এক বছর আগে কলকাতায় ম্যাচ জিতে ছোট ছেলে আব্রামের হাত ধরে ইডেন পরিক্রমা করেছিলেন তিনি। সেই মুহূর্তই যে এক বছর পর উপহার হিসেবে তাঁর হাতে আসবে তা স্বপ্নেও মাথায় আসেনি শাহরুখ খানের।

আইপিএলের ভরা বাজারে প্রথম বার কলকাতায় পা দিয়েই ভক্তের কাছ থেকে আব্রামের সঙ্গে তাঁর সেই ইডেন পরিক্রমার পোর্ট্রেট পেয়েই আপ্লুত কিংগ খান। সকলের সামনে উপহারদাতাকে বলে ফেললেন, ‘‘কেকেআর-এর ক্রিকেটাররা দু’টো আইপিএল ট্রফি দিয়েছে। আর কেকেআর ভক্তের কাছ থেকে পেলাম একটা প্রিয় মুহূর্তের ছবি। ফ্যানদের এই ভালবাসাটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ছবিটা দেখলেই ‘দিল খুশ’।’’

আর যাঁর আঁকা এই ছবি পেয়ে ইডেনে পা দেওয়ার আগেই শাহরুখের ‘দিল’ এ দিন ‘খুশ’ হয়ে গিয়েছে, আলিপুরের সেই চিত্রকর আরাধনা ডালমিয়া স্বপ্নের নায়ককে ছবি উপহার দিয়ে আনন্দে ভাসছেন। বলছেন, ‘‘কেকেআর-এর সব ম্যাচে মাঠে যাই। কিন্তু এ বার শাহরুখ মাঠে না আসায় মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। দেড় সপ্তাহ আগে জানতে পেরেছিলাম কলকাতার শেষ ম্যাচে শাহরুখ মাঠে থাকবে। তার পরেই আব্রামের সঙ্গে এই ছবিটা এঁকে ফেলি। নিজের সৃষ্টি নায়ককে দিতে পারার মজাই আলাদা।’’

শনিবারের ভরদুপুরেই বান্ধবী কাজল পোদ্দারকে নিয়ে বাইপাসের ধারে নাইটদের হোটেলে চলে এসেছিলেন এই মহিলা চিত্রকর। বিকেলে কালবৈশাখীর ঝড়-জল মাথায় নিয়ে শাহরুখ যখন হোটেলে ঢুকছেন তখন নাইটদের হোটেলে তাঁর যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে শাহরুখের কাছে কাজলকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন আরাধনা। নারাইন, গম্ভীরদের নিয়ে টিম বাস তখন ইডেনের দিকে রওনা হচ্ছে। শাহরুখ দেরি করে ঢোকায় হোটেলে তাই ক্রিস লিন-দের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। মুম্বই থেকে স্ত্রী গৌরী, পুত্র আরিয়ান, আব্রামদের সঙ্গেই শাহরুখ এ দিন তাঁর টিমের ম্যাচ দেখাতে মুম্বই থেকে উড়িয়ে এনেছিলেন সোনু সুদ, সঞ্জয় কপূরদের। শাহরুখকে তাঁর আঁকা অ্যাক্রিলিক পেইন্টিং উপহার দিয়ে এসে লবিতে দাঁড়িয়ে আরাধনা বলছিলেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে কেক কাটার সময় আব্রামের সঙ্গে তাঁর ছবি উপহার পেয়ে বাচ্চা ছেলের মতোই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন শাহরুখ।’’

নায়কের জন্য বীরপুজোর আয়োজনে কমতি ছিল না। তবে সকলের আরাধনার মতো সৌভাগ্য হয়নি। কারণ এ দিন হোটেলের মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢোকেননি শাহরুখ। রাত পৌঁনে নটা নাগাদ ইডেনে যাওয়ার সময় পিছনের গেট দিয়েই তিনি বেরিয়ে যান। ফলে সই শিকারীরা শাহরুখের দেখা পাননি।

এদেরই একজন নিউ আলিপুরের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী পারমিতা চক্রবর্তী। কেকেআরের জার্সি গায়ে সকাল ন’টাতেই শাহরুখের ছবি দিয়ে সাজানো খাতা-সহ চলে গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে। কিন্তু সেখানে শাহরুখের কাছে পৌঁছতে না পেরে চলে আসেন বাইপাসের ধারে নাইটদের আস্তানায়।

হোটেলে এ দিন ডাক্তারদের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে থেকে দলছুট হয়ে ‘জেন ওয়াই’ ডাক্তারদের অনেকেই অটোগ্রাফের খাতা নিয়ে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ছিলেন। শাহরুখ দর্শন না হওয়ায় হতাশ তাঁরাও। মাঠে যাওয়ার আগে জুহি চাওলা অবশ্য শাহরুখের হয়ে তাঁদের সেলফি এবং সই দিয়ে যান। যা পেয়ে কলকাতার এক চিকিৎসকের মন্তব্য, ‘‘জুহি আর শাহরুখের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এসেছিলাম। সেগুলো জুহির হাতে তুলে দিয়েছি। কোনও দুঃখ নেই আর।’’