আরও একটা ডার্বি দেখা হল না কলকাতার। আই লিগের প্রথম ডার্বির পর দ্বিতীয় ডার্বিও চলে গিয়েছে শিলিগুড়িতে। প্রথম ডার্বির ড্রয়ের প্রভাব আই লিগের উপর তেমনভাবে না পড়লেও ফিরতি লেগের উপর নির্ভর করবে অনেকটা। এই ম্যাচের জয় হার ঠিক করে দেবে আই লিগের এই ডার্বি। যার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে দু’পক্ষ। মোহনবাগান শিবিরে সব সময়ই যেমন যুদ্ধের আগের শান্তি থাকে তেমনই রয়েছে। বেশ থমথমে পরিবেশ। ইস্টবেঙ্গল শিবির চনমনে। যদিও অর্ণব মণ্ডল দল থেকে বাদ যাওয়ায় একটা চাপা উত্তেজনা থাকলেও তা বাইরে দেখা যাচ্ছে না। গত ফেব্রুয়ারির ডার্বি শেষ হয়েছিল গোলশূন্য ভাবে। টানা ভাল পারফরমেন্সের পর বেশ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। লিগ তালিকায় দীর্ঘ সময় শীর্ষে থাকার পর আইজলকে ছেড়ে দিতে হয়েছে সেই জায়গা। দ্বিতীয় স্থানে নেমে যেতে হয়েছে। অন্যদিকে তিন নম্বরে ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে মোহনবাগান ফর্ম ধরে রেখেই। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই ডার্বির আগে এগিয়ে মোহনবাগানই। যদিও ডার্বি নিয়ে কখনও আগে থেকে কিছু বলা যায়নি এখনও। যে কোনও সময় বদলে যেতে পারে সব হিসেব।
আরও খবর: হুল্লোড় থাকলেও টিকিট বিক্রি কম
ইস্টবেঙ্গলে এই মুহূর্তে বড় সমস্যা চোট-আঘাত। সঙ্গে অফ-ফর্মও। কিন্তু এটাই ইস্টবেঙ্গলের সামনে সব থেকে বড় সুযোগ আই লিগ জয়ের। অতীতেও এরকম অবস্থা থেকে আই লিগ জেতা হয়নি। এটাকেই শেষ সুযোগ বলে মনে করছেন মেহতাব হোসেনের মতো অভিজ্ঞ প্লেয়াররা। তিনি তো বলেই দিয়েছেন, এ বার আই লিগ জিততে না পারলে আর আই লিগই খেলবেন না তিনি। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাই জয়ের ছকই তৈরি করছেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। ফর্মেশনে ডায়মন্ডের ছোঁয়া থাকতে পারে আনসেলেমের প্রত্যাবর্তনে। তাঁর অবর্তমানে ৪-১-৩-২এ খেলিয়েছেন মর্গ্যান। দুই স্টপারের সামনে একজন ব্লকারকে রেখে মোহনবাগানের আক্রমণ আগেই ভেঙে দিতে চাইবেন তিনি। গোলে কোনও নেই। দুই সাইডব্যাক রাহুল ভেকে ও নারায়ন দাস। মাঝে বুকানেয়ার সঙ্গে হয়তো গুরবিন্দর সিংহ। মাঝ মাঠের দায়িত্ব অবশ্যই থাকবে মেহতাব হোসেনের উপর। প্রয়োজনে নেমে রক্ষণও সামলাবেন তিনি। সঙ্গে আনসেলেমের দায়িত্ব গোলের বল তৈরি করা। এছাড়া থাকার সম্ভাবনা অবিনাশ রুইদাস ও লালরিনডিকা রালতের। সামনে থেকে ইস্টবেঙ্গলকে নেতৃত্ব দেবেন উইলিস প্লাজা ও রবিন সিংহ।
এই ডার্বি মোহনবাগানের। যতই শিলিগুড়ি এ বার মোহনবাগানের হোম গ্রাউন্ড হোকনা কেন শিলিগুড়ি সব সংয়ই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকে সমৃদ্ধ। যদিও এ বার ডার্বি ঘিরে নেই আগের উচ্ছ্বাস। কলকাতা থেকে দলে দলে সমর্থক গেলেও স্থানীয় সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে কিছুটা ঘাটতি পড়েছে। হয়তো আইপিএল-এর প্রভাব। এর মধ্যেই নতুন হোম গ্রাউন্ডে ডার্বি জিততে চাইবেন কোচ সঞ্জয় সেন। চোট-আঙাতে জর্জরিত সবুজ-মেরুণ ব্রিগেডও। সেই তালিকায় প্রণয় হালদার, শুভাশিস বোস, শিলটন পল, রেনিয়ের ফার্নান্ডেজরা রয়েছেন। যদিও জয়ের মধ্যে রয়েছে মোহনবাগান। ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরু এফসিকে ০-৩ গোলে হারানোর পর এএফসি কাপে আবাহনীকে ১-৪ গোলে হারিয়ে দিয়েছেন সঞ্জয় সেনের ছেলেরা। সঞ্জয় সেন অবশ্য চেনা ৪-৪-২ ছকেই দল সাজাবেন। গোলে দেবজিৎ মজুমদার তো আছেনই। রক্ষণে আনার, এডুয়ার্দো ও প্রীতম কোটালের সঙ্গে অনূর্ধ্ব-২২ হিসেবে যোগ হতে পারেন সার্থখ গোলুই। প্রণয় না থাকায় মাঝমাঠে শেহনাজ সিংহর সঙ্গে দেখা যেতে পারে সৌরভিক চক্রবর্তী অথবা বিক্রমজিৎ সিংহকে। সঙ্গো সনি নর্ডি ও কাটসুমি ইউসা। সামনে ড্যারেল ডাফির সঙ্গে গোলের জন্য ঝাঁপাবেন বলবন্ত সিংহ। বন্ধ ঘরে যতই ছক তৈরি হোক না কেন দুই শিবিরে ডার্বির ময়দান কী কাহিনী লিখবে সেটা বোঝা যাবে ৯০ মিনিট শেষেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy