ফুরফুরে: অনুশীলনেও জয়ের উৎসব জবির। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
এক জন ডার্বিতে গোল করে উপহার পেয়েছিলেন স্কুটার। আর এক জন পাচ্ছেন সাইকেল!
প্রথম জন আই এম বিজয়ন। সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ডার্বিতে গোল করায় মোহনবাগানের এক কর্তা স্কুটার উপহার দিয়েছিলেন তাঁকে।
দ্বিতীয় জন জবি জাস্টিন। কাকতালীয় ভাবে তিনিও বিজয়নের রাজ্য কেরলের। ইস্টবেঙ্গলের তরফে তাঁকে নতুন সাইকেল দেওয়া হচ্ছে।
বিজয়ন ও জবির ডার্বির উপহারের কাহিনিতে অবশ্য সামান্য পার্থক্য রয়েছে। ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারকে ডার্বির আগে সবুজ-মেরুনের এক কর্তা বলেছিলেন, হ্যাটট্রিক করতে পারলে মোটরবাইক উপহার দেবেন। বিজয়ন যদিও জোড়া গোল করেছিলেন। তাই পুরস্কার হিসেবে মোটরবাইকের বদলে স্কুটার পেয়েছিলেন তিনি।
ডার্বির দু’দিন আগে প্রিয় সাইকেল চুরি হয়ে যায় জবির। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাইকেলের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘আমার সাইকেল চুরি হয়ে গিয়েছে। সাইকেল খুঁজে পেতে আমাকে সাহায্য করো।’’ খুঁজে যদিও পাননি জবি। তাই সিদ্ধান্ত নেন, ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পেলেই নতুন সাইকেল কিনবেন। তা অবশ্য করতে হচ্ছে না লাল-হলুদ স্ট্রাইকারকে। জানা গিয়েছে, উপহার হিসেবে ক্লাবের তরফেই সাইকেল দেওয়া হবে জবিকে।
ইস্টবেঙ্গলের তো বটেই, সম্ভবত ভারতীয় ফুটবলে জবিই একমাত্র তারকা যাঁর গাড়ি নেই। নিয়মিত সাইকেল চালিয়ে অনুশীলনে যান। বাকিরা কেউ নিজের গাড়িতে, কেউ মোটরবাইকে যাতায়াত করেন। গাড়ি কেনেন না কেন? হাসতে হাসতে তিনি একবার বলেছিলেন, ‘‘আমি যা উপার্জন করি, তা গাড়ি কেনার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই আমার জন্য সাইকেলই ভাল। যে দিন বেশি রোজগার করব, সে দিন গাড়ি কেনার কথা ভাবব।’’
এই মুহূর্তে লাল-হলুদ স্ট্রাইকার যে রকম ছন্দে আছেন, তাতে আগামী মরসুমে তাঁকে নেওয়ার জন্য সব দলই ঝাঁপাবে। তখন নিশ্চয়ই আর সাইকেলে চড়বেন না? জবি এই মুহূর্তে আই লিগ ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে চান না। সোমবার রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে চেন্নাই সিটি এফসি হেরে যাওয়ায় স্বস্তি লাল-হলুদ শিবিরে। ১৪ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে পেদ্রো মানজ়িরা। এক ম্যাচ কম খেলে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে ইস্টবেঙ্গল। কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া ফুটবলারদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, অন্য দলগুলো কী করছে তা নিয়ে ভাবার দরকার নেই। ইস্টবেঙ্গলকে এখন সব ম্যাচে জিততে হবে। ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচ যুবভারতীতে ৭ ফেব্রুয়ারি। প্রতিপক্ষ নেরোকা এফসি। ক্লান্তি কাটিয়ে ফুটবলারেরা যাতে তরতাজা হয়ে ওঠেন, তার জন্য দু’দিন বিশ্রাম দিয়েছেন আলেসান্দ্রো। বৃহস্পতিবার থেকে ফের আই লিগের প্রস্তুতি শুরু করার পরিকল্পনা তাঁর।
তবে ডার্বি জয়ের উন্মাদনা কি এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়। সোমবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে খাইমে সান্তোস কোলাদো-দের রিকভারি সেশন ছিল। আগের দিন যাঁরা প্রথম একাদশে ছিলেন, তাঁরা শুধু ফুটভলি খেললেন। বাকিদের অনুশীলন করান স্প্যানিশ কোচ। অনুশীলন শেষ হওয়ার পরে পালন করা হল ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকার জন্মদিন। কেক কাটলেন লাল-হলুদের মিডফিল্ডার। এই অপেক্ষাতেই যেন ছিলেন বাকি ফুটবলারেরা। ব্রেন্ডনের মুখে কেক মাখিয়ে দিলেন তাঁরা। আর ইস্টবেঙ্গল তারকা ভক্তদের আবদারে কুস্তিগিরদের মতো ঊরুতে চাপড় মেরে ছবি তুললেন।
ডার্বি জয়ের উৎসব সোমবারও চলল। নলেন গুড়ের রসগোল্লা নিয়ে মাঠে এসেছিলেন সমর্থকেরা। অনুশীলন শেষ করে বেরনোর সময় ফুটবলারদের মিষ্টিমুখ করালেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy