ইডেনের হসপিটালিটি বক্সে তখন একজনের দিকেই চোখ সারা ইডেনের। বলিউড বাদশা। পাশেরই এক বক্সে যে এক মনে বসে ক্রিকেট উপভোগ করছেন এক সময় ভারতীয় ক্রিকেট রাজনীতির বাদশা বলে পরিচিত ইন্দরজিৎ সিংহ বিন্দ্রা, তা আর ক’জন খেয়াল করলেন?
জগমোহন ডালমিয়ার শহরে এসে ক্রিকেটের নন্দনকাননে বসে ক্রিকেট উপভোগ করছেন আই এস বিন্দ্রা! এমন দৃশ্য সাম্প্রতিককালে কেউ কল্পনা করতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। ডালমিয়া-ঘনিষ্ঠ এক সিএবি কর্তা জানালেন, ২০০৪-এর নভেম্বরে তিনি শেষ ইডেনে খেলা দেখেছেন। এগারো বছর পর আবার সত্তরোর্ধ বিন্দ্রা ইডেনে। প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট, ক্রিকেট প্রশাসনে যিনি একসময় ডালমিয়ার প্রিয় বন্ধু এবং সবচেয়ে বড় শত্রু দুইই ছিলেন, তিনি ফের তাঁর ‘জগ্গু’-র ডাকে ইডেনে। নিজেই সে কথা জানিয়ে দিলেন এবিপি-কে। হসপিটালিটি এনক্লোজারে বি-৫ বক্সে বসে বিন্দ্রা বললেন, ‘‘জগ্গু নিজে ফোন করে ডেকেছে, আমি আসব না! অনেক দিন পর ইডেনে এসে বেশ ভাল লাগছে। ইডেনের খোলনলচে তো পুরো বদলে গিয়েছে দেখছি।’’ দু’জনে অবশ্য একসঙ্গে বসে খেলা দেখলেন না। বিন্দ্রা যখন ক্রিকেটে মজে, তখন ডালমিয়া ক্লাব হাউসে, নিজের ঘরে।
কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর ক্রিকেট রাজনীতিতে যে তাঁদের দূরত্ব কম আলোচিত বিষয় নয়। সেই প্রসঙ্গ তুলতে বিন্দ্রা বললেন, ‘‘ক্রিকেটের মঙ্গলের দিকে আমি। সবসময়। যে লোকটা (শ্রীনিবাসন) ঘাড়ধাক্কা খেয়ে চেয়ার ছাড়তে বাধ্য হয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে তার চেয়ে খারাপ কেউ তো আর হতে পারে না। জগমোহন ডালমিয়া সেই জায়গায় অনেক পরিচ্ছন্ন লোক। সে জন্যই ওর ডাকে চলে এসেছি।’’
বোর্ডে অন্যতম প্রধান মুখ বিশ্বরূপ দে বললেন, ‘‘মঙ্গলবার এসেছেন বিন্দ্রা। দু’জনের একান্তে কথাও হয়েছে। এত দিন যে সম্পর্কটা খারাপ ছিল, সেটা এখন অনেক ভাল।’’ ডালমিয়া নিজে অবশ্য সেটা বুঝতে দিতে চাইলেন না। ইডেনের ক্লাব হাউসে বসে শুধু বললেন, ‘‘উনি এসেছেন শুনে ভাল লাগল। এর বেশি আর কী বলব?’’ ডালমিয়ার আইনি মহলে ঘনিষ্ঠ ও বোর্ডে আইনি উপদেষ্টা হিসেবে ফিরে আসা ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘আমি তো দু’জনের বন্ধুত্বের সোনার সময় দেখেছি। সেটা ভারতীয় ক্রিকেটেরও স্বর্ণযুগ ছিল। আমি নিশ্চিত, দু’জন ফের হাত মেলালে ক্রিকেট রাজনীতিটা পরিচ্ছন্ন হবে।’’
ক্রিকেট রাজনীতির জীবন কি সত্যিই দু’জন শেষ করবেন বন্ধুত্ব দিয়ে? সময়ই এর উত্তর দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy