বৃহস্পতিবার রাতে মোহালিতে যে তাণ্ডব করেছেন ‘ইউনিভার্স বস্’, তার পরে শনিবারের ম্যাচেও এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। নাইটদের শিবিরেও প্রস্তুতির বেশির ভাগটাই এই গেল-ঝড় ঘিরেই। গেল বড় রান তুললে, পাল্টা আরও বড় রান তোলার এই প্রস্তুতি। তার উপরে দলের বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক বলে দিলেন, গেলকে আটকানোর জন্য আলাদা ছক তৈরি। ছকটা কী, তা অবশ্য খুলে বললেন না বোলিং কোচ। এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘‘আমি আপনাদের তা বলে দিই, আর সবাই জেনে যাক। সেটি হচ্ছে না।’’
তবে গেল নিয়ে নাইট শিবিরের পরিকল্পনাটা কিছুটা আন্দাজ করা গেল স্ট্রিকের পরের কথাগুলো থেকে। বললেন, ‘‘গেল মানেই বিপদ। ওর মতো ব্যাটসম্যানকে যদি ক্রিজে থাকতে দেন। যদি ওকে ছন্দে আসতে দিয়ে ওর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তা হলেই সর্বনাশ। গেল যদি ওর এলাকার মধ্যে বল পায়, তা হলেই পেটাবে। গতকাল রাতে সেটাই হয়েছে। ওকে আটকাতে তো ভাল করেই ছক কষেছি আমরা। বাকি সবার জন্যই পরিকল্পনা তৈরি।’’
গেলকে শুরুতেই থামিয়ে দাও— এটাই যে শনিবার নাইট শিবিরের লক্ষ্য, বোঝা গেলেও, তা কী ভাবে করবেন, তা নিয়ে মুখে কুলুপ সবার। যাতে তার বিন্দুমাত্র আঁচ না পায় কেউ, সে জন্যই কি শুক্রবার দলের প্রধান বোলারদের দিয়ে নেটে বোলিং করানো হল না? নারাইন, কুলদীপ যাদব, পীযূষ চাওলা, মিচেল জনসনদের কাউকেই এ দিন হাত ঘোরাতে দেখা যায়নি নেটে। তাঁদের হয়তো লুকিয়েই রাখা হল গেল-ঝড় আটকানোর কৌশল গোপন করতে।
কিন্তু দলের পেসাররা যে রকম রান বিলিয়ে যাচ্ছেন, তাতে শনিবার গেলের মোকাবিলায় তাঁদের কাজে লাগানো হবে কি? না স্পিনারদেরই শুরু থেকে ব্যবহার করা হবে? বৃহস্পতিবার রশিদ খানকে যে ভাবে পিটিয়েছেন ক্যারিবিয়ান তারকা, তার পরে এই কুলদীপদের দিয়ে গেল-বধের কাজটাও খুব একটা সহজ লাগছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy