Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

গোপাল বসু প্রয়াত, শোকস্তব্ধ বাংলার ক্রিকেট

লেক রোডে গোপাল বসুর বাড়ির উল্টো দিকেই থাকেন রাজু মুখোপাধ্যায়। ছোটবেলা থেকে নিজেদের বাড়ির গ্যারাজে একসঙ্গে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছেন। রবিবার এক বন্ধু ফোন করে গোপাল বাবুর মৃত্যুসংবাদ দেন তাঁকে।

স্মৃতি: গোপাল বসু, যখন মাঠ দাপিয়ে বেড়াতেন। ফাইল চিত্র

স্মৃতি: গোপাল বসু, যখন মাঠ দাপিয়ে বেড়াতেন। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৫:১১
Share: Save:

কেউ বলছেন, অপূরণীয় ক্ষতি। কারও বক্তব্য, ‘‘বাংলা ক্রিকেটের এক অধ্যায় শেষ হয়ে গেল।’’ গোপাল বসুর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে শোকস্তব্ধ বাংলার ক্রিকেটমহল। রাজু মুখোপাধ্যায় থেকে প্রণব রায়, অরুণ লাল থেকে রণদেব বসু— প্রত্যেকেই ভেঙে পড়েছেন তাঁর মৃত্যুসংবাদে।

কিছু দিন আগে ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতনির সঙ্গে দেখা করতে ইংল্যান্ড উড়ে গিয়েছিলেন গোপাল বসু। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে দ্রুত বার্মিংহামের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জানা গিয়েছে, কিডনির সমস্যা থেকেই তাঁর অসুস্থতার সুত্রপাত। অবস্থার ক্রমে অবনতি ঘটে। শরীরের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে গিয়েছিল। শনিবার তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। রবিবার ইংল্যান্ডের সময় ভোর পাঁচটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বাংলার প্রাক্তন অধিনায়কের। পরিবারের সদস্যেরা ইংল্যান্ডেই থাকার কারণে তাঁর মরদেহ কলকাতায় আর নিয়ে আসা হচ্ছে না। বার্মিংহামেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে গোপাল বসুর।

লেক রোডে গোপাল বসুর বাড়ির উল্টো দিকেই থাকেন রাজু মুখোপাধ্যায়। ছোটবেলা থেকে নিজেদের বাড়ির গ্যারাজে একসঙ্গে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছেন। রবিবার এক বন্ধু ফোন করে গোপাল বাবুর মৃত্যুসংবাদ দেন তাঁকে। বাড়ি ফিরে স্ত্রী সীমা দেবীকে পুরো ঘটনা বলার সময়েই ভেঙে পড়েন। তার পর থেকেই সামান্য অসুস্থ হয়ে
পড়েন তিনিও। শোকাহত বাংলার প্রাক্তন ওপেনার অরুণ লালও। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎ করে এ রকম একটা খবর পাব, ভাবতেই পারিনি। আমি স্তম্ভিত। বাংলা ক্রিকেটের একটি অধ্যায় শেষ হয়ে গেল এই ২৬ অগস্ট।’’

রঞ্জি ট্রফি জীবনের প্রথম অধিনায়কের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে গলা বুজে আসে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার প্রণব রায়ের। তাঁকে একেবারে ভাইয়ের মতো ভালবাসতেন গোপালবাবু। প্রাক্তন অধিনায়কের মৃত্যুর খবর পেয়ে স্মৃতিচারণ করতে থাকেন পঙ্কজ রায়ের ছেলে। প্রণব বলেন, ‘‘যে যা চাইত, এক কথায় দিয়ে দিতেন। নিতে না চাইলে রেগে যেতেন। ক্লাব ক্রিকেট খেলার সময় আমাকে প্রত্যেক দিন একটা করে ফাইভ স্টার খাওয়াতেন। ভাল খেললে সংখ্যাটাও বেড়ে যেত। গোপালদার একটা জুতো আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। স্পোর্টিং ইউনিয়ন টেন্টে বসে সেটা তাঁকে জানাতেই জুতোটা খুলে আমার হাতে তুলে দিলেন। বললেন, ‘কাল থেকে তুই এই জুতোটা পরেই খেলবি’। এমনই ছিলেন গোপালদা।’’

প্রাক্তন পেসার রণদেব বসুর কাছে এই ক্ষতি অপূরণীয়। বলেন, ‘‘ক্রিকেট জীবনে গোপাল স্যরই ছিলেন আমার বাবা। ১১ বছর বয়সে ওঁর কাছেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি। একটাই আফসোস যে, শেষ বার তাঁকে দেখার সুযোগ পেলাম না।’’ টুইটারে প্রতিক্রিয়া জানান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তিনি লেখেন, ‘‘খুব কাছের একজন মানুষকে হারালাম আজ। শেষ দিনে বার্মিংহামে নিজের পরিবারকে পাশে পেয়েছিলেন। আপনার অভাব প্রচণ্ড অনুভব করব। আপনার আত্মার শান্তি কামনা করি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Cricketer Gopal Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE