ম্যাচের পর মাঠে দাঁড়িয়ে কেকেআরের এক প্রাক্তন কর্তার সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ ধরে কথা বলছিলেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মেন্টর রাহুল দ্রাবিড়। তাঁদের ড্রেসিংরুমে যে তখন দক্ষযজ্ঞ চলছে, তা কি তিনি কখন জানতেন? বোধহয় না।
টানা চার ম্যাচে হেরে আইপিএল লিগ টেবলের তলানিতে এসে ঠেকার পর দিল্লি ডেয়ারডেভিলস শিবিরে সুনামির মতো এক দুঃসংবাদ আছড়ে পড়ে, জাহির খান অন্তত দশ দিনের জন্য মাঠের বাইরে। এই খবর পাওয়ার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলের এক কর্তা। তাঁর অভিযোগের তির জাহিরের দিকে তো বটেই। এমনকী, মহম্মদ শামিকে দলে রাখা নিয়েও নাকি তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কি বেধে যায়। কর্তার বক্তব্য, আনফিট শামিকে দলে বয়ে বেড়ানোর কোনও মানে হয় না।
শুক্রবার প্রথম ওভারে ৭ রান দেওয়ার পর দ্বিতীয় ওভার করতে এসে প্রথম বলের পরেই জাহিরের ডান পায়ে হ্যামস্ট্রিং সমস্যা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। পরে মাঠে ফিরে এলেও আর বল করেননি। খেলা শেষে দিল্লির ক্যাপ্টেন বলেন, ‘‘পরে বোলিং করে আর ঝুঁকি নিতে চাইনি। হ্যামস্ট্রিংয়ের অবস্থা কী, কাল সকালে বুঝতে পারব।’’ এক প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকেই জানা গেল, টিভিতে এই কথা বলে তিনি ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে ফিজিও পল ক্লোজ ও বৈভব দাগা তাঁর চোট পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, অন্তত দিন দশেক মাঠে নামতে পারবেন না জাহির। আগের দিনই দিল্লির অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘‘আগামী ন’দিনে আমাদের পাঁচ-পাঁচটা ম্যাচ খেলতে হবে। এই কঠিন সময়টা পেরনোর পর হয়তো অনেক কিছু পাল্টে যাবে।’’ কিন্তু ইডেনে শুক্রবারের ম্যাচেও তাঁদের মন্দভাগ্য পাল্টাল না। জাহিরের ফিটনেস নিয়ে যেমন হতাশ ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তারা, তেমনই চোট পাওয়া মহম্মদ শামিকে দলে রাখা নিয়েও তাঁদের অভিযোগ রয়েছে বলে শোনা গেল। অভিযোগের তির সেই জাহিরের দিকেই। তাঁর কথাতেই নাকি শামিকে দলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু শামির হাঁটুর চোট এখনও ঠিক না হওয়ায় তাঁকে একটার বেশি ম্যাচে নামাতে পারেনি দিল্লি। এখন শামির চোটের যা অবস্থা, তাতে জাহিরের পরিবর্তেও তাঁকে নামানো যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
ইডেন ক্লাব হাউসের একতলায় বাঁ দিকের ড্রেসিংরুমে যখন এই অশান্তি চলছিল, তখন ডান দিকের ড্রেসিংরুমে পুরো উল্টো ছবি। দিল্লির সংসারে যখন আইপিএল থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা, কেকেআর শিবিরে তখন প্লে-অফের স্বপ্ন। ছেলেদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা দলনেতার মুখে। গৌতম গম্ভীর বললেন, ‘‘যাদের ওপরই ভরসা করছি, তারাই সেই ভরসার দাম দিচ্ছে। এর চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে?’’ তবে তিনি এখনই প্লে অফের স্বপ্ন দেখাতে চান না দলকে। বরং বলছেন, ‘‘আরও অনেকটা পথ পেরতে হবে আমাদের।’’ তবে ইডেন থেকে বেরনোর সময় সহকারী কোচ সাইমন ক্যাটিচকে একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী মনে হল। তিনি বললেন, ‘‘আমাদের মতো ধারাবাহিক সাফল্য এই টুর্নামেন্টে আর কাদের আছে বলুন? গোটা দলটা অসাধারণ ফর্মে রয়েছে। আমাদের প্লে-অফে না যাওয়ার কোনও কারণ দেখছি না।’’
আর জাহিরের মুখে শোনা গেল আক্ষেপ। বললেন, ‘‘আমার চোট, ক্যাচ পড়া, এগুলোই ফ্যাক্টর হয়ে গেল। সহজ ক্যাচও পড়ল। উথাপ্পার ক্যাচটা না ফেললে ছবিটা অন্যরকম হতে পারত। ১৬০ রান নিয়েও কিন্তু লড়াই করা যেত।’’ তখনও দিল্লি অধিনায়ক জানতেন না, অভিযোগের তিরে বিদ্ধ হবেন তিনি নিজেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy