কীর্তিমান: রবিবার ফ্লরিডায় আগ্রাসী মেজাজে রোহিত শর্মা। এপি
পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এ বার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিনিই ছিলেন শীর্ষে। সেই ছন্দ ধরে রেখেই রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নতুন কীর্তি গড়ে ফেললেন রোহিত শর্মা। এই ম্যাচ ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে ২২ রানে জিতল ভারত। সিরিজও জিতল ২-০।
৫১ বলে ৬৭ রান করে রোহিত ফিরে যান। টি-টোয়েন্টিতে এখনও পর্যন্ত তিনি ছয় মেরেছেন ১০৭টি। পিছনে ফেলে দিলেন বিশ্বক্রিকেটের ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেলকে (১০৫)। যিনি আবার এই মুহূর্তে ব্যস্ত রয়েছেন কানাডা গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ভ্যাঙ্কুভার নাইটস দলের হয়ে গেল উপহার দিয়েছেন ৯৪ রান।
রোহিতের ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ছয়। স্ট্রাইক রেট ১৩১.৩৭। কিন্তু রোহিতকে বাদ দিলে এ দিনও ভারতীয় ইনিংসে আর কেউ সে ভাবে আক্রমণ করতে পারেননি ক্যারিবিয়ান বোলিংকে। অধিনায়ক বিরাট কোহালি ফেরেন ২৩ বলে ২৮ রান করে। তাঁর ইনিংসে ছিল একটি চার ও একটি ছয়।
ফ্লরিডায় রোহিত ছিলেন শুরু থেকে মারমুখী মেজাজেই। ওপেনিং জুটিতে ৬৭ রান ওঠার পরে ফিরে যান চোট সারিয়ে এই সফরে ফিরে আসা ওপেনার শিখর ধওয়ন। তিনি ১৬ বলে ২৩ রান করেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ভারতীয় ওপেনিং জুটি এই নিয়ে ১০ ম্যাচে ৫০য়ের অধিক রানের পার্টনারশিপ গড়েন। যদিও এই তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন নিউজ়িল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন এবং মার্টিন গাপ্টিল জুটি।
টসে জিতে এ দিন আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘উইকেটে কোনও স্যাঁতস্যাতে ভাব নেই। তা ছাড়া পরে ম্যাচ যত এগোবে, উইকেট তত মন্থর হতে শুরু করবে। আমরা তাই আগে ব্যাট করে বড় লক্ষ্য দিয়ে চাপে রাখতে চাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।’’ কিন্তু দেখা গেল, মাঝের সারি সে ভাবে পাল্টা আক্রমণেই যেতে পারল না কিমো পল, সুনীল নারাইন বা কার্লোস ব্রাথওয়েটের বিরুদ্ধে।
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় এক সময় মনে হয়েছিল হয়তো ১৫৫ রানের বেশি উঠবে না। কিন্তু শেষ ওভারে তিনটি ছয় হওয়ায় ১৬৭-৫ স্কোরে পৌঁছে যায় ভারত। ১৩ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন ক্রুণাল। রবীন্দ্র জাডেজা চার বলে অপরাজিত ৯ রান করে গেলেন। কিন্তু ঋষভ পন্থের ফর্ম নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেল। এ দিন থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে তার রানে ফিরে যান পন্থ। ছয় রানে ফিরে যান মণীশ পাণ্ডে। বিরাট যদি ২৮ রানের ইনিংস না খেলতেন তা হলে সমস্যা পড়তে হত দলকে।
জবাবে শুরু থেকেই নড়বড়ে দেখিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনারদের। এ দিন জোনাথান ক্যাম্পবেলের পরিবর্তে সুনীল নারাইন ওপেন করতে এসে ব্যর্থ। মাত্র চার রান করে ফিরে যান তিনি। এভিন লুইস (০) এ দিনও রান করতে পারলেন না। ভুবনেশ্বর কুমারের নাক্ল বল বুঝতে না পেরে কট ও বোল্ড হয়ে ফিরে যান। চতুর্থ উইকেটে ৭৬ রানের জুটি গড়ে বিপক্ষকে চাপে ফেলে দেন নিকোলাস পুরান ও রভম্যান পাওয়েল। কিন্তু ক্রুণাল পাণ্ড্যর তৃতীয় ওভারে দু’জনকেই ফিরে যেতে হয়। তখনই তাঁদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। ২৭ বলে ৭০ রান যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন। তখনই বৃষ্টি শুরু হয়। ক্রিজে ব্যাট করছিলেন কায়রন পোলার্ড ও শিমরন হেটমায়ার। কিন্তু নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগই পেল না এই জুটি।
ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ২৩ রানে দুই উইকেট নেওয়ায় ম্যাচের সেরা বেছে েনওয়া হয় ক্রুণালকে। ম্যাচ শেষে বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার বলেন, ‘‘ভারতের হয়ে এ রকম পারফর্ম করার জন্যই দলে নেওয়া হয়েছে। দেশকে সিরিজ জেতাতে পেরে আমি আপ্লুত।’’
অধিনায়ক বিরাট কোহালি যদিও প্রশংসা করে গেলেন ওয়াশিংটন সুন্দরের। তিন ওভারে ১২ রান দিয়ে এক উইকেট নেন ওয়াশিংটন। বিধ্বংসী ওপেনারদের বিরুদ্ধে একটি মেডেন ওভারও করেন তিনি। বিরাট বললেন, ‘‘সব চেয়ে কঠিন জায়গায় বল করতে হয়েছে ওয়াশিংটনকে। দু’জন পাওয়ার হিটারের বিরুদ্ধে ওকে বল করার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। নিজেকে অসাধারণ ভাবে তুলে ধরেছে ও। ভবিষ্যতে যে কোনও ম্যাচে ও বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।’’
স্কোরকার্ড
ভারত ১৬৭-৫ (২০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯৮-৪ (১৫.৩)
ভারত
রোহিত ক হেটমায়ার বো থমাস ৬৭•৫১
ধওয়ন বো পল ২৩•১৬
কোহালি বো কটরেল ২৮•২৩
ঋষভ ক পোলার্ড বো থমাস ৪•৫
মণীশ ক পুরান বো কটরেল ৬•৮
ক্রুণাল ন. আ. ২০•১৩
জাডেজা ন. আ. ৯•৪
অতিরিক্ত ১০
মোট ১৬৭-৫ (২০)
পতন: ১-৬৭ (ধওয়ন, ৭.৫), ২-১১৫ (রোহিত, ১৩.৫), ৩-১২৬ (ঋষভ, ১৫.১), ৪-১৩২ (বিরাট, ১৬.২) ৫-১৪৩ (মণীশ, ১৮.৩)।
বোলিং: ওশেন থমাস ৪-০-২৭-২, শেলডন কটরেল ৪-০-২৫-২, সুনীল নারাইন ৪-০-২৮-০, কিমো পল ৪-০-৪৬-১, কার্লোস ব্রাথওয়েট ২-০-২২-০, খ্যারি পিয়ের ২-০-১৬-০।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
নারাইন বো সুন্দর ৪•১২
লিউইস ক ও বো ভুবনেশ্বর ০•২
পুরান ক মণীশ বো ক্রুণাল ১৯•৩৪
পাওয়েল এলবিডব্লিউ বো ক্রুণাল ৫৪•৩৪
পোলার্ড ন.আ. ৮•৮
হেটমায়ার ন.আ. ৬•৪
অতিরিক্ত ৭
মোট ৯৮-৪ (১৫.৩)
পতন: ১-২ (লিউইস, ১.২), ২-৮ (নারাইন, ২.৬), ৩-৮৪ (পুরান, ১৩.২), ৪-৮৫ (পাওয়েল, ১৩.৫)।
বোলিং: ওয়াশিংৈটন সুন্দর ৩-১-১২-১, ভুবনেশ্বর কুমার ২-০-৭-১, খলিল আহমেদ ৩-০-২২-০, নবদীপ সাইনি ৩-০-২৭-০, ক্রুণাল পাণ্ড্য ৩.৩-০-২৩-২, রবীন্দ্র জাডেজা ১-০-৬-০।
(ডাকওয়ার্থ এবং লুইস নিয়মে জয়ী।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy