Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

‘চালাক’ কাপদেভিয়াকে টপকাতে নতুন অঙ্ক গার্সিয়ার

স্প্যানিশে দোস্তি আর ভারতে কুস্তি! নর্থইস্টের স্প্যানিশ বিশ্বকাপার ডিফেন্ডার কাপদেভিয়ার বিরুদ্ধে ডুয়েল প্রসঙ্গ উঠতেই হাসি খেলে গেল কলকাতার আটলেটিকোর স্প্যানিশ বিশ্বকাপার ফরোয়ার্ড লুই গার্সিয়ার মুখে। স্পেনের জাতীয় দলে খেলার সময় গার্সিয়া-কাপদেভিয়া সমীকরণটা ছিল ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ মার্কা।

আটলেটিকো প্র্যাক্টিসে গোলপোস্ট কাঁধে গার্সিয়ারা। —নিজস্ব চিত্র

আটলেটিকো প্র্যাক্টিসে গোলপোস্ট কাঁধে গার্সিয়ারা। —নিজস্ব চিত্র

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১২
Share: Save:

স্প্যানিশে দোস্তি আর ভারতে কুস্তি!

নর্থইস্টের স্প্যানিশ বিশ্বকাপার ডিফেন্ডার কাপদেভিয়ার বিরুদ্ধে ডুয়েল প্রসঙ্গ উঠতেই হাসি খেলে গেল কলকাতার আটলেটিকোর স্প্যানিশ বিশ্বকাপার ফরোয়ার্ড লুই গার্সিয়ার মুখে।

স্পেনের জাতীয় দলে খেলার সময় গার্সিয়া-কাপদেভিয়া সমীকরণটা ছিল ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ মার্কা। তার পর কাপদেভিয়া যখন ভিয়ারিয়ালে আর গার্সিয়া আটলেটিকো মাদ্রিদে, তখনও মুখোমুখি লড়াইয়েও তা টোল খায়নি। গুয়াহাটিতে আইএসএলের প্রথম পর্বের ম্যাচেও দু’জনের ‘বেরাদরি’ ছিল দেখার মতো।

এ বার কি দোস্তির জ্যাকেট খুলে কুস্তির আবহ!

গার্সিয়া এ বার বললেন, “কাপদেভিয়া খুব চালাক। পজিশনজ্ঞানও দারুণ। ঠিক সময় সামনে চলে আসে। কাল একটু নীচের থেকে আমাকে খেলতে হবে।”

কথা শুনে মনে হতেই পারে যুবভারতীতে কাপদেভিয়াকে টপকানোর অঙ্ক কষে ফেলেছেন।

তার পরেও কুস্তি, বদলা জাতীয় শব্দের আমদানি কেন?

প্রথম পর্বের ম্যাচের আগেই গুয়াহাটিতে উড়ে গিয়ে সহকারী কোচ ব্যারেটোর গুপ্তচরগিরি। যে তথ্য কাজে লাগিয়ে ফিকরু, পদানিদের গোলে ২-০ জিতে কলকাতার টিমের ঘরে ফেরা। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের প্রথম মার্চিং অর্ডার বোরহার। ম্যাচ শেষে হাবাসের উল্লাসের জেরে কলকাতার কোচের সঙ্গে জন আব্রাহামের দলের কোচিং স্টাফের তর্কাতর্কি।

সে বার নর্থইস্টের পর্তুগিজ ডিফেন্ডার মিগুয়েল গার্সিয়া খেলতে পারেননি শেষ মুহূর্তে কাফ মাসল শক্ত হয়ে যাওয়ায়। মঙ্গলবার খেলবেন। উল্টে এ দিন, প্র্যাক্টিসে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে বেরিয়ে গেলেন কলকাতার লেফট ব্যাক বিশ্বজিত্‌ সাহা। ডেঞ্জিল, লোবোর পর এ বার বিশ্বজিত্‌। ফিজিও পুষ্পকেতু কোনারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করতে দেখা গেল কোচ হাবাসকে। মাঝ-নভেম্বরের সন্ধেতেও কপাল মুছতে মুছতে ম্যানেজার রজত ঘোষদস্তিদার বলে গেলেন, “এর পর হয়তো মোহনরাজকে তৈরি রাখতে হবে।”

এই পরিস্থিতিতে কি সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহ-বধ? মানে বদলা? উত্তরের জন্য যেন মুখিয়েই ছিলেন রিকি হার্বার্টের দলের জাম্বিয়ান মিডিও আইজ্যাক চানসা। “বদলা তো হতেই পারে। কিন্তু ভয় তো ওই গার্সিয়াকেই।” চানসার থেকেও সুর চড়িয়ে নর্থইস্টের ব্রিটিশ স্ট্রাইকার জেমস কিন বলে গেলেন, “গার্সিয়াই কলকাতার আসল লোক। সঙ্গে আবার হোম ক্রাউড আর ওদের চেনা কৃত্রিম মাঠ।”

তা হলে কি মাঠে নামার আগেই অ্যাডভান্টেজ কলকাতা? ফের হাসছেন গার্সিয়া। “চাপ তো সকলেরই আছে। কারও একার নয়।” কিন্তু শেষ চার ম্যাচে তো জয় নেই আপনাদের! তিনটে ড্র। একটা হার। একটু থেমে গার্সিয়া বললেন “তবু তো লিগ টেবলের শীর্ষেই রয়েছি। তবে জিতলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। মঙ্গলবার তার জন্যই নামব।” আর আগের ম্যাচের মতোই বক্সের সামনে গাদাগুচ্ছের চেয়ার সাজিয়ে সেট পিস প্র্যাক্টিস থেকে ফেরা আর্নাল লিবার্ট বলে গেলেন, “সেট পিসে অনেক টিমই ম্যাচ বার করেছে। আমরা সে জায়গায় একটু পিছিয়ে। তারই অনুশীলন হচ্ছে। কাল মাঠে তার ফায়দা তুলতে।”

গার্সিয়া ফ্যাক্টর যেমন কলকাতার প্লাস পয়েন্ট। তেমন ‘ফিয়ার ফ্যাক্টর’ও রয়েছে প্রতিপক্ষের আট্যাকিং থার্ডে কোকে-কিন যুগলবন্দি। কাউন্টার অ্যাটাকে গোলের মুখ এই দু’জন খুলে ফেলেন যখন তখন। লা লিগায় একদা মালাগায় খেলা কোকের বল হোল্ডিং, ডিস্ট্রিবিউশন যেন রিমোটে চালনা করে গোটা দলকে। সেই কোকেকে আলাদিনের দৈত্যের মতো বোতলে পোরার দায়িত্ব যাঁর ওপর সেই অর্ণব মাঠ ছাড়ার সময় বলে গেলেন, “কোকেকে ফাঁকা জায়গা দেওয়াই চলবে না। তবে ওদের পাহাড়ের ছেলেরা বেশ ভাল দৌড়য়।”

পাহাড়ের টিমকে সমতলে ভূপতিত করতে আটলেটিকো ড্রেসিংরুমে সোমবার রাত পর্যন্ত অঙ্ক, ডাবল স্ট্রাইকারে যাও। ফিকরুর সঙ্গে আর্নাল। তাতেই দ্রুত গোল তুলে নিয়ে নিজেদের গোলের দরজায় খিল তুলে দাও। তেইশ অক্টোবরের পর একসঙ্গে তিন পয়েন্ট আনার অঙ্ক আপাতত এ রকমই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE