Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

সাফল্য না পেলে সরতে হবে: বলছেন সঞ্জয়

মোহনবাগানে কি এটাই শেষ মরসুম হতে চলেছে সঞ্জয় সেনের? আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে হারের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে স্বয়ং সবুজ-মেরুন কোচই সেই জল্পনা উস্কে দিলেন।

সোজাসাপ্টা: আইজলে হারের পর সঞ্জয় বাস্তববাদী। নিজস্ব চিত্র

সোজাসাপ্টা: আইজলে হারের পর সঞ্জয় বাস্তববাদী। নিজস্ব চিত্র

শুভজিৎ মজুমদার
আইজল শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

মোহনবাগানে কি এটাই শেষ মরসুম হতে চলেছে সঞ্জয় সেনের? আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে হারের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে স্বয়ং সবুজ-মেরুন কোচই সেই জল্পনা উস্কে দিলেন।

রবিবার সকালে কলকাতা ফেরার আগে আইজলে দাঁড়িয়ে সঞ্জয় বলে দিলেন, ‘‘কোচ হিসেবে দলকে সাফল্য এনে দিতে না পারলে সরে যেতেই হবে। আমি যখনই যে ক্লাবের দায়িত্ব নিয়েছি, কর্তাদের স্পষ্ট ভাবে তা জানিয়ে দিয়েছি। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’

মোহনবাগানের দায়িত্ব ছাড়ার ভাবনা শুরু করে দিলেও খেতাবের আশা এখনও পুরোপুরি ত্যাগ করেননি সঞ্জয়। তিনি বললেন, ‘‘শেষ ম্যাচে লাজংয়ের বিরুদ্ধে আইজল যদি হারে, তা হলে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জিতলে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।’’

কিন্তু লাজং কি পারবে দুরন্ত ফর্মে থাকা খালিদ জামিলের দলকে হারাতে? ‘‘লাজং যদি আইজলকে ম্যাচ ছেড়ে দেয় তা হলে আলাদা ব্যাপার। না হলে ফুটবলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়,’’ ব্যাখ্যা সঞ্জয়ের। রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে যোগ করলেন, ‘‘আইজল এখনও পর্যন্ত তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচ হেরেছে। আমরা হেরেছি দু’টো। মনে রাখতে হবে লাজংয়ের বিরুদ্ধেও ওরা অ্যাওয়ে ম্যাচই খেলবে।’’

তবে মোহনবাগান কোচ হতাশ ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে। বলে দিলেন, ‘‘যে সব ফুটবলারের ওপর ক্লাব অনেক আশা করেছিল, তারা অনেকেই প্রত্যাশাপূরণ করতে পারেনি।’’ ইঙ্গিতটা কি জেজে লালপেখলুয়া ও আজহারউদ্দিন মল্লিকের দিকে? সঞ্জয় বললেন, ‘‘লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে জেজে-কে যখন পরিবর্ত হিসেবে খেলিয়েছিলাম, অনেকেই বলতে শুরু করেছিল আগে কেন ওকে নামাইনি। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আজহারকে ৭০ মিনিট পর্যন্ত মাঠে রেখেছিলাম। আইজল ম্যাচে পরিস্থিতিটা একেবারেই অন্য রকম ছিল।’’ কী রকম? সবুজ-মেরুন কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘৮০ মিনিট হয়ে যাওয়ার পরে আমার মনে হচ্ছিল, ড্র হবে। তাই দু’জন মিডফিল্ডার নামাব বলে সৌভিক চক্রবর্তী, বিক্রমজিৎ সিংহ ও বলবন্ত সিংহ-কে ওয়ার্ম আপ করতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ৮৩ মিনিটে ওরা গোলটা করার পরেই সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।’’

আরও পড়ুন...
আইজলের কোচ হতে চেয়েছিলেন খালিদ জামিলই

সঞ্জয় কার্যত মেনে নিলেন বলবন্ত-কে আরও আগে নামানো উচিত ছিল। বললেন, ‘‘আমার সব স্ট্র্যাটেজি-ই যে ঠিক তা কখনও দাবি করব না।’’

অঙ্কের বিচারে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা একেবারে শেষ না হয়ে গেলেও মোহনবাগান অন্দরমহলের ছবিটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। আইজল ম্যাচ হারের ধাক্কায় সনি নর্দে থেকে ড্যারেল ডাফি— সকলেই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। রবিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ থমথমে মুখে প্রাতঃরাশ করে টিম বাসে উঠলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, হাইতি তারকা বলেছেন, ‘‘আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা আর করছি না।’’


হতাশ: অভিশপ্ত আইজল ছেড়ে কলকাতার পথে সনি। নিজস্ব চিত্র

এই পরিস্থিতিতে সচিব অঞ্জন মিত্রের বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘‘আইজলের বিদেশি ফুটবলার নির্বাচন অনেক ভাল হয়েছে। আর আমাদের ফুটবলারদের খেলা দেখে মনে হয়েছে, ফিটনেস সমস্যা ভুগছে।’’ এখানেই শেষ নয়। তিনি হতাশ আইজলে খেলতে আসার আগে মোহনবাগান কৃত্রিম ঘাসের মাঠে প্রস্তুতি না নেওয়ায়।

এ দিকে, ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা পরেও সবুজ-মেরুন শিবিরে আইজল আতঙ্ক হয়েই থেকে গিয়েছে! রবিবার দুপুর সোয়া বারোটার উড়ানে শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে সনি, কাতসুমি-রা ফিরে এলেও আইজলে আটকে পড়ছেন ছয় ফুটবলার। এঁরা হলেন, সৌভিক চক্রবর্তী, আনাস এডাথোডিকা, প্রবীর দাস, শিবিনরাজ, পিন্টু মাহাত ও রাজু গায়কোয়াড়। এক উড়ানে সকলের টিকিট পাওয়া যায়নি। তাই দুপুর সোয়া দু’টোর উড়ানে গুয়াহাটি হয়ে কলকাতায় নামার কথা ছিল আনাস-দের। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য বাতিল হয়ে যায় উড়ান। আজ, সোমবার তাঁদের ফেরার কথা। মোহনবাগান ফুটবলারদের সঙ্গেই আইজলে আটকে পড়েছেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সচিব কুশল দাস ও আই লিগের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুনন্দ ধর-ও।

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan Sanjoy Sen I league Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE