দৃপ্ত: ৯০ রানেই সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিলেন যোদ্ধা রায়ডু। ছবি: এপি।
ভারতের বিশ্বকাপগামী দলে তাঁর জায়গা পাওয়া উচিত কি না, এই নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তখনই জবাবটা দিয়ে দিলেন অম্বাতি রায়ডু। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েলিংটনে সিরিজের শেষ ওয়ান ডে-তে ম্যাচ জেতানো ৯০ রানের ইনিংস খেলে।
হ্যামিল্টনের মতোই ভারতের খারাপ শুরু হয়েছিল ওয়েলিংটনেও। রবিবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৮ রানে চার উইকেট পড়ে যায় রোহিত শর্মার দলের। কিন্তু এ বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন রায়ডু। ছ’নম্বরে নামা বিজয় শঙ্করকে নিয়ে ৯৮ রান যোগ করেন তিনি। ম্যাচের সেরা রায়ডু পরে টিভি-তে বলেছেন, ‘‘নিউজিল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ যথেষ্ট ভাল। এই আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রথম দিকে ব্যাট করা কিন্তু সোজা ছিল না।’’
উইকেট স্যাঁতস্যাঁতে থাকলেও টস জিতে প্রথমে ব্যাট নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। উদ্দেশ ছিল, বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় ব্যাটিংকে পরীক্ষায় ফেলা। রায়ডু যখন নামেন, তখন দশম ওভার চলছে। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন ম্যাট হেনরি এবং ট্রেন্ট বোল্ট। কী মনে হচ্ছিল ওই সময়? রায়ডু বলেছেন, ‘‘আমি চেষ্টা করেছিলাম যাতে ৩০ ওভার পর্যন্ত কোনও উইকেট না পড়ে। সেই লক্ষ্য নিয়েই ব্যাট করে যাই।’’
রায়ডু ও বিজয়ের জুটি নিয়ে অধিনায়ক রোহিত বলেছেন, ‘‘শুরুতেই চার উইকেট হারানোর পরে প্রয়োজন ছিল কোনও এক জন ব্যাটসম্যানের নিজেকে ঠিকঠাক প্রয়োগ করা। যেটা করল রায়ডু এবং বিজয়। ওদের জুটিটাই আমাদের ম্যাচে ফিরিয়ে আনে।’’ রায়ডুর প্রশংসা শোনা গিয়েছে নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের গলাতেও। তিনি বলেছেন, ‘‘রায়ডু খুব ভাল খেলল। একটা সময় একদমই ঝুঁকি নেয়নি। শুধু উইকেটে পড়ে থাকার চেষ্টা করে গিয়েছিল। তার পরে আমাদের ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করে। আমাদের এর থেকে শেখা উচিত।’’
ভারতীয় ব্যাটিং নিয়ে ইদানীং বলা হচ্ছিল, প্রথম তিন জন কোনও দিন একসঙ্গে ব্যর্থ হলে পরের দিককার ব্যাটসম্যানের পক্ষে চাপ সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ দিন অবশ্য সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন রায়ডুরা। পরিসংখ্যান বলছে, প্রথমে ব্যাট করে ২০ রানের মধ্যে চার উইকেট হারানোর পরে দু’টো মাত্র ওয়ান ডে ম্যাচ জিতেছে ভারত। প্রথমটি, ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। যখন ন’রানের মধ্যে চার উইকেট পড়ে গিয়েছিল ভারতের। তার পরে কপিল দেব নিখাঞ্জের ব্যাট থেকে আসে সেই ঐতিহাসিক অপরাজিত ১৭৫ রান। দ্বিতীয়টি, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে রবিবারের এই ম্যাচ। রায়ডু জানাচ্ছেন, তিনি সব রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্যই এখন প্রস্তুত। বলছিলেন, ‘‘যারা চার, পাঁচ কী ছয় নম্বরে ব্যাট করে, তারা বড় ইনিংস খেলার সুযোগ পায় যখন পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। যে কারণে সব সময় প্রস্তুত থাকা দরকার।’’ আরও বলেন, ‘‘হ্যামিল্টনের ম্যাচটা একটা বিপর্যয় ছিল। যা খুব কমই ঘটে। ওয়েলিংটনে আমাদের বোলাররাও খুব ভাল বল করেছে।’’
রায়ডুর এই ইনিংসের পরে তাঁর বিশ্বকাপ দলে জায়গা যে মোটামুটি নিশ্চিত, তা অনেকেই মনে করেন। আকাশ চোপড়া যেমন টুইট করে বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে চার নম্বরে কে ব্যাট করবে, এ দিনের পরে এই তর্কের নিষ্পত্তি হয়ে গেল।’’ ভারতের চার নম্বর ব্যাটসম্যানের প্রশংসা শোনা গিয়েছে ভিভিএস লক্ষ্মণ, সঞ্জয় মঞ্জরেকরদের মুখেও। লক্ষ্মণ টুইট করেছেন, ‘‘দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াল ভারত। খুবই পরিণত ইনিংস খেলল রায়ডু।’’ অভিভূত সঞ্জয় মঞ্জরেকরও টুইট করেছেন, ‘‘রায়ডু যখন ব্যাট করতে নামল, ভারতের রান দু’উইকেটে ১২। যখন মাঠ ছাড়ল, স্কোর ছয় উইকেটে ১৯০। এই ধরনের ইনিংসই তো এক জন চার নম্বরের কাছ থেকে আশা করা যায়। দারুণ ইনিংস খেলেছ, রায়ডু।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy