এই বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছেন বছর ছত্রিশের ঝুলন। ছবি: রয়টার্স।
একটা ফোনের জন্য জেগে বসেছিল পুরো বাড়ি। সঙ্গে রাত জাগছিল প্রায় গোটা পাড়া।
ডার্বিতে অস্ট্রেলিয়াকে দুরমুশ করার পরেই দিদিভাইকে অভিনন্দন জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ করেছিলেন বোন ঝুম্পা। ফোন এল বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে নাগাদ। ও প্রান্ত থেকে ঝুলন বললেন— “তোর অভিনন্দন ফাইনালের জন্য রেখে দে। ট্রফিটা এ বার নিয়েই ফিরব।”
নদিয়ার চাকদহ স্টেশন থেকে হাঁটা পথে বড় জোর ১০ মিনিট লালপুর। তস্য গলির ভিতরে দু’কামরার বাড়ি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের অন্যতম লিজেন্ড ঝুলন গোস্বামীর। কত দিন সে বাড়ির কলি ফেরানো হয়নি, কে জানে! যখনই কথা উঠেছে, ঝুলন বাদ সেধেছেন। আজব এক সংস্কার রয়েছে তাঁর। হাসতে-হাসতে ঝুম্পা বলেন, “যত বারই বাড়ি মেরামত করার কথা হয়েছে, দিদিভাই বলেছে— ‘না না, যত দিন খেলব, তত দিন এ বাড়িতে কিছু করা যাবে না।’ ব্যস, আর কিছু করা যায়নি।”
আরও পড়ুন:
৩৪ বছর পর কপিলের লর্ডসে তেরঙা ওড়ানোর অপেক্ষায় উইমেন ইন ব্লু
এই বাড়ি থেকেই ফ্রেন্ডস ক্লাবের মাঠে পাড়ার দাদাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে যেত ছোট্ট ঝুলন। এখান থেকেই তাঁর বেড়ে ওঠা। কিন্তু গত এক বছর এ বাড়িতে পা পড়েনি তাঁর। কলকাতায় দমদম পার্কের ফ্ল্যাটে থেকেই বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন। কলকাতায় থাকলে সঙ্গে থাকেন মা ঝর্না। মেয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার পরে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। বললেন, “বাড়ি আসতে যে ও কী ভীষণ ভালবাসে! শুধু প্র্যাকটিসের অসুবিধা হবে বলে গত বছর বিধানসভার ভোটের পরে আর এক বারও আসেনি।”
আসলে এই বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছেন বছর ছত্রিশের ঝুলন। ২০০৫ সালে খুব কাছাকাছি পৌঁছেও বিশ্বকাপ ছোঁয়া হয়নি তাঁর। ২০০৭ সালে আইসিসি-র বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার হয়েছেন। সদ্য এক দিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির পালকও জুড়েছে তাঁর মুকুটে। হয়তো এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। তা পেলেই ষোলো কলা পূর্ণ হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy