বিরাটের পক্ষে চিন্তার কথা হল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হচ্ছে ইংল্যান্ডে, যেখানে ওর রেকর্ড মোটেই ভাল নয়। ছবি: সংগৃহীত
সোমবার দুপুরে ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলটা ঘোষণা হওয়ার পরে দু’টো ব্যাপার নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে।
এক, টিমের মানসিক প্রস্তুতির অভাব। দুই, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ফর্ম।
অদ্ভুত টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে ভারত এ বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাচ্ছে। টিম ঘোষণার এক দিন আগে পর্যন্ত ঠিক ছিল না, টিম যাবে কি না। এর ফলে ক্রিকেটারদের মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে সমস্যা হয়ে যায়।
আমার মনে আছে, সুনীল গাওস্কর একটা কথা বলত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো বড় সিরিজের আগে সানি বলত, ‘আমি ঠিক করে নিতাম, সিরিজে আমাকে এত রান করতে হবে।’ এটাকে বলে ভিজ্যুয়ালাইজেশন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে এই ফোকাসটা এখন ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে কি আছে?
এ বার আসি ফর্মের কথায়। ভারত তো সব সময়ই ব্যাটিং-নির্ভর টিম। আর আইপিএলে দেখছি, ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা কেউই সে রকম বিধ্বংসী ফর্মে নেই। সবচেয়ে চিন্তার কথা অবশ্যই ক্যাপ্টেন বিরাট কোহালিকে নিয়ে।
বিরাটকে এ রকম ম্রিয়মাণ অবস্থায় আমি কোনও দিন দেখিনি। কলকাতার সঙ্গেই ম্যাচটায় দেখছিলাম, ও একেবারেই চনমনে নয়। যেন অচেনা বিরাটকে দেখছি। ঘটনা হল, এ রকম ভাবে হারতে অভ্যস্ত নয় বিরাট। তার ওপর ওর নেতৃত্বে এ সব হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই চাপটা ওর ওপর অনেক বেশি। এই চাপ থেকেই ভুল শট খেলে উইকেট দিয়ে আসছে বিরাট।
বিরাটের পক্ষে আর একটা চিন্তার কথা হল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হচ্ছে ইংল্যান্ডে। যেখানে ওর রেকর্ড মোটেই ভাল নয়। ইংল্যান্ডে বার বার সমস্যায় পড়েছে। অফ স্টাম্পের বাইরে খোঁচা দিয়ে আউট হয়েছে। জুন মাসের শুরুতে টুর্নামেন্ট। বৃষ্টি থাকবে, ঠান্ডা থাকবে, বল সুইং করবে। সব মিলিয়ে বিরাটের পরীক্ষাটাও তাই কঠিন।
আরও পড়ুন: নতুন জুটির চাপে উঠছে গম্ভীর প্রশ্ন
ভারতের এই টিমের ব্যাটিং লাইন-আপে আমি একটা বদল করতাম। আমরা যখন ভারতীয় দল বাছতাম, ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাছতাম। এখানেও সেই কাজটা করলে পারত নির্বাচকেরা। ঋষভ পন্থ বা সঞ্জু স্যামসন-কে দলে রাখা যেত কেদার যাদবের জায়গায়। দু’জনেই ভাল ফর্মে। তা ছাড়া ধোনির বিকল্প হিসেবেও এদের বাজিয়ে নেওয়া যেত।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত যে গ্রুপে পড়েছে, সেটা কিন্তু বেশ কঠিন। দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা আছে। প্রথম দু’টো টিমের পেস শক্তি তো খুবই ভাল। ইংল্যান্ডের পরিবেশে এদের সামলানোটা কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে।
ভারতীয় টিমের বোলিং নিয়ে কিছু বলার নেই। উমেশ যাদব, ভুবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ শামি এবং যশপ্রীত বুমরা-র কোনও বিকল্প ভারতের হাতে নেই। অন্যতম সেরা পেস বোলিং আক্রমণ নিয়েই যাচ্ছে ভারত। যেখানে গতি আছে, সুইং আছে। ডেথ ওভারের বিশেষজ্ঞ বুমরা আছে। যার ইয়র্কার যে কোনও ব্যাটসম্যানকে সমস্যায় ফেলে দেবে। নতুন এবং পুরনো বল— দু’টোতেই ভয়ঙ্কর হতে পারে শামি। সঙ্গে অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য। এখন শুধু দেখতে হবে পেসাররা যেন আইপিএলের পরে ম্যাচ-ফিট অবস্থায় থাকে। না হলে অনিল কুম্বলের চিন্তা আরও বেড়ে যাবে।
দুই স্পিনার রাখা হয়েছে টিমে। কেউ কেউ বলছেন, এক জন রিস্ট স্পিনারকে রাখা যেতে পারত। যেমন অমিত মিশ্র বা কুলদীপ যাদব। আসলে ইংল্যান্ডের পরিবেশের কথা ভেবেই স্পিনার কমিয়ে বাড়তি পেসার নেওয়া হয়েছে। ঠিক সিদ্ধান্ত। অশ্বিনের দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন নেই। রবীন্দ্র জাজেডা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরীক্ষিত। সে জন্যই ওর ওপরে ভরসা রেখেছে নির্বাচকেরা।
সব শেষে বলব, বিরাট যেন একটা কথা মাথায় রাখে। আগামিকাল সব সময় সুন্দর। ৪ জুন, এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সে রকমই একটা সুন্দর দিন দেখতে চায় ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy