সফল: আইপিএল খেলে ফিরেই ৩ উইকেট প্রয়াসের। ছবি বিশ্বনাথ বণিক
ভোট দেওয়ার বয়স হয়নি। নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। অথচ ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালির সঙ্গে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফিরেছে প্রয়াস রায়বর্মণ। আরসিবি-র কোচ গ্যারি কার্স্টেন তাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, আগামী এক বছরে ঠিক কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে ১৬ বছর বয়সি লেগস্পিনারকে।
এ বারের আইপিএলে ১.৫ কোটি টাকা দিয়ে তাকে নিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিল প্রয়াস। ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টোদের বিরুদ্ধে চার ওভারে ৫৬ রান দেওয়ার পরে আর কোনও ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হয়নি।
প্রয়াস যদিও তা নিয়ে আফসোস করে না। আফসোস করতে বারণ করেছিলেন তার অধিনায়ক। প্রয়াস বলছিল, ‘‘ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে বিরাট ভাই বলেছিল, জানি তোর খারাপ লাগছে। কিন্তু এই খারাপ লাগাটা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্তই যেন থাকে। সকালে উঠে এটা নিয়ে ভাবলে চলবে না। নতুন দিন। নতুন ভাবে শুরু করতে হবে। তা ছাড়া এই ম্যাচে সবাই রান দিয়েছে। তুই একা নয়।’’
সত্যিই তাই। প্রয়াসের পাশাপাশি ওই ম্যাচে ৪৪ রান দিয়েছিলেন যুজবেন্দ্র চহাল। ৪৭ রান দিয়েছিলেন উমেশ যাদব। মহম্মদ সিরাজ দেন ৩৮ রান। অধিনায়কের কথা শুনে স্বস্তি পেয়েছিল প্রয়াস। পরের দিন নেটে নতুন ভাবে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিল। বাড়ি ফেরার আগের দিন কোচ গ্যারি কার্স্টেনের সঙ্গে একান্ত ক্লাস করতে হয়েছিল প্রয়াসকে। গ্যারি স্যর নিজেই তাঁর ক্লাসে ডেকেছিলেন তরুণ লেগস্পিনারকে। কী বললেন? তরুণ ক্রিকেটারের উত্তর, ‘‘বলছিলেন কী কী করলে আগামী এক বছরে আরও উন্নত ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পারব। গ্যারি স্যর বলেছেন, শুধু বোলিং নিয়ে ভাবলে চলবে না। পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও মনোনিবেশ করতে হবে। উনি চেয়েছেন আগামী মরসুমে যেন অলরাউন্ডার হয়ে ফিরতে পারি।’’
আইপিএল মরসুম শেষ হলেও ক্রিকেট মরসুম শেষ হয়নি প্রয়াসের। শনিবার সিএবি-র সিনিয়র ওয়ান ডে কোয়ার্টার ফাইনালে বড়িশা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ৫৮ রানে তিন উইকেট নেয় প্রয়াস। তবুও জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। দল হারলেও উপস্থিত গুটিকয়েক দর্শক যেন আইপিএল তারকার খেলা দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। ক্লাব কর্তারাও বলাবলি করছিলেন, আইপিএলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে বোলিংয়ে অনেকটাই উন্নতি করেছে প্রয়াস। যদিও সে কৃতিত্ব দিতে চায় বিরাট ও এবি ডিভিলিয়ার্সকে।
প্রয়াসের কথায়, ‘‘বিরাট ভাই, ডিভিলিয়ার্স, হেটমায়ারদের মতো ব্যাটসম্যানদের বল করার ফল পাচ্ছি। সাহস যেন আরও বেড়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে অনেক সাহায্য করবে।’’
ভারতীয় লেগস্পিনার যুজবেন্দ্র চহালেরও পরামর্শ দিয়েছে প্রয়াসকে। সাদা বল ও লাল বলের ক্রিকেট একেবারেই আলাদা। কী ভাবে তার সঙ্গে মানিয়ে ওঠা যায়, তা প্রয়াসকে জানিয়েছেন চহাল। প্রয়াস বলে, ‘‘চহাল ভাই খুবই সাহায্য করেছে। বুঝিয়ে দিত কোন বল টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ। কোন বল টেস্ট অথবা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে করা উচিত। বৈচিত্র আনার পরামর্শও পেয়েছি।’’
ভবিষ্যতে তরুণ লেগস্পিনারের লক্ষ্য রঞ্জি ট্রফি দলে নিয়মিত হয়ে ওঠা। ‘‘বড় ক্রিকেটার হতে গেলে লাল বলের ক্রিকেট খেলতেই হবে। সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে ফিটনেস। আমার মূল লক্ষ্য রঞ্জি ট্রফিতে দুরন্ত পারফর্ম করা। দেখা যাক, সেই সুযোগ পাই কি না,’’ বলেই ড্রেসিংরুমের দিকে চলে গেল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy