ঐতিহাসিক: অবশেষে ইরানের মহিলারা ফুটবলের দর্শক। ছবি: এএফপি।
অবশেষে ইরানের মহিলারা স্টেডিয়ামে বসে ফুটবল ম্যাচ দেখলেন। শনিবার তেহরানের আজাদি স্টেডিয়ামে এই ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটল এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইরানের ক্লাব পারসেপোলিস এফসি বনাম জাপানের কাশিমা অ্যান্টলার্স ম্যাচে। যে খেলা দেখলেন ইরানের প্রায় হাজারখানেক মহিলা। শুধু দেখলেন না, স্থানীয় ক্লাবকে সারাক্ষণ উৎসাহিত করে গেলেন। ম্যাচ অবশ্য জাপানের ক্লাবটি ২-০ জিতে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হল।
ম্যাচের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে ইরানের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে লেখা হল, পারসেপোলিস হারেনি, জিতেছেন ইরানের মহিলারা। একটি সংবাপত্রের শিরোনাম ‘‘আজাদিতে মহিলারাই আসল চ্যাম্পিয়ন।’’ অন্য একটি সংস্কারপন্থী সংবাদপত্রে প্রথম পাতার প্রধান ছবি গ্যালারির উচ্ছ্বসিত মহিলারা। সেখানেও শিরোনাম, ‘‘এশীয় ফাইনালে ইরানের মেয়েদের জয়।’’ কেউ কেউ আরও একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করল, ‘‘ওঁরা হাজার খানেকে সত্যিকারের মহিলা।’’
ইরানে মহিলাদের খেলা দেখা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন এএফসি প্রেসিডেন্ট সালমান আল-খালিফা এবং ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনোও। সালমান বললেন, ‘‘মেয়েদের খেলা দেখার সুযোগ দেওয়ার জন্য ইরানের প্রশাসনকে ধন্যবাদ। আজকের রাতটা সত্যিই ঐতিহাসিক।’’ ইনফ্যান্টিনোর প্রতিক্রিয়া, ‘‘গ্যালারিতে ইরানের মেয়েদের দেখে আমি অভিভূত। বেশি ভাল লাগছে বিভেদের বেড়াজাল ভেঙে যাওয়ার এমন ঐতিহাসিক মুহূর্ত চাক্ষুষ করতে পেরে।’’
প্রসঙ্গত ১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে ইরানে মহিলাদের স্টেডিয়ামে বসে ফুটবল ম্যাচ দেখা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যদিও প্রশাসনের এই কঠোর সিদ্ধান্তের সমালোচনাও হয়েছে ইরানে। বিশেষ করে রাজনৈতিক মহলে। স্বভাবতই রবিবার প্রশাসন মহিলাদের খেলা দেখার অনুমতি দেওয়ায় সে দেশে অনেকেই খুশি। মোট ৮৫০ জনকে খেলা দেখতে দেওয়া হয়েছিল। একটি সূত্র জানাচ্ছে, মাঠে হাজির মহিলাদের বেশির ভাগ পারসেপোলিসের ফুটবলারদের আত্মীয়। বাকি অনেকে মহিলা ফুটবলার বা ফুটসল খেলোয়াড়।
এ দিন স্টেডিয়ামের গেট খোলার দু’ঘণ্টা আগে মহিলাদের মাঠে প্রবেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। যাতে কোনও ভিড় বা ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তাঁরা না পড়েন। তবে মহিলারা কিন্তু পুরুষদের সঙ্গে বসে খেলা দেখেননি। তাঁদের জন্য আলাদা স্ট্যান্ড নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। এমনিতে এর আগে বিপ্লবের ৪০ বছর পরে আয়ার্ল্যান্ডের কুড়ি জন মহিলাকে ইরানের স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন ইরানের মেয়েরাও স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতে পেরেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy