শনিবার গোলের পর ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: সমাজমাধ্যম।
তিনি ইস্টবেঙ্গলের কোচ হয়ে আসার সময় দল আইএসএলে একটাও পয়েন্ট অর্জন করতে পারেনি। ছ’টি ম্যাচের ছ’টিতেই হেরে বসেছিল। সেই অস্কার ব্রুজ়ো ইস্টবেঙ্গলের খেলাই পুরো বদলে দিয়েছেন। ফলে একের পর এক ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকায় উঠে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। শনিবার ১২তম ম্যাচে চতুর্থ জয়ের পর সেই ইস্টবেঙ্গল উঠে এসেছে দশ নম্বরে। সংগ্রহে ১৩ পয়েন্ট। অস্কার জানিয়েছেন, বাকি মরসুমেও তাঁরা আগ্রাসী ফুটবল খেলতে চান। পাশাপাশি জামশেদপুর ম্যাচে সমালোচিত ফুটবলার নন্দকুমারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
জামশেদপুরকে হারিয়েই হায়দরাবাদ ম্যাচ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন অস্কার। ম্যাচের পরেই বলেছেন, “বিপক্ষের মাঠে গিয়েও মানসিকতা বদলাব না। খেলা শুরুর বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করছি। ভার্টিকাল ফুটবল খেলছি, ট্রানজিশনও ভাল করছি এবং প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা করছি। হায়দরাবাদেও একই মানসিকতা নিয়ে খেলব আমরা। প্রথমে গোল করতে চাই। সে যত কঠিন ম্যাচই হোক।”
জামশেদপুর ম্যাচে নন্দকুমার প্রচুর গোল মিস করেছেন। তবে তামিলনাড়ুর ফুটবলার পাশে পেলেন কোচকে। অস্কার বলেছেন, “গোল মিস করতে গেলেও গোলের কাছে পৌঁছতে হয়। নন্দ সমানে চেষ্টা করে যাচ্ছে। যে দিন ওর ভাগ্য ওর সঙ্গ দেবে সে দিন ও সফলও হবে। আমার কাজ ওর প্রশংসা করা, উৎসাহ দেওয়া। নন্দ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তবে এটা ঠিক, ওকে এখনও উন্নতি করতে হবে।”
পঞ্জাব ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও জয় যে তাদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে তা শনিবার ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্সেই বোঝা গিয়েছে। আগাগোড়া দাপুটে ফুটবল খেলে জামশেদপুরকে ১-০ গোলে হারিয়েছে। জয়ের পর অস্কার বলেছেন, “ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দিয়েছিলাম আমরা। তাই আমি নিঃসন্দেহে খুশি। দু’দলের গোলের সামনেই অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
জামশেদপুরের বিরুদ্ধে দশটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ইস্টবেঙ্গল। সারা ম্যাচে ছ’টি শট লক্ষ্যে ছিল তাদের। প্রতিপক্ষের গোলকিপার আলবিনো গোমস পাঁচটি অবধারিত গোল সেভ করেছেন। আনোয়ার আলি ও পিভি বিষ্ণুর শট পোস্ট এবং বারে লেগে ফিরেছে। মাত্র এক গোলে জেতায় হতাশ অস্কারও। বলেছেন, “আরও বেশি গোলে জেতা উচিত ছিল। ম্যাচের পর দেখছিলাম আমরা দশটা গোলের সুযোগ তৈরি করেছি। তবু বলব প্রতিপক্ষের বক্সে মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছে দলের ছেলেরা। ফিনিশিংও ভাল হয়েছে। তবে এখনও অনেক জায়গায় উন্নতি করতে হবে।”
অস্কার দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর আটটি ম্যাচে তিন ধাপ ওপরে উঠেছে লাল-হলুদ বাহিনী। আরও উপরে উঠতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বজায় রাখতে হবে বলে মনে করেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলেছেন, “আমাদের দলের মধ্যে যে ইতিবাচক মনোভাব এবং আত্মবিশ্বাস এসেছে, তা বজায় থাকলে ক্রমশ টেবলের ওপরের দিকে উঠব। কাজটা সোজা নয়। কারণ আট ম্যাচে শূন্য পয়েন্ট থেকে শুরু করতে হয়েছে আমাদের। আরও ওপরে উঠতে হবে। যারা লিগের শুরু থেকেই সাফল্য পেয়েছে তাদের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব আরও কমাতে হবে।”
চোট সারিয়ে শনিবার প্রথম একাদশে ফিরেছিলেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তিনি গোল করার পাঁচ মিনিট পরেই তুলে নেন কোচ। এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে অস্কার বলেছেন, “দিমি যে হেতু সদ্য চোট সারিয়ে ফিরেছে, তাই ও ৬০ মিনিটের বেশি খেলতে পারত না। প্রথম ৪৫ মিনিট নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে ওকে একটু ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। গোলটা পেয়ে যাওয়ার পর সাবধানতা অবলম্বন করার জন্যই ওকে আর মাঠে রাখার ঝুঁকি নিইনি। আর দু’-তিন দিন বিশ্রাম পেলে ও পুরনো ফর্মে ফিরবে।”
জামশেদপুরের বিরুদ্ধে নজর কেড়েছেন আনোয়ার। প্রথমে মাঝমাঠে খেলার পর মহম্মদ রাকিপার চোটের কারণে রাইট ব্যাকে খেলতে হয়েছে। অস্কার বলেছেন, “আনোয়ার দুর্দান্ত ফুটবলার। পজ়িশন বদলানো নিয়ে কখনও কোনও অভিযোগ করেনি। ও খুব ভাল করে জানে দলের ওকে যে ভূমিকায় প্রয়োজন, ও সেটাই পালন করবে। যে পজ়িশনেই খেলানো হোক ও নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে। ওর মতো একজন খেলোয়াড়কে দলে পেয়ে আমরা গর্বিত।”
ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ক্লেটন সিলভাও ক্রমশ ছন্দে ফেরায় খুশি লাল-হলুদ কোচ বলেছেন, “ক্লেটনের ক্ষেত্রে খুব বেশি বদল করিনি। দলে ওর যেটা কাজ, তাতে একটু বদল করা হয়েছে। ক্লেটন সাধারণত নাম্বার নাইনের কাজটা করত। আমাদের দলে দু’জন নাম্বার নাইন রয়েছে। তাই দু’জনকেই একই জায়গায় খেলানোর পক্ষপাতী নই আমি। একজনকে একটু নেমে খেলতে বলি। গত দুই ম্যাচে ক্লেটন নিজের ভূমিকা খুব ভাল বুঝতে পেরেছে। ক্রমশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছে ও। ছন্দেও ফিরছে। এই ক্লেটনকেই দেখতে চেয়েছিলাম আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy