মহড়া: সিরিজ জেতা হয়ে গেলেও লক্ষ্যে অনড় ভারত। অনুশীলনে মগ্ন হার্দিক। বুধবার হ্যামিল্টনে। টুইটার
কখনও পর্দার আড়াল থেকে দেওয়া হচ্ছে ক্যাচ। কখনও বা শূন্যে ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ওজনের বল। কখনও বা আবার বিশেষ মেশিনের সাহায্যে করানো হচ্ছে স্লিপ ক্যাচিং প্র্যাক্টিস।
ভারতীয় ক্রিকেটারদের ফিল্ডিং বিপ্লবের পিছনে উঠে আসছে এ রকমই নানা অনুশীলনের কোলাজ। যে বিশেষ সব অনুশীলনের কথা বুধবার সাংবাদিকদের সামনে এসে বলে গেলেন ভারতের ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধর।
লাল বলের ক্রিকেটে ফিল্ডারদের ক্ষিপ্রতা বাড়াতে ‘ব্লাইন্ডফোল্ড টেকনিক’ কাজে লাগিয়েছেন শ্রীধর। সেটা ঠিক কী, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন ফিল্ডিং কোচ, ‘‘একটা পর্দার তলা দিয়ে বল ছুড়ে ছুড়ে ক্যাচ প্র্যাক্টিস দেওয়া হয়। পর্দার ও পাশে এক জন থাকে, যে ফিল্ডারদের উদ্দেশে বল ছুড়ে দেয়। যে ক্যাচ লুফছে, সে জানে না কোন দিক থেকে বলটা আসবে। এই ভাবে প্র্যাক্টিস করলে এক জন ফিল্ডারের ক্ষিপ্রতা অনেক বেড়ে যায়। অত্যন্ত দ্রুত বলের কাছে সে পৌঁছতে পারে। ইংল্যান্ডে আমরা এই ভাবে অনুশীলন করেছিলাম।’’ এর পরে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য একটি বিশেষ মেশিন নিয়ে আসা হয়। যে মেশিনের নাম ‘টিমমেট’। এই মেশিনের মাধ্যমে স্লিপ ক্যাচিংয়ের অনুশীলন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীধর।
নিউজ়িল্যান্ডে ভারতীয় ফিল্ডারদের সামনে বড় বাধা হতে পারত প্রচণ্ড হাওয়া। যে হাওয়ার কারণে উঁচুতে ওঠা বল অনেক সময়ই একেঁবেঁকে যায়। সেই সমস্যা দূর করতেও অভিনব এক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। শ্রীধরের মন্তব্য, ‘‘নিউজ়িল্যান্ডে ফিল্ডার এবং ব্যাটসম্যানদের সামনে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল হাওয়া। ব্যাটিং এবং ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের পরিকল্পনা এই হাওয়াকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছিল। হাওয়ার মোকাবিলায় ফিল্ডিং অনুশীলনের সময় আমরা বিভিন্ন ওজনের বল ব্যবহার করতাম।’’ সেই সব বল কী ভাবে ফিল্ডারদের তৈরি হতে সাহায্য করেছে, তাও বলেছেন শ্রীধর। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা যখন দেখতাম, বল আকাশে থাকা অবস্থায় এঁকেবেঁকে যাচ্ছে, তখন অনুশীলনেও ফিল্ডারদের সে রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি করে দিতাম। বিভিন্ন ওজনের বল দিয়ে উঁচু ক্যাচ নেওয়া প্র্যাক্টিস করানো হয়েছে। হাওয়ার মধ্যে হালকা বল একটু বেশি এ দিক-ও দিক সরে যায়।’’
এ তো গেল আন্তর্জাতিক সিরিজ চলার সময় ভারতীয় দলের অনুশীলন পদ্ধতি। শ্রীধর এও জানিয়েছেন, ক্রিকেটাররা যখন আইপিএল খেলতে ব্যস্ত থাকেন, তখনও তাঁদের বিশেষ ‘ফিল্ডিং প্রোগ্রাম’-এর মধ্যে থাকতে হয়। ফিল্ডিং কোচ বলছিলেন, ‘‘আমাদের ট্রেনার শঙ্কর ভাসু বা ফিজিয়ো প্যাট্রিক ফারহার্ট যে ভাবে ক্রিকেটারদের জন্য ট্রেনিং প্রোগ্রাম বা রিহ্যাব প্রোগ্রাম তৈরি করে দেয়, ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও আমরা সে রকম করি।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। চেষ্টা করি, সংশ্লিষ্ট আইপিএল দলগুলোর ফিল্ডিং কোচেদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখারও। যাতে ক্রিকেটারদের সম্পর্কে সব সময় যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়।’’
আগের ম্যাচেই মাঠে ফিরে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নিয়েছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। যা নিয়ে শ্রীধর বলছেন, ‘‘হার্দিক কতটা মরিয়া ছিল, সেটা ওর ক্যাচ ধরা থেকেই বোঝা গিয়েছে। ওর এই মরিয়া ভাবটা দারুণ লেগেছে। একটা খুব কঠিন ক্যাচকে হার্দিক সহজ করে ধরল। এই ধরনের ক্যাচ নেওয়ার জন্য অবশ্য ওর সুনাম আছে। হার্দিক আমাদের অন্যতম সেরা ফিল্ডার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy