চিপকের জয়টা দুর্দান্ত। কিন্তু অপ্রত্যাশিত নয়।
ইংল্যান্ড এই ধাক্কাটা সহজে সামলাতে পারবে বলে মনে হয় না। লাঞ্চে বিনা উইকেটে ৯৭ থেকে যদি তার দল দিন শেষ হওয়ার আগেই অল আউট হয়ে গিয়ে ম্যাচ হেরে যায়, তা হলে অ্যালিস্টার কুকের হতাশায় ডুবে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আসল সত্যিটা হল, এ রকম তো সারা সিরিজেই হয়েছে।
আসলে দুই দলের স্পিন বিভাগই তফাৎটা গড়ে দিল। একটা সফরকারী দলের কাছে পাঁচ টেস্টের সিরিজ অবশ্যই বেশ লম্বা। আর ইংল্যান্ড যে মানের স্পিন আক্রমণ নিয়ে এ দেশে এসেছিল, তাদের তো সিরিজটা একটু বেশিই দীর্ঘ মনে হয়েছে বোধহয়। তিন টেস্টের সিরিজ হলে হয়তো অতটা পর্যুদস্ত হতে হত না ওদের। কিন্তু পাঁচ টেস্টের সিরিজে ওদের এই দুর্বলতাটা বড্ড বেশি রকম ভাবে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। যত সিরিজ গড়িয়েছে, ইংল্যান্ডের হাল খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়েছে। মোহালির পরেই ইংল্যান্ড বুঝতে পারে যে ভারতকে দু’বার অল আউট করার মতো বোলিং ওদের নেই।
প্রথম ইনিংসে ৪০০-৪৫০ রান তোলার পরও একটা টিম ধারাবাহিক ভাবে হারছে, এটা কিন্তু সব দলের ক্ষেত্রে হওয়ার নয়। তা ছাড়া ম্যাচের বিভিন্ন অবস্থায় কুকের নিয়ন্ত্রণ হারানোটাও ওদের পক্ষে একটা চিন্তার বিষয়। যার সমাধান ওদের খুঁজে বার করতেই হবে। না হলে ওরা নিজেদের সেই আসল জায়গায় ফিরে যেতে পারবে না, যেখানে ওরা ছিল। আসলে বিশ্বের সব ভাল টিমেই ভাল স্পিনাররা সবসময়ই থেকেছে, যারা ম্যাচ জিতিয়েছে। ইংল্যান্ডকেও সে রকমই স্পিনার খুঁজে বার করতে হবে। এতগুলো কাউন্টি ওদের। ১৮টা। এতগুলো কাউন্টি থেকে জনা দুয়েক ভাল স্পিনার খুঁজে পাওয়া যাবে না?
ভারতের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো হয়েছে। ইংল্যান্ড যেমন খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়েছে, তেমনই সিরিজ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে ভারতের গ্রাফটা তেমনই ক্রমশ উপরের দিকে উঠেছে। এমন কতগুলো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে আমাদের ক্রিকেটাররা, যা ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। এক-একটা ইংল্যান্ডের মুখে নক-আউট পাঞ্চ দেওয়ার মতো। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব? বিরাট কোহালির ১৭৭ ও ২৪৫। করুণ নায়ারের ৩০৩। কেএল রাহুলের ১৯৯। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজার প্রায় তিরিশটা করে উইকেট তোলা। এগুলোই ঠিক করে দিয়েছে, সিরিজ কোন দিকে যাবে। ইংল্যান্ডের সেরা পারফরমার বলতে ছিল জো রুট। কিন্তু আসল সময়েই ওর ব্যাট কথা বলল না।
এই সিরিজে ভারতের পজিটিভ অনেকগুলো। কিন্তু আমি বলব, জাডেজা, করুণ আর ভাল পিচ— এগুলোই সবচেয়ে উল্লখযোগ্য। এই ধরনের উইকেটে খেললেই ভারতীয় দলের শক্তি আরও বাড়বে। প্রতিটা জয়ই কষ্টার্জিত। প্রতি টেস্টের প্রথম তিনটে দিন এক-একটা উইকেটের জন্য স্পিনারদের কী লড়াই-ই না করতে হয়েছে। এমন উইকেট যে, ভারতের ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরির পরেও ম্যাচ জেতাতে অনেক সমঝে খেলতে হয়েছে। এই ইনিংসগুলোই মানসিকতা আর বিশ্বাস তৈরি করে দেয়।
সব শেষে বিরাট কোহালির কথায় আসি। সিরিজের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ্টেন বিরাটের উন্নতিটা ছিল দেখার মতো। শেষ টেস্টের শেষ দিন লাঞ্চের পর ওর এফর্টই বুঝিয়ে দিয়েছিল, সিরিজ জয়ের কতটা খিদে নিয়ে মাঠে নেমেছিল ও।
সেরা ইনিংস
৫১ বলে ৮২। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে।
২৩৫। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়েতে চতুর্থ টেস্টে। কোনও ভারত অধিনায়কের সর্বোচ্চ রান।
১৩৪ বলে ১৫৪। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মোহালিতে দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচ।
২১১। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইনদওরে। বছরের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি।
কোহালি বিপ্লব
ওয়ান ডে-তে দ্রুততম ২৬ সেঞ্চুরি
(১৬৬ ইনিংস)।
জোড়া ডাবল সেঞ্চুরি করা একমাত্র
ভারতীয় অধিনায়ক।
ওয়ান ডে-তে দ্রুততম ৭০০০ রান
(১৬১ ইনিংস)।
ক্যালেন্ডার বর্ষে সর্বাধিক টি-২০ রান।
১৫ ম্যাচে ৬৪১।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy