বিপাকে: মঙ্গলবার অনুশীলনে জবি জাস্টিন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
আই লিগ খেতাবের লড়াই থেকে কার্যত ছিটকে যাওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই আরও একটি ধাক্কা খেল ইস্টবেঙ্গল শিবির।
সোমবার যুবভারতীতে আইজল এফসি-র এক ফুটবলারকে থুতু দেওয়ার অভিযোগে জবি জাস্টিনকে অর্নির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করল ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে লাল-হলুদের সবার্ধিক গোল করা স্ট্রাইকারকে ছয় ম্যাচ সাসপেনশন ও বড় রকমের জরিমানা করা হতে পারে। ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘রেফারির রিপোর্টে না থাকলেও ম্যাচের ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ে দেখা গিয়েছে জবি বিপক্ষের (আইজল) ফুটবলারদের থুতু দিচ্ছেন। তাঁকে ৩ মার্চ কমিটির সামনে হাজির হতে হবে। যত দিন না এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তত দিন তিনি কোনও ম্যাচ খেলতে পারবেন না।’’ যা থেকে স্পষ্ট, রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে ২৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে তো নয়ই, এবং পঞ্চকুল্লায় মিনার্ভা এফ সি-র বিরুদ্ধে ৩ মার্চের ম্যাচেও লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নামতে পারছেন না জবি। জানা গিয়েছে, নিয়মানুযায়ী কোনও ফুটবলার বিপক্ষের কাউকে থুতু দিচ্ছেন প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন ছয় ম্যাচ সাসপেন্ড থাকবেনই। সেটা হলে আই লিগের শেষ ম্যাচ ছাড়াও ভুবনেশ্বরে সুপার কাপের প্রথম তিনটি ম্যাচ খেলতে পারবেন না কেরলের ফুটবলারটি।
সোমবার সকালে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন জবি। ক্লাবের পক্ষ থেকে দিল্লিতে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারের ম্যাচের জন্য যে ফুটবলার তালিকা আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস বেছে দিয়েছেন, তাতেও জবির নাম আছে। শাস্তিপ্রাপ্ত ফুটবলারকে কি বুধবার দলের সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে? সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গলের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সঞ্জিত সেন বললেন, ‘‘আমরা এখনও কোনও চিঠি পাইনি। তাই জবি দলের সঙ্গে যাবে বলেই জানি।’’ দিল্লিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানের চিঠি ফুটবল হাউসে চলে এসেছে মঙ্গলবার বিকেলে। রাতের খবর জবির শাস্তির চিঠি এ দিন পেয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। এই অবস্থায় জবিকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে কি না তা ঠিক করবেন আলেসান্দ্রো।
শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে মঙ্গলবারই জমা পড়েছে ইস্টবেঙ্গল-আইজল ম্যাচের রেফারির রিপোর্ট ও ভিডিয়ো। থুতু দেওয়ার অপরাধে আইজলের করিম ওমোলোজাকে ম্যাচের সত্তর মিনিটে লালকার্ড দেখিয়ে বের করে দিয়েছিলেন রেফারি। তিনি ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের থুতু দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওমোলোজাকেও ডাকা হয়েছে কমিটির সামনে। তিনিও সাসপেন্ড থাকবেন শাস্তি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত।
জবির বিষয়টি ধরা পড়ে ভিডিয়ো দেখার সময়। চেয়ারম্যান দেখেন, একদল আইজল ফুটবলারের মাঝে দাঁড়িয়ে তাঁদের থুতু দিচ্ছেন জবি। এর পরই সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত। ইস্টবেঙ্গলের এ বারের সবচেয়ে সফল ফুটবলার অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জবিকে ফোনে ধরা হলে বলে দিলেন, ‘‘আমি আইজলের কাউকে থুতু দিইনি। এ সব আমি করি না। আমার ফুটবল জীবনে এ রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। কোথাও মনে হয় ভুল হচ্ছে।’’ তাঁকে জানানো হয়, ভিডিয়োতে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান দেখেছেন, আপনি থুতু দিচ্ছেন। ছবি তো আর ভুল বলবে না? এর পরই জবি বলেন, ‘‘আমি জানি না। কেউ আমাকে এ সব নিয়ে কোনও কথা বলেনি। ক্লাব থেকে কোনও চিঠিও পাইনি। আমি তো জানি আমি দিল্লি যাচ্ছি।’’ আর ঊষাবাবু বলেন, ‘‘ভিডিয়োতে সব আছে। ও সভায় এলেই দেখতে পাবে।’’
জবি না খেললে আলেসান্দ্রোর দল সমস্যায় পড়বে সন্দেহ নেই। লিগ খেতাবের লড়াইয়ে এখনও অঙ্কের বিচারে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আই লিগের বাকি তিনটি ম্যাচ তাই গুরুত্বপূর্ণ। এ বছর কেরলের ফুটবলারটি দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। ভারতীয় ফুটবলার হিসাবে সর্বাধিক গোলও করেছেন। তাঁর পরিবর্তে লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ কাকে খেলান, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy