অভিনব: আম্পায়ার ‘ক্যাচ’ ধরার চেষ্টায়। বল নয়, পায়রা। গেটি ইমেজেস
ছয় হাজারি রুট
এজবাস্টনে ভারত-ইংল্যান্ড প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে পরিসংখ্যানবিদকে সব চেয়ে ব্যস্ত রাখলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট। তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৬,০০০ রান পূর্ণ করলেন ২৭ বছর বয়সি রুট। তাঁর চেয়ে কম বয়সে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন শুধু সচিন তেন্ডুলকর এবং অ্যালেস্টেয়ার কুক। তবে সময়ের দিক থেকে রুট দ্রুততম। অভিষেকের পাঁচ বছর ২৩১ দিন পরে ছ’হাজার রানে পৌঁছলেন তিনি। সময়ের বিচারে আগের দ্রুততম ছিলেন কুক। বলের দিক থেকে দ্রুততম ছ’হাজারি ভারতের বীরেন্দ্র সহবাগ। তিনি নিয়েছিলেন ৭,৫৬৪ বল। আর এক আক্রমণাত্মক ওপেনার অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ৬,০০০ রানে পৌঁছতে নিয়েছিলেন ৭,৮৬৭ বল। রুট নিলেন ১০,৮৬০ বল। এখানেই শেষ নয়। আরও একটি কীর্তি এ দিন গড়েন রুট। ভারতের বিরুদ্ধে এই নিয়ে টানা ১২টি টেস্টে ১২টি অর্ধশতরান করলেন তিনি। এর আগে কোনও একটি নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে টানা ৯টি অর্ধশতরানের বেশি করতে পারেননি কেউ। যদিও শেষ পর্যন্ত রুটের যে রেকর্ড নিয়ে চর্চা শুরু হল, তা তিনি শুনতে চাইবেন না। এই নিয়ে এগারো বার পঞ্চাশ পেরিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারলেন না তিনি।
বিরাটের অভিনব উৎসব
ওয়ান ডে সিরিজের সময় সেঞ্চুরি করার পরে জো রুট তাঁর সেই বিখ্যাত ‘মাইক ড্রপ’ ভঙ্গি করে ব্যাট ফেলে দিয়েছিলেন। ভোলেননি ভারত অধিনায়ক। এ দিন দুর্ধর্ষ ফিল্ডিংয়ে রুটকে রান আউট করেন কোহালি। পিছনে স্প্রিন্ট টেনে বলটিকে তাড়া করে তুলে নিয়ে একই গতিতে বল ছুড়ে সরাসরি থ্রোতে ভেঙে দিলেন উইকেট। রুট তখনও নন-স্ট্রাইকার প্রান্তের ক্রিজের অনেক বাইরে। তার পরেই কোহালি শুরু করে দেন রুট-বধের উৎসব। প্রথমে চুম্বন উড়িয়ে দিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়কের উদ্দেশে। তার পর করলেন ‘মাইক ড্রপ’ ভঙ্গিও। মনে হয় না এই সিরিজেও খুব শান্ত থাকবেন বিরাট।
অশ্বিনের ম্যাজিক বল
বার্মিংহামে পেসাররা কতটা সাহায্য পেতে পারেন, তা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছিল টেস্টের আগে। কিন্তু ইংল্যান্ডের প্রথম উইকেটটি তুললেন ভারতের এক স্পিনার। শেষ বার ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনও টেস্টে স্পিনারের প্রথম উইকেট নেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল দু’বছর আগে। ২০১৬-তে লর্ডসে আলেক্স হেলসকে আউট করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বাঁ হাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। কিন্তু অশ্বিন যে বলে কুককে আউট করলেন, সেটা ম্যাজিক বল আখ্যা পেয়ে গেল দ্রুতই। চর্চাও চলল যে, ঠিক কোন ডেলিভারিতে কুককে আউট করেছেন অশ্বিন। বেশ কিছু সময় ধরেই বোলিংয়ে বৈচিত্র যোগ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। আইপিএলের সময়েও লেগস্পিন করতে দেখা গিয়েছে। ‘ক্যারম বল’ করতে পারেন। এ দিন মাত্র ছয় ওভার পরেই অশ্বিনকে বোলিংয়ে নিয়ে এসে চমক দেন কোহালি। বাঁ হাতি কুকের ক্ষেত্রে অফস্পিনারের অসাধারণ ডেলিভারিগুলির একটি করলেন। ফ্লাইট করানো বলটিতে সামনের পায়ে রক্ষণাত্মক শট খেলতে গিয়েছিলেন কুক। লেগ-মিডল স্টাম্প থেকে তাঁকে ফ্লাইটে পরাস্ত করে চকিতে অফস্পিন করে অফস্টাম্পে আঘাত করে। এই নিয়ে আট বার কুক আউট হলেন অশ্বিনের বলে।
জেনিংস কট পায়রা বোল্ড শামি
ভারতীয় পেসারদের মধ্যে প্রথম দিন সেরা ছিলেন নিঃসন্দেহে মহম্মদ শামি। ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে তো বল করলেনই তিনি, সঙ্গে দুরন্ত সুইং। দু’দিকেই বল সুইং করাচ্ছিলেন শামি। সেই কারণে তাঁকে খেলতে গিয়ে সব চেয়ে সমস্যায় পড়লেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানেরা। শামির সুন্দর বোলিং দেখে সহায়তা করতে এগিয়ে এল সম্ভবত একটি পায়রাও। মাঠে ঢুকে পড়ার পরে পিচের কাছাকাছি চলে আসা বিশেষ অতিথিকে কী ভাবে সরানো হবে, তা নিয়ে বেশ নাটক চলল। তখন ব্যাট করছেন রুট এবং কিটন জেনিংস। দু’জনেই ব্যাট দিয়ে পায়রাটিকে ওড়াতে গেলেন। আম্পায়ার আলিম দার আবার হাত দিয়ে ধরে সরাতে গেলেন। এ সবের পরেই জেনিংস আউট। শামির বলে ব্যাটের ভিতরের দিকের কাণায় লেগে বল স্টাম্পে আঘাত করল। ইংল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা বলার চেষ্টা করছিলেন, দুর্ভাগ্যজনক আউট। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের থামিয়ে দিলেন। বললেন, ‘‘ক্রিকেটে এ রকম আউট হয়ই। দুর্ভাগ্য বা সৌভাগ্য হিসেবে না দেখাই ভাল। বল সুইং করে ভিতরের দিকে এলে ব্যাটের ভিতরের দিকের কাণায় লেগে বোল্ড হতেই পারে। শামি তখন ভাল বলও করছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy