প্রতীকী ছবি।
রক্ষণশীল দেশ হিসাবেই বিশ্বে পরিচিত কাতার। সেখানেই এ বার বসছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর। প্রথম থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে নানা আশঙ্কা রয়েছে কাতার নিয়ে। যেগুলির অন্যতম সমকামিতা। বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক দিন আগে তাঁদের সেই আশঙ্কা বাড়িয়ে দিলেন বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির এক মুখপাত্র।
কাতারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নতুন নয়। ২০১০ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের দায়িত্ব পাওয়ার সময়ও ফিফার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন সমাজকর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিলেন এক মুখপাত্র। ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ১২ দিন আগে তিনি বলেছেন, ‘‘সমকামিতা মনের ক্ষতি করে।’’
ফুটবল বিশ্বকাপের সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১২ লক্ষ ফুটবলপ্রেমী কাতারে আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি আলাদা। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সমস্ত ফুটবলপ্রেমীকে কাতারে স্বাগত। এখানে সকলে নিরাপদ এবং সম্মানীয়। কিন্তু কাতারের প্রাক্তন ফুটবলার খালিদ সলমান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘যাঁরা বিশ্বকাপের সময় আসবেন, তাঁদের আমাদের নিয়ম মেনে চলতে হবে। সমকামিতা এখানে অপরাধ।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমি খুব গোঁড়া মুসলিম নই। তবু বলব এটা পাপ। কারণ সমকামিতা মনের ক্ষতি করে।’’
জার্মানির একটি টেলিভিশন চ্যানেলে মঙ্গলবার খালিদের সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হওয়ার কথা ছিল। খালিদের মন্তব্য জানার পর কাতারের আয়োজক কমিটির এক আধিকারিক সাক্ষাৎকারের সংবেদনশীল অংশ সম্প্রচার না করার অনুরোধ করেন। সম্প্রতি এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, কাতারে থাকার সময় তাঁকে হোটেল থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল সেখানকার পুলিশ এবং অত্যাচার করা হয়েছিল। একমাত্র অপরাধ ছিল তিনি সমকামী। তাঁর এই বক্তব্য জানাজানি হওয়ার পর থেকেই আশঙ্কায় রয়েছেন বিশ্বের সমকামী ফুটবলপ্রেমীরা।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো অংশগ্রহণকারী ৩২ দেশকে কাতারে শুধুমাত্র ফুটবলে মন দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। খালিদের বক্তব্য জানার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত আসরে নেমেছে আয়োজক কমিটির শীর্ষ কর্তারা। এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমরা সব সময় বলেছি বিশ্বকাপ সবার জন্য। সকলে কাতারে স্বাগত। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ এবং শারীরিক চাহিদা ভেদে সকলেই স্বাগত। আমরা বিশ্বের সামনে কাতারের সমৃদ্ধ আরব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে চাই। বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসাবে কাতার নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন। ফিফার প্রত্যাশা মতোই আমরা মানবাধিকার, সমতা এবং অবৈষম্য সুনিশ্চিত করতে চাই। সকলকে নিরাপদে এবং নিশ্চিন্তে বিশ্বকাপ উপভোগ করার সুযোগ করে দিতে চাই। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী বা ফুটবলপ্রেমীর অধিকার সম্পর্কে আমরা সচেতন। সকলের সঙ্গে আমরা সাংস্কৃতিক সেতু বন্ধন করব। এলজিবিটিকিউ প্লাস গোষ্ঠীভুক্তদেরও বিশ্বকাপে আন্তরিক স্বাগত জানাচ্ছি আমরা।’’
বিশ্বের একাধিক দেশ আগেই ফিফা, কাতার প্রশাসন এবং বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির কাছে অনুরোধ করেছে, তাদের এলজিবিটিকিউ প্লাস গোষ্ঠীর সমর্থকরা যেন কোনও রকম সমস্যার মুখোমুখি না হন। খালিদের মন্তব্যের পর কাতার প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সমস্ত ফুটবলপ্রেমী যাতে নিশ্চিন্তে এবং নিরাপদে বিশ্বকাপ ফুটবল উপভোগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy