আশাবাদী: দেশেও সাফল্যের জন্য তৈরি বুমরা। ফাইল চিত্র
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিশেষজ্ঞ বোলার হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা বরাবর টেস্ট মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখে এসেছেন।
শুক্রবার মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় দলের ডান হাতি পেসার বলেছেন, ‘‘আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেট বরাবর খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং টেস্টেই নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছি।’’ ১২ টেস্টে ৬২ উইকেটের মালিক আরও বলেছেন, ‘‘আমি কখনওই শুধু ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বোলার হিসেবে চিহ্নিত হতে চাইনি। টেস্ট ক্রিকেটকে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। চেয়েছি টেস্ট মঞ্চে ছাপ ফেলতে।’’
বিরাট কোহালির দলের সেরা বোলিং-অস্ত্র জানিয়েছেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার সময় থেকে তাঁর মনে এই বিশ্বাস দৃঢ় ছিল যে, ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ভাল কিছু করতে পারলে তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবেন টেস্ট ক্রিকেটেও। বুমরা বলেছেন, ‘‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভাল বল করতে পারলে সেটা টেস্টেও করতে পারব, এই বিশ্বাস সব সময় ছিল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমার যাত্রা সবে শুরু হয়েছে। মাত্র ১২টি টেস্ট খেলেছি। টানা দু’বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরে যখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল, মনে হয়েছিল এত দিনে স্বপ্ন সফল হল।’’ তৃতীয় ভারতীয় বোলার হিসেবে সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট হ্যাটট্রিক করা বুমরার উপলব্ধি, ‘‘সাদা জার্সি পরে খেলার আলাদা একটা অনুভূতি রয়েছে। দলের সাফল্যের অংশীদার হতে পেরেই আমি খুশি।’’
টেস্টে এক ইনিংসে প্রথম বার পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জোহানেসবার্গে। বুমরা বলেছেন, ‘‘জীবনের প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলতে নেমে জোহানেসবার্গে পাঁচ উইকেট পাওয়ার তৃপ্তিটা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। পাঁচ নম্বর উইকেট পেয়ে নিজেকে বলেছিলাম, এটা আমার থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সেই মুহূর্তটা আমার কাছে ছিল অসাধারণ।’’
আগামী রবিবার ধর্মশালায় প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে দেশের মাঠে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। যদিও বুমরা থাকছেন বিশ্রামে। তিনি আবার ফিরবেন বিশাখাপত্তনমে তিন টেস্টের সিরিজের প্রথম ম্যাচে। বিদেশে টানা খেলার পরে দেশের মাঠের পরিবেশের সঙ্গে কত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবেন? মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তারকা বলেছেন, ‘‘দেশের মাটিতেই তো রঞ্জি ট্রফিতে প্রচুর ম্যাচ খেলেছি। ফলে এখানকার আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আমার চেনা। লাল বলে খেলার আগেই কিন্তু আমি ভারতের হয়ে প্রচুর ম্যাচে খেলেছি। তবে দেশের মাটিতে টেস্ট খেলতে নামাটা নতুন একটা অন্য ধরনের চ্যালেঞ্জ। সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’
হালফিলে তাঁর আউটসুইঙ্গার ক্রিকেটবিশ্বে আলোচ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুমরা জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডে খেলার পর থেকেই তাঁর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় এবং তিনি আউটসুইং করানোর প্রয়াস শুরু করেন। এর আগে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের শরীরের দিকে ধেয়ে আসা বলই তিনি বেশি করতেন। বুমরা যদিও বলছেন, ‘‘আমি আগেও কিন্তু আউটসুইং ডেলিভারি করতাম, তবে সেটা তেমন কার্যকরী ছিল না। ইংল্যান্ডে খেলার পরেই আউটসুইং করানোর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। বিশেষ করে, ডিউকস বলে সুইংটা খুব বেশি হয় এবং সেটাই আমাকে আরও বেশি প্রত্যয়ী করে তোলে। জানতাম যত বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলব, নিজের পরিকল্পনাগুলো আরও সহজে বাস্তবায়িত করতে পারব।’’
ভবিষ্যতে কি কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার কোনও সম্ভাবনা রয়েছে? অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্নও করা হয় তাঁকে। বুমরার জবাব, ‘‘খেলতেও পারি। তবে এখন তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। এখন তো সারা বছর ধরেই খেলতে হয়। ফলে খুব কমই সুযোগ থাকে শরীরকে বিশ্রাম দেওয়ার। টানা ১২ মাস ক্রিকেট খেলতে কেউ পারবে না।’’ ভারতীয় দলের বোলিং কোচ বি অরুণের কাছেও কৃতজ্ঞ বুমরা। বলছেন, ‘‘উনি আমার উত্থানের ধাপগুলো দেখেছেন। ফলে খুব ভাল জানেন শক্তি এবং দুর্বলতার জায়গাগুলো। আমি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেছিলাম, উনি ধীরে ধীরে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিতে শুরু করেন।’’ সেখানেই না থেমে বুমরা আরও যোগ করেন, ‘‘যে কঠোর অনুশীলন অরুণ স্যর করিয়ে থাকেন, তারই সুফল মাঠে সকলে দেখতে পাচ্ছেন। দলে ওঁর বিশেষ এক ভূমিকা রয়েছে।’’ বোলিং কোচের চুক্তি নবীকরণে খুশি বুমরা। বলছেন, ‘‘নতুন চুক্তিতে উনি আরও দু’বছর আমাদের সঙ্গে থাকবেন। সেটা সকলের কাছেই দারুণ আনন্দের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy