মঙ্গলবার সকালে ধোঁয়াশার পুরু চাদরে ঢেকে গিয়েছে দিল্লি। ছবি: রয়টার্স
মঙ্গলবারও ‘অতি ভয়ানক’ দিল্লির বাতাস। বাতাসের গুণমান সূচক প্রায় ৫০০ ছুঁইছুঁই। সকাল থেকে ধোয়াঁশার চাদরে ঢেকে রয়েছে রাজধানী দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকা। কমেছে দৃশ্যমানতা। এ দিন সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণমান সূচক ৪৯৪ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে, যা এই মরসুমে সর্বোচ্চ। সাধারণত বাতাসের গুণমানের সূচক ৪৫০ অতিক্রম করলেই তা ‘অতি ভয়ানক’ বলে বিবেচিত হয়। দিল্লির দূষণ মোকাবিলায় একাধিক কড়াকড়ি জারি করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণের চতুর্থ স্তরের (সর্বোচ্চ) পদক্ষেপ (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৪ বা জিআরএপি ৪)। সুপ্রিম কোর্ট সোমবারই বলে দিয়েছে, আদালতকে না জানিয়ে চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করা যাবে না।
দূষণ মোকাবিলায় দিল্লির সরকার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণবিধি জারি করেছে সোমবার থেকে। তার পরেও উন্নত হয়নি বাতাসের গুণমান। বরং আরও ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ও সংলগ্ন আনন্দ বিহার, অশোক বিহার, ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়াম, জাহাঙ্গিরপুরী-সহ বেশির ভাগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বাতাসের গুণমানের সূচক ৫০০ অতিক্রম করে গিয়েছে। রাজধানী ও সংলগ্ন অঞ্চলে বাতাসের গুণমান পর্যবেক্ষণের জন্য মোট ৩৫টি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে বাতাসের গুণমান সূচক সবচেয়ে কম ছিল দ্বারকায় (৪৮০)। কিন্তু সেটিও ‘অতি ভয়ানক’ পর্যায়ের উপরেই রয়েছে।
বাতাসের গুণমান সূচক শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে হলে তা ‘ভাল’ বলে ধরে নেওয়া হয়। গুণমান সূচক ৫১ থেকে ১০০ হলে তা ‘সন্তোষজনক’ বলে ধরা হয়। বাতাসের গুণমান সূচক ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচিত হয়। গুণমান সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খারাপ’, ৩০১ থেকে ৪০০ হলে ‘খুব খারাপ’, ৪০১ থেকে ৪৫০ ‘ভয়ানক’ এবং ৪৫০-এর বেশি হলে ‘অতি ভয়ানক’ ধরা হয়।
দূষণ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দিল্লির সমস্ত স্কুলে অনলাইন মাধ্যমে পঠনপাঠনের শুরু হয়েছে। এমনকি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতেও অনলাইন পঠনপাঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনলাইন ক্লাস হবে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও। শুধু দিল্লিতেই নয়, গুরুগ্রাম এবং নয়ডার স্কুলগুলিতেও অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে।
দৃশ্যমানতা কম থাকায় দিল্লির ট্রেন পরিষেবাও কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। অনেক ট্রেনই দেরিতে চলছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, অন্তত ২২টি ট্রেন দেরিতে চলছে এবং ৯টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দৃশ্যমানতা কম থাকার জন্য আংশিক ব্যাহত হয়েছে বিমান পরিষেবাও। ইন্ডিগো উড়ান সংস্থা সমাজমাধ্যমে জানিয়েছে, দিল্লি, অমৃতসর এবং চণ্ডীগড়ে বিমান দেরিতে চলার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার শীর্ষ আদালতে দিল্লির দূষণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। দূষণ মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ (নিয়ন্ত্রণবিধি জারি) করতে সরকারের কেন এতটা দেরি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চতুর্থ পর্যায়ের ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (গ্র্যাপ-৪) বহাল রাখতে হবে। দিল্লিতে বাতাসের গুণমানের সূচক ৩০০-এর নীচে নেমে গেলেও আদালতের অনুমতি ছাড়া চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করা যাবে না।
দিল্লিতে দূষণ মোকাবিলায় নিয়ন্ত্রণবিধি অনুসারে, এই বিধি কার্যকর থাকাকালীন অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া অন্য কোনও ট্রাক রাজধানী ও সংলগ্ন অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারবে না। যদিও বৈদ্যুতিন গাড়ি, ডিজ়েল চালিত বিএস ৬, সিএনজি এবং এলএনজি চালিত ভারী গাড়িকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির বাইরের নম্বর প্লেটের কোনও ছোট পণ্যবাহী গাড়িও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া চলাচল করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে ডিজ়েল চালিত বিএস ৬ গাড়ি, সিএনজি এবং বৈদ্যুতিন গাড়ির জন্য। নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হচ্ছে দিল্লিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy