কেরলের ওয়েনাড়ে ভূমিধসের ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে ছয় মাস। এখনও ছন্দে ফেরেনি ধস কবলিত পাহাড়ি এলাকার জনজীবন। এমনকি, এখনও শুরু হয়নি পুনর্বাসনের কাজ। সেই আবহেই এ বার পথে নামলেন ওয়েনাড়ের চুড়লমালার বাসিন্দারা।
ধসকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত পুনর্বাসনের দাবিতে রবিবার সকাল থেকেই ‘জন শব্দম অ্যাকশন কমিটি’র নেতৃত্বে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সেখানকার মানুষ। সকাল ৯টা নাগাদ প্রথমে ধসকবলিত এলাকায় অস্থায়ী কুঁড়েঘর তৈরি করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়েরা। এর পর চুড়লমালার বেইলি ব্রিজের কাছে মিছিল করে এগোতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ মিছিল করতে বাধা দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। সোমবার ওয়েনাড়ের জেলাশাসকের দফতরের সামনে অনশনে বসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানাচ্ছে, কেন্দ্রের থেকে দ্রুত পুনর্বাসনের পাশাপাশি প্রতিশ্রুত জমি চেয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাসিন্দারা। প্রসঙ্গত, গত মাসেও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন দাবি করেছিলেন যে, কেন্দ্রের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনও পুনর্বাসনের টাকা পাননি ওয়েনাড়বাসী। জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনও রকম আর্থিক সহায়তা না আসায় আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা থাকা ৭১২.৯৮ কোটি টাকাই দুর্গতদের পুনর্বাসনে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিজয়নের কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রের কাছ থেকে ধস কবলিত এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য ২,২২১ কোটি টাকা চেয়েছিল রাজ্য। যদিও, পোস্ট ডিজাস্টার নিড্স অ্যাসেসমেন্ট (পিডিএনএ)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এ কাজে আরও টাকার প্রয়োজন। কিন্তু সেই টাকাটুকুও দেয়নি কেন্দ্র।’’ তবে সে সময় মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ জন্য আগামী ৬১ দিনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজয়নের মন্ত্রিসভা। যাঁরা যাঁরা প্রস্তাবিত টাউনশিপে থাকতে চাইবেন না, তাঁদের প্রত্যেককে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। আর গোটা টাকাটাই দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে।
আরও পড়ুন:
গত ৩০ জুলাই ভোরে যখন ঘুমে আচ্ছন্ন গোটা গ্রাম, তখনই হঠাৎ প্রবল শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে ওয়েনাড়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই মাটির তলায় চাপা পড়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। এর পরের ক’দিন ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে সরিয়ে প্রাণের স্পন্দন খুঁজে গিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু সাড়া মেলেনি। সরকারি হিসাবে প্রাণ হারিয়েছেন ২৮০ জন। সর্বস্বান্ত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।