মেজাজে: আত্মবিশ্বাসী ইউসুফ পাঠান। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইডেনের বাইরে তখন ঢাকের আওয়াজ। ছট পুজোর শোভাযাত্রা যাচ্ছে। কিন্তু সেটা ছাড়াও গেটের সামনে অন্তত শ’দুয়েক লোক।
ইডেনে নাইট রাই়ডার্সের টিমবাস এসে দাঁড়াতেই ‘কেকেআর কেকেআর’ ধ্বনি তুলল তারা। মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে অভিনব অভ্যর্থনা জানানো হল গৌতম গম্ভীর এবং তাঁর দলকে।
ইডেনে প্রস্তুতি ম্যাচে নামার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ইউসুফ পাঠানও বেশ খোশমেজাজে। ঢাকের আওয়াজ শুনে ইউসুফ ঠাট্টা করে বললেন, ‘‘আরে এটা তো কলকাতা। ঢাকের আওয়াজ না হলে হয় নাকি!’’
গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ। মঙ্গলবার রাজকোট উড়ে যাচ্ছে নাইট রাই়ডার্স। রায়নাদের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে কি চাপ অনুভূত হচ্ছে কোনও? ইউসুফ বলছেন, ‘‘না, না। চিন্তার কী আছে! আমরা এত দিন ধরে খেলছি আইপিএল। প্রতিটা অ্যাওয়ে মাঠের সম্পর্কেই ধারণা আছে। রাজকোটে উইকেট কী রকম হতে পারে সেটা সঠিক ভাবে জানতে পারব ওখানে পৌঁছেই।’’ তার পরেই যোগ করলেন, ‘‘কিন্তু সামান্য হলেও আন্দাজ তো আছেই।’’ তবে ইউসুফ পরে স্বীকার করে নিলেন, মরসুমের প্রথম ম্যাচে একটু হলেও চাপ থাকে। ‘‘আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই আমাদের কাজ,’’ বলে দিচ্ছেন তিনি।
ইউসুফ মনে করছেন, গত বারের তুলনায় এ বার কলকাতা আরও ভাল দল। প্রথম একাদশ বাছাই এক ধরনের চ্যালেঞ্জ হবে। ‘‘এ বার আমাদের দলে অনেক ধরনের ক্রিকেটার আছে। বোলার যেমন আছে, ব্যাটসম্যানও আছে, আবার অলরাউন্ডারও নেওয়া হয়েছে। আমার তো মনে হয় অনেক বেশি ভারসাম্য আছে দলে। সবাই চলে এলে প্রথম একাদশ বাছাই কঠিন হয়ে যাবে,’’ বলছেন ইউসুফ।
আরও পড়ুন: রিও-র বদলা দিল্লিতে নিয়ে পাল্টা গর্জন সিন্ধুর
কেকেআর-এর বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান মনে করছেন প্রথম কয়েকটা ম্যাচের পরেই টিম ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পারবে সঠিক কম্বিনেশেন কোনটা হবে। ‘‘প্রথম কয়েকটা ম্যাচের পরেই বুঝতে পারব আমরা কী রকম স্টাইলে খেলতে চাই। আমরা কতটা ভাল খেলতে পারছি সেটা ম্যাচ খেলার আগে বলা যাবে না,’’ বলছেন ইউসুফ।
কলকাতা নাইট রাইডার্সকে আর শক্তিশালী করছে দুই যাদব। ‘‘উমেশ তো গোটা মরসুম ভাল বল করেছে। কুলদীপও অভিষেকে ভাল খেলেছে। এরা কলকাতাকে আরও শক্তিশালী করবে,’’ বলছেন তিন বার আইপিএল জয়ী ক্রিকেটার।
গত কয়েক বছরে কেকেআর-এর অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন আন্দ্রে রাসেল। সেই বিধ্বংসী ব্যাটিং এ বার আর দেখা যাবে না। এতে কি উদ্বেগে কেকেআর? ইউসুফ বলছেন, ‘‘না, আমরা উদ্বিগ্ন নই। রাসেলের নিজস্ব একটা স্টাইল ছিল। ও ভাল পারফরম্যান্স করত। ড্রেসিংরুমেও খুব ভাল পরিবেশ রাখার চেষ্টা করত। কিন্তু যারা আছে তাদের নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’’
শনিবার দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ক্রিস ওক্স। কয়েক দিন আগেই ওকসের প্রশংসা করেছিলেন সাইমন ক্যাটিচ। ইউসুফও বললেন, ‘‘ওক্স খুব ভাল ক্রিকেটার। ও ব্যাটিং করতে পারে। সঙ্গে বোলিংও। আগেও যেমন বললাম আমাদের দলটা খুব ব্যালান্সড। সেটাই আমাদের সাহায্য করবে এ বার।’’
তিন বার আইপিএল জিতেছেন। গত কয়েক বছর চুটিয়ে খেলেছেন কলকাতা দলে। তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলাটা কতটা চ্যালেঞ্জের? ইউসুফ বলছেন, ‘‘যখন অনেক দিন ধরে কেউ ক্রিকেট খেলে তখন বাকিরাও দেখে শিখতে চায় কী ভাবে সে নিজেকে ফিট রাখে। আমি যেমন সিনিয়র ক্রিকেটারদের দেখে শিখেছিলাম। জুনিয়ররাও আমাকে দেখে শিখবে।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘জুনিয়রদের জন্য খুব ভাল একটা মঞ্চ আইপিএল। সিনিয়র ক্রিকেটারদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। আর শেখাও উচিত।’’
কথা বলতে বলতে তাঁর মন চলে গেল ছ’বছর আগের ওয়াংখেড়ের সেই ঐতিহাসিক দিনে। ২ এপ্রিল ২০১১-য় শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সেই স্কোয়াডে ইউসুফও ছিলেন। যদিও প্রথম একাদশে জায়গা পাননি ফাইনালে। ‘‘শুধু আমার নয়। সেই দিনটা গোটা ভারতের জন্য গর্বের দিন। ১৯৮৩-র পর আমরা আবার বিশ্বকাপ জিতেছিলাম। সারা জীবন মনে থাকবে সেই দিনটা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy