প্রস্তুতি: মোরের পরামর্শ নিয়ে তৈরি হয়েছেন ঋষভ পন্থ। ফাইল চিত্র
তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই মনে করেন, কিপিং নিয়ে আরও ঘষামাজা করতে হবে ঋষভ পন্থকে। যে জন্য ইংল্যান্ড সফর থেকে ফেরার পরেই কিরণ মোরের কাছে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ঋষভ। নিজেকে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য তৈরি করতে।
অ্যাডিলেডে ৬ ডিসেম্বর থেকে আবার সেই পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে ঋষভের। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে। কতটা তৈরি ভারতের তরুণ উইকেটকিপার? সোমবার আনন্দবাজারকে ফোনে ভারতের প্রাক্তন উইকেটকিপার মোরে বললেন, ‘‘ঋষভকে কাছ থেকে দেখে আমি দুটো জিনিস বুঝেছি। এক, ছেলেটার মধ্যে প্রতিভা আছে। ও বিশ্বের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হয়ে উঠতে পারে। দুই, ওর মানসিকতা। খুবই কঠিন মানসিকতার ছেলে ঋষভ। এই দুটো গুণ ওকে অনেক সাহায্য করবে।’’ তা হলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আসন্ন টেস্ট সিরিজে কী আশা করছেন ঋষভের থেকে? মোরের মন্তব্য, ‘‘আমি প্রথমেই দারুণ কিছু আশা করছি না। মনে রাখতে হবে, কিপিংটা খুব সহজ কাজ নয়। ভারতীয় দলে এসেই একজন তরুণের পক্ষে দারুণ কিছু করাটা খুব কঠিন। ঋষভকে নিয়ে বলব, ও ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারে। দারুণ লড়াকু ক্রিকেটার। ঋষভ এখন একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যখন সেই প্রক্রিয়াটা শেষ হবে, ভারত দারুণ একজন ক্রিকেটার পাবে।’’
সেই প্রক্রিয়ার সঙ্গে তো আপনিও জড়িয়ে আছেন। ঋষভের সঙ্গে তো আপনিও এনসিএ-তে (জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি) কাজ করেছেন। কতটা রদবদল করতে হয়েছে ওর টেকনিকে? মোরের জবাব, ‘‘আমি কয়েকটা জিনিস নিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলেছি। ছোটখাটো কয়েকটা ব্যাপার শুধরে দিয়েছি।’’ তাতে যে লাভ হয়েছে, সেটা মানছেন মোরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ এবং অস্ট্রেলিয়ায় ঋষভকে কিপ করতে দেখে বুঝেছেন, অনেক উন্নতি হয়েছে ছেলেটার। ‘‘ঋষভ নিজেও সব মিলিয়ে খুশি,’’ বলছিলেন মোরে। কী কী ‘টেকনিক্যাল পরামর্শ’ তিনি ঋষভকে দিয়েছেন, তা নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা আছে। অন্যান্য সূত্র থেকে যত দূর জানা গিয়েছে, মাথার অবস্থান, শরীরের ভারসাম্য, পায়ের নড়াচড়া— এই সব নিয়েই দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
মোরে আরও একটা আশার কথা শুনিয়েছেন। ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় কিন্তু কিপিং করা ততটা কঠিন নয়। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ওখানে বল সে রকম সুইং করে না। তাই বাউন্সটা সামলাতে পারলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়,’’ বলছিলেন তিনি। তবে একটা ব্যাপারে মোরে সতর্ক করে দিতে চান ভারতীয় দলের দুই উইকেটকিপার— পার্থিব পটেল এবং ঋষভকে। মোরের কথায়, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার পিচে শেষ দু’দিন যখন বল ঘুরতে থাকে, তখন কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। আমি দেখেছি, ওখানকার পিচেও ফাটল ধরে শেষ দিকে। বোলারদের জুতোর স্পাইকে ক্ষত তৈরি হয়। সেখানে পড়ে বল ঘোরে। তার উপর উইকেটে বাউন্স থাকায় কিপারদের কাজটা কঠিন হয়ে যায়। আর আমাদের দু’জন কিপারই সে রকম লম্বা নয়। ফলে ওদের সতর্ক থাকতে হবে টেস্টের শেষ দিকটায়।’’
দিন কয়েক পরেই টেস্ট খেলতে নামছেন ঋষভ। কী পরামর্শ দিতে চান তাঁকে? একটু ভেবে মোরে বললেন, ‘‘আমি বলব, ঋষভ মাঠে নেমে খেলাটা উপভোগ করো। টেকনিক নিয়ে বেশি মাথা ঘামিয়ো না। বরং যেটা তোমার স্বাভাবিক ভাবে আসে, সে ভাবেই খেলাটা খেলো।’’
ক্রিকেট জীবনে, কোচিং জীবনে আপনি প্রচুর উঠতি প্রতিভা দেখেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন প্রতিভা ঋষভকে নিয়ে কতটা আশাবাদী? ‘‘আশাবাদী?’’ কিপার জীবনের ক্ষিপ্রতাতেই উত্তরটা এল মোরের কাছ থেকে, ‘‘আমি নিশ্চিত, ঋষভ একদিন দুর্দান্ত ক্রিকেটার
হয়ে উঠবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy