Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Harmilan Bains

মায়ের পথেই মেয়ে, এশিয়ান গেমসে একই বাড়িতে রুপো এল ২১ বছর পর

রবিবার হারমিলান বাইন্স এশিয়ান গেমসে রুপো জেতেন ১৫০০ মিটার দৌড়ে। তাঁর মা মাধুরী সাক্সেনা ২০০২ সালে এশিয়ান গেমসে রুপো জিতেছিলেন ৮০০ মিটারে।

harmilan

রুপো জয়ের পর হারমিলান বেইন্স। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১১:১০
Share: Save:

জন্মের আগেই অ্যাথলেটিক্সের ট্র্যাকে ছিলেন হারমিলান বেইন্স। তাঁর মা চাকরি বাঁচাতে ১৫০০ মিটারের যোগ্যতা অর্জন পর্বে দৌড়েছিলেন হারমিলানের জন্মের ছ’মাস আগে। রবিবার সেই হারমিলান এশিয়ান গেমসে রুপো জেতেন ১৫০০ মিটার দৌড়ে। মায়ের দোখানো পথেই। তাঁর মা মাধুরী সাক্সেনা ২০০২ সালে এশিয়ান গেমসে ৮০০ মিটারে রুপো জিতেছিলেন।

উত্তরপ্রদেশে জন্ম মাধুরীর। বিয়ের পর পঞ্জাবে চলে যান তিনি। এশিয়ান গেমসে পদকজয়ী চাকরি পেয়েছিলেন পঞ্জাবের পাওয়ার কর্পোরেশনে। কিন্তু মাধুরীর জন্ম পঞ্জাবে না হওয়ায় তাঁর এই চাকরি পাওয়া ভাল ভাবে নেননি অনেকে। সেই কারণে ১৫০০ মিটারের একটি দৌড় প্রতিযোগিতায় যোগ্যতা অর্জন করার জন্য ট্র্যাকে নামতে বাধ্য করানো হয় তাঁকে। সেই সময় মাধুরী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু লড়াই থেকে পিছিয়ে আসেননি তিনি। নেমে পড়েন ট্র্যাকে। যোগ্যতা অর্জনও করেছিলেন। হারমিলান জন্মের আগেই বুঝে গিয়েছিলেন ১৫০০ মিটারের দৌড় কী।

মহাভারতে অর্জুন-পুত্র অভিমন্যু জন্মের আগে শুনেছিলেন চক্রবুহ্যে ঢোকার উপায়। কিন্তু বার হওয়ার পথ জানতেন না। হারমিলান যদিও জন্মের আগের শিক্ষা ভোলেননি। এশিয়ান গেমসে পদক জিতেই শেষ করলেন তিনি।

হারমিলানের বাবা আমনদীপ বাইন্স ১৫০০ মিটার দৌড়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। সাউথ এশিয়ান গেমসে পদক জিতেছিলেন তিনি। মা-বাবার পথই অনুসরণ করেন হারমিলান। তিনিও অ্যাথলিট হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। মাধুরী বলেন, “আমি চাইতাম হারমিলান লন টেনিস খেলুক। কারণ অ্যাথলেটিক্স খুব কঠিন। ছোটবেলায় ও নিজেও অ্যাথলেটিক্সে খুব একটা আগ্রহ দেখাত না। আমার স্বামী একটি দৌড় প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। সেখানে খেলতে নেমে হেরে গিয়েছিল হারমিলান। খুব ভেঙে পড়েছিল। বলেছিল, আর কখনও দৌড়োবে না। আমিও বলেছিলাম যে, ইচ্ছা না হলে অ্যাথলেটিক্সে না নামতে। কিন্তু যে ওকে হারিয়েছে, তাকে এক বার হারানোর চেষ্টা করা উচিত। সেটা হারমিলান করেছিল। তার পরেই ওর অ্যাথলেটিক্সের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।”

Harmilan

মা মাধুরীর সঙ্গে মেয়ে হারমিলান। —ফাইল চিত্র।

এশিয়ান গেমসে একটি নয়, দু’টি পদক জিতেছেন হারমিলান। তবে দু’টিই রুপো। প্রথমটি ১৫০০ মিটারে, পরেরটি ৮০০ মিটারে। প্রথম পদক জয়ের পর হারমিলান বলেন, “আমি ১৫০০ মিটারে পদক জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। সোনা জয়ই লক্ষ্য ছিল আমার, কিন্তু রুপো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। মাকে বলেছি ৮০০ মিটারের দৌড় এখনও বাকি আছে। সেখানে নিজেকে উজাড় করে দেব।”

অ্যাথলেটিক্স যে কতটা কঠিন তা জানেন মাধুরী। তিনি বলেন, “উত্তরপ্রদেশের হারদৈয়ের মেয়ে আমি। ১৯৮৬ সালে কেডি সিংহ গার্লস স্পোর্টস হস্টেলে ভর্তি হই। আমার গ্রামে খেলাধুলার তেমন সুবিধা ছিল না। বাবার বন্ধু জগদীশ কাকু মনে করেছিলেন, আমার মধ্যে অ্যাথলিট হওয়ার ক্ষমতা আছে। সেই জন্য বাবাকে বলেন আমাকে ওই স্কুলে ভর্তি করতে। যোগ্যতা অর্জনের দৌড়ে আমি জিততে পারিনি। সেই কারণে আমাকে স্কুলে নেওয়া হবে কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। ছ’মাস পর ভর্তি হতে পেরেছিলাম। সে বার স্কুলের সব মেয়েকে হারিয়ে দিই।”

বুসান এশিয়ান গেমসে (২০০২) যোগ্যতা অর্জন করেন মাধুরী। হারমিলানের মা বলেন, “১৪তম এশিয়ান গেমসে যোগ্যতা অর্জন করি আমি। সে বার ৮০০ মিটার দৌড়ে রুপো জিতেছিলাম। ১৫০০ মিটারে চতুর্থ হয়েছিলাম। তবে চাকরির জন্য অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দৌড়টা এখনও ভুলতে পারিনি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Asian Games Indian Athletes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy