‘মাসল ম্যান’ আন্দ্রে রাসেলের জন্মদিনের সেলিব্রেশন। -টুইটার
কেকেআর ছাড়া যে টিমটার উপর আমার সব সময় নজর থাকে, যাদের সুখদুঃখ আমি অনুভব করি, সেই টিম হল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস।
কেন করি, বোঝা খুব সহজ। দিল্লি আমার শহর। এখান থেকেই আমার আইপিএল যাত্রা শুরু। দিল্লির জার্সির রং যখন লাল-কালো ছিল, তখন ওই টিমে ছিলাম। ডেয়ারডেভিলস ড্রেসিংরুমে যখন শোয়েব মালিক-গ্লেন ম্যাকগ্রা ছিল, তখনও ছিলাম। কোটলার গ্যালারি তাতাতে যখন ফিল্মস্টার অক্ষয়কুমার নানান স্টান্ট করেছিলেন, তখন ওই টিমে ছিলাম। কালো থেকে জার্সির রং যখন নীল হল, তখনও ওই টিমে ছিলাম।
সালগুলো ২০০৮ থেকে ২০১০। তখনও আমার বিয়ে হয়নি। ফুরফুরে, সাহসী ব্যাচেলারের জীবন কাটাচ্ছি। তখন আমার স্টান্স সাইড-অন। তবে কোনও চ্যালেঞ্জ এলে তার হেড-অন, মানে মুখোমুখি মোকাবিলা করতাম। এখন আমার জার্সির রং বেগুনি, কিন্তু এখনও এ ভাবেই চ্যালেঞ্জ সামলাই।
কলকাতা যে সাফল্য আর উষ্ণতা দিয়েছে, তার পর আপনাদের শহর আমার দ্বিতীয় ঘর হয়ে গিয়েছে। একে তো আমি দিল্লির ছেলে। তার উপর কার বদলি হয়ে এসেছি? না, বাংলার সবচেয়ে প্রিয় সন্তান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের! এর পরেও কিন্তু কেকেআর ক্যাপ্টেন হিসেবে সবাই স্বাগত জানিয়েছেন। তাই ২০১১ সালে কেকেআরে চলে আসার পর আমার প্রথম প্রেমের অবস্থান বেগুনি।
দিল্লির লাল-নীল দ্বিতীয় প্রেম, কিন্তু দুটোর মধ্যে ব্যবধান প্রচুর। কোটলা আমার বাড়ির বাগানের মতো। কিন্তু আমি সব সময় নিজেকে বলি, এই মাঠে আমি অতিথি। আজ যে দিল্লির বিরুদ্ধে নামব, তখনও সেটাই করব। দিল্লির কাছে আমি এখন প্রতিপক্ষ, আর নিজের সব কিছু দিয়ে ওদের হারাতে ঝাঁপাব।
জাহির খান কিন্তু দলটাকে দারুণ নেতৃত্ব দিচ্ছে। ও বেশ চালাক পেসার। খুব বুদ্ধির সঙ্গে ফিল্ড সাজাচ্ছে। দলের উপর জ্যাক আর রাহুল ভাইয়ের প্রভাবটা খুব স্পষ্ট। ওদের পরিকল্পনা যেমন নির্ভুল, মাঠে সেগুলো কাজে লাগানোটাও তেমনই নিখুঁত। পয়েন্ট টেবলের প্রথম চারে ওদের থাকাটা তাই আশ্চর্যের নয়। কেকেআরে এটা নিয়ে আমরা খুব সতর্ক। তাই প্রত্যেক প্লেয়ারের জন্য আলাদা ছক কষা হয়েছে। দিল্লির বিরুদ্ধে খেলার এ বার একটা বড় পজিটিভ দিক হচ্ছে কোটলার উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে আঠা-আঠা, নিচু বাউন্সের পিচ এখন অতীত। যে পিচে ১৫০-১৬০ রানের বেশি উঠত না। গুজরাত লায়ন্সের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটা যদি নির্ণায়ক হয়, তা হলে কিউরেটরের পিঠ চাপড়ে দিতেই হবে।
যুদ্ধ হারা কখনও সুখের অভিজ্ঞতা নয়। বিশেষ করে যদি একই দলের কাছে দু’বার হারতে হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হারের এই ব্যাপারটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি দুঃখ দিচ্ছে। তা ছাড়়া এই ম্যাচের নকশাটা হুবহু ইডেনে মুম্বই ম্যাচের মতোই। দেখে মনে হল, আমরা বোধহয় নিজেদের ভুল থেকে শিখিনি। মনে হয় শেষ পাঁচ ওভারে আমাদের আরও বেশি রান দরকার ছিল। ব্যাটসম্যানরা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দিনটাই ছিল বিপক্ষের। মুম্বই যে ভাবে খেলল, তার পুরো কৃতিত্বটাই ওদের প্রাপ্য। ওই হারটা আমাদের নড়েচড়ে বসিয়েছে।
তবে একটা ভাল ব্যাপার হল, ওই হারটা নিয়ে ভাবার সময়ই আমাদের নেই। আমার শুক্রবারের বেশির ভাগ সময়টাই কেটে গেল ট্র্যাভেল করে, তার পর পুল সেশনে, টিম মিটিংয়ে। আর প্রায় অর্ধেক দিল্লির জন্য ম্যাচ টিকিটের ব্যবস্থা করে করে। আমার লোকজন গোটা দিন দৌড়োদৌড়ি করেও টিকিটের দাবি মেটাতে পারছে না। ঠিক করেছি, শনিবার সকালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস অফিস থেকে কয়েকটা টিকিট কিনব। আমি নিশ্চিত, পুরনো প্লেয়ারকে ওরা সাহায্য করবে। আশা তো করাই যায়!
(দীনেশ চোপড়া মিডিয়া)
আজ আইপিএলে
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স, দিল্লি, বিকেল ৪-০০
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, রাত ৮-০০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy