প্রতিপক্ষ: হায়দরাবাদে খলিল ও নতুন চেহারায় ওয়ার্নার। টুইটার
আইপিএলের পারফরম্যান্স বিশ্বকাপে প্রভাব ফেলবে না, এমনই বলে রেখেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। কিন্তু তা সত্ত্বেও চতুর্থ পেসারের জন্য যে লড়াই হচ্ছে, তার ফয়সালা হতে পারে আসন্ন আইপিএলেই। যেখানে লড়াইয়ে আছেন অস্ট্রেলিয়া-নিউজ়িল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলের হয়ে খেলা খলিল আহমেদও। বিশ্বকাপে জায়গা পাকা করার লড়াই খলিল শুরু করছেন ইডেনে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে। যে লড়াইয়ে এই বাঁ হাতি পেসারের অস্ত্র হতে চলেছে গ্লেন ম্যাকগ্রা, জাহির খানের মন্ত্র।
যে ম্যাচে খুব সম্ভবত খেলতে দেখা যাবে ডেভিড ওয়ার্নারকেও। শনিবারই তিনি হায়দরাবাদে পৌঁছে গিয়েছেন। বল বিকৃতি কাণ্ডে নির্বাসিত থাকা ওয়ার্নারের শাস্তি উঠছে ২৯ মার্চ। যার পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়েও খেলতে পারবেন। ইতিমধ্যেই ওয়ার্নার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন। এ বার আইপিএলেও তাঁকে প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলাতে চায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২৪ মার্চ ইডেনেই ব্যাট হাতে নেমে পড়বেন ওয়ার্নার।
শুক্রবারই সানরাইজার্স শিবিরে যোগ দিয়েছেন খলিল। শনিবার হায়দরাবাদ থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বলছিলেন, ‘‘সমস্যায় পড়লেই জাহির ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলি। উনি আমাকে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন করার কথা বলে থাকেন। সেগুলো আমি মেনে চলার চেষ্টা করি।’’ জানা গিয়েছে, জাহির বারবার লেংথটা ঠিক করার কথা বলেছেন খলিলকে। মনে করিয়ে দিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া-নিউজ়িল্যান্ডের পিচে খলিল একটু বেশি শর্ট অফ লেংথে বল ফেলেছেন। যে কারণে সুইংটা পাননি। প্রত্যাবর্তনের লড়াইয়ে জাহির দুটো পরামর্শ দিয়েছেন খলিলকে। এক, বিশ্বকাপের কথা বেশি না ভেবে মনঃসংযোগ করতে হবে বর্তমান ম্যাচের উপরে। দুই, পিচ এবং পরিবেশের কথা মাথায় রেখে লেংথের হেরফের করে যেতে হবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
খলিলের অ্যাকশন বা বোলিংয়ে যে কোনও সমস্যা নেই, সেটা বলেছেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি পেসারের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে। অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তির কথা উঠতেই খলিল বললেন, ‘‘ম্যাকগ্রা বলে দিয়েছেন, আমার অ্যাকশনে কোনও সমস্যা নেই। যে ভাবে বল করছি, ঠিকই আছে। শুধু আমার মানসিকতা ঠিক করতে হবে। উনি বলেছেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, নিজের উপরে ভরসা রাখতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে, অবস্থা যতই খারাপ হোক না কেন, আমি ঠিক বেরিয়ে আসতে পারব। ওঁর পরামর্শ মাথায় রাখছি।’’
ম্যাকগ্রার ক্লাসে যখন প্রথম এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে এসেছিলেন খলিল, একটা জিনিস খুব বেশি করে আয়ত্ত করতে চেয়েছিলেন। ‘‘উনি যখন ক্রিকেট খেলতেন, তখন দেখতাম, ছ’টা বল ঠিক এক জায়গায় ফেলতেন। ওই রকম ধারাবাহিকতা দেখানোর জন্য এখনও খাটছি,’’ বলছিলেন খলিল। শোনা গেল, এর জন্য ছোট্ট একটা পরামর্শও পেয়েছেন বাঁ হাতি পেসার। ম্যাকগ্রা-মন্ত্র হল— অফ স্টাম্পের মাথা লক্ষ করে বল করে যাও।
কেকেআর ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন? জবাব এল, ‘‘ইডেনে আশা করি সাহায্য পাব। ওখানকার পিচে বাউন্স আছে। সন্ধ্যার পরে ফ্লাডলাইটে বল মুভ করবে বলে মনে হয়।’’ নাইটদের কোনও ব্যাটসম্যানকে আলাদা করে চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরছেন না। খলিল বলছেন, ‘‘সবার জন্যই আমাদের পরিকল্পনা থাকবে। সে ভাবেই তৈরি হচ্ছি।’’
ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে খলিল বুঝেছেন, তাঁর বোলিং অস্ত্রে আরও বৈচিত্র আনতে হবে। বলছিলেন, ‘‘দেখেছি, ভুবনেশ্বর কুমার, যশপ্রীত বুমরারা কী ভাবে বল করে। আমিও চেষ্টা চালাচ্ছি বৈচিত্র আনতে। বোলিংয়ের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি চেষ্টা করছি ইয়র্কার দেওয়ার। প্র্যাক্টিসে ইয়র্কার করার উপরে জোর দিচ্ছি।’’
বুমরা বা ভুবনেশ্বরের কাছ থেকে কি কোনও পরামর্শ পেয়েছেন? ভুবিকে তো আপনি সানরাইজার্সেও পাচ্ছেন। খলিল বললেন, ‘‘কোনও বিশেষ ডেলিভারি নিয়ে জানতে চাইনি। তবে ম্যাচ চলাকালীন সব সময় সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোন ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে কী বল করা উচিত, তা জানতে চাই। কোচ, মেন্টর, সিনিয়রদের সব পরামর্শ আমাকে আরও ভাল বোলার করে তুলবে বলেই বিশ্বাস।’’
জানেন না, আইপিএলের পারফরম্যান্স তাঁর জন্য ভারতীয় দলের দরজা খুলে দেবে কি না। কিন্তু এই আশ্বাস দিচ্ছেন যে, নতুন এক খলিল আহমেদকে দেখা যাবে এ বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy