হুঙ্কার: ইডেনে হার না মানা কেকেআর। আর তাদের হার না মানা অধিনায়ক গম্ভীর। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
রাত সাড়ে আটটার ইডেন। বৃষ্টির বাঁধা টপকে ম্যাচ শুরু হওয়ার মুখে। ইডেন বেলের সামনে তখন মোবাইল ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। সেই ভিড়ের মধ্যে তাঁর হাসি মুখটা ঢেকে গিয়েছে। আসলে রোজ রোজ কী আর এত সামনে থেকে দেখা যায় বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ভারতীয় নক্ষত্রকে।
একটা দিনের জন্য নাইট-প্রীতি দূরে রেখেছিল ইডেন। রবিবাসরীয় রাতে যেন দু’ভাগ নাইটদের ঘরের মাঠ। ‘করব লড়ব জিতব রে-র’ মধ্যেও শোনা যাচ্ছে ‘গো আরসিবি’। বেগুনি রংয়ের ভিড়ের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের জার্সি।
জায়ান্ট স্ক্রিনে কোহালির মুখটা যত বার ভেসে উঠল জবাবটাও এলো ‘কোহালি কোহালি’ কোরাসে। মাথায় ফেট্টি, মুখে কোহালি লিখেও চলল ভারতীয় অধিনায়কের বন্দনা। তখন কে আর জানত যে, অল্প রানে অলআউট হয়ে গিয়েও দুর্দান্ত ভাবে ম্যাচে ফিরে আসবে কেকেআর। কে-ই বা ভেবেছিল যে, যাঁকে ঘিরে এই উন্মাদনা, সেই বিরাট কোহালি ব্যাট করতে নেমে ফিরে যাবেন প্রথম বলেই। কে ভাবতে পেরেছিল, ১৩১ রানে শেষ হয়ে গিয়েও কোহালির মহাতারকা আরসিবি দলকে গম্ভীরের বোলাররা শেষ করে দেবেন ৪৯ রানে।
গেইলকে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাস উথাপ্পাদের।
নির্ধারিত সময় থেকে আধঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন কোহালি। ওপেনার সুনীল নারাইন ঝড়ে আবার প্রথম ওভারে আসে ১৮ রান। প্রথম তিন ওভার শেষে নাইটরা তখন ৩৯-০। বারো কোটির টাইমাল মিলস ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে গেলেন। গৌতম গম্ভীরের উইকেট তোলেন। উইকেটকিপার কেদার যাদব ক্যাচ ধরেছেন কি না সেটা দেখার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য চান আম্পায়ররা। শেষমেশ দেখা যায় নাইট অধিনায়ক আউট। তারপরেই আবার এক এক করে উইকেট পড়তে থাকে নাইটদের। সুনীল নারাইন ক্যাচ আউট হন। রবিন উথাপ্পার উইকেট তোলেন স্যামুয়েল বদ্রী। চহালের ওয়াইড বলে ইউসুফ পাঠান স্টাম্প আউট হন। মণীশ পাণ্ডে ও কলিন গ্র্যান্ডহোমকেও দ্রুত ডাগআউটে ফেরান চহাল। সেই যে শুরু হয়ে গেল নাইটদের ব্যাটিং বিপর্যয়, তার পর আর দারুণ কিছু দেখা যায়নি। কেকেআর ইনিংস পুরো ২০ ওভারও টিকল না। ১৯.৩ ওভারে শেষ হয়ে গেল ১৩১ রানে। সর্বোচ্চ রান নারাইনের ১৭ বলে ৩৪। পাল্টা ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ঝটকা মহাতারকা-খচিত আরসিবি ব্যাটিংয়ের। তাঁর খেলা প্রথম বলেই আউট বিরাট কোহালি।
আরও পড়ুন: র্যামোসের লাল কার্ড, মেসি ম্যাজিকে রিয়াল বধ বার্সার
নেথান কুল্টার নাইলের বলে স্লিপে ক্যাচ ফেলে দিতে দিতেও ধরে নিলেন মণীশ পাণ্ডে। কিন্তু আউট হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতে দেখা গেল কোহালিকে। ডাগআউটের সামনে এসে রাগে হেলমেট, গ্লাভসও ছুড়ে ফেললেন মাটিতে। ফোর্থ আম্পায়ারকে ডেকে ক্লাব হাউজের দিকে দেখাতে থাকলেন তিনি। মনে হল, সাইটস্ক্রিনে নড়াচড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছিলেন।
কোহালি আউট হওয়ার পরের ওভারেই মণদীপ সিংহকে তুলে নিলেন উমেশ যাদব। এর পর এ বি ডিভিলিয়ার্সও ফিরে গেলেন মাত্র ৮ রান করে। তৃতীয় ওভারেই আরসিবি ১৩-৩। ইডেনে তখন থেকেই ফের আশার আলো! মাঝরাতে সূর্যোদয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy