নায়ক: রবিবার মিনার্ভা এফসি-র বিরুদ্ধে গোলের পর ইস্টবেঙ্গলের এসকুয়েদা। তাঁর গোলে খেতাবের দাবি আরও জোরদার হল দলেরও। এআইএফএফ
মিনার্ভা এফসি ০ • ইস্টবেঙ্গল ১
ইস্টবেঙ্গলের হয়ে অভিষেক ম্যাচে জোড়া গোল। কিন্তু আই লিগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রথম ডার্বির আগে পাঁজরের চোট মাঠের বাইরে ছিটকে দিল এনরিকে এসকুয়েদাকে। মেক্সিকোয় ফিরে গেলেন ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার। এবং শুরু হয়ে গেল জল্পনা, ৩০ বছর বয়সি এনরিকে কি পারবেন চোট সারিয়ে আদৌ ফিরতে?
এনরিকে শুধু ফিরলেনই না, ইস্টবেঙ্গলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলেন। মেক্সিকান স্ট্রাইকারের জাদুতেই রিয়াল কাশ্মীর এফসি-র পরে মিনার্ভা এফসি-র কাঁটা উপড়ে ফেলল আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার দল। আগের ম্যাচে নিজে একটা গোল করেছিলেন। আর একটা গোল করিয়েছিলেন খাইমে সান্তোস কোলাদোকে দিয়ে। রবিবার পঞ্চকুল্লায় সবাই যখন ধরে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা শেষ, তখনই ফিনিক্স পাখির মতো উদয় হলেন এনরিকে। ৭৫ মিনিটে নিখুঁত প্লেসিংয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। তবে ম্যাচের শেষ দিকে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান ধরায় ঝুঁকি না নিয়ে এনরিকেকে তুলে নেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। যদিও আশ্চর্যজনক ভাবে ম্যাচের সেরা হলেন লালডানমাওয়াইয়া রালতে।
ঘরের মাঠে চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে ড্র করার পর থেক সব ম্যাচই ইস্টবেঙ্গলের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। আইজল এফসি-র সঙ্গে ড্রয়ের পরে পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল হয়ে পড়ে। অঙ্কের বিচারে যদিও সম্ভাবনা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। শর্ত একটাই, ইস্টবেঙ্গলকে পরের সব ম্যাচেই জিততে হবে। এবং চেন্নাই সিটি এফসি-কে পয়েন্ট নষ্ট করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে শুধু সমর্থকেরা নন, ফুটবলারদেরও অনেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ব্যতিক্রম শুধু জীবন যুদ্ধে জয়ী এনরিকে।
মেক্সিকোর কেরেতারোয় ১৯৮৮ সালের ১৯ এপ্রিল জন্ম এনরিকের। তার ঠিক দু’বছর আগেই মেক্সিকো বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনাকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন দিয়েগো মারাদোনা। বাবার কাছে সেই কাহিনি শুনেই ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু এনরিকের। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে মেক্সিকোর জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন তিনি। কিন্তু গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামলেন পরিবর্ত হিসেবে। তুরস্কের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেও ৬২ মিনিটে তাঁকে তুলে নেন কোচ রামিরেস খেসুস। বাকি ম্যাচগুলো রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই দেখলেন এনরিকে। ব্রাজিলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল মেক্সিকো। বিশ্বসেরা হওয়ার উৎসবের আবহেও খেলতে না পারার যন্ত্রণা বিদ্ধ করেছিল এনরিকে-কে। মাঠে দাঁড়িয়েই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, মেক্সিকো সিনিয়র দলে খেলার। দু’বছরের মধ্যেই লক্ষ্যপূরণ করেন। সতীর্থেরা বলেন, ‘‘ওর মতো ইতিবাচক মানসিকতা খুব কম মানুষের রয়েছে। দল হারছে। খেলা প্রায় শেষের দিকে। তখনও এনরিকে বলছে, হাল ছেড়ো না। আমরাই জিতব।’’
লড়াকু মানসিকতাই বারবার চোট সারিয়ে এনরিকে-কে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। এ বারও আই লিগের ষষ্ঠ ম্যাচে পাঁজরে আঘাত নিয়ে মেক্সিকো পৌঁছেই ছুটেছিলেন ব্যক্তিগত ফিজিক্যাল ট্রেনারের কাছে। একটু সুস্থ হয়েই শুরু করে দেন রিহ্যাব। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আই লিগের ফিরতি ডার্বির আগে যখন কলকাতায় ফিরলেন, অবাক হয়ে গিয়েছিলেন আলেসান্দ্রো। কে বলবে চোটের কারণে প্রায় দেড় মাস মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। যদিও দলের সেরা স্ট্রাইকারকে সেই ডার্বিতে শুরু থেকে খেলানোর ঝুঁকি নেননি লাল-হলুদ কোচ। পরিবর্ত হিসেবে নামিয়েছিলেন। পরের বেশ কয়েকটা ম্যাচেও তাই। অভিজ্ঞ আলেসান্দ্রো জানতেন, লিগের শেষ পর্বে কঠিন পরিস্থিতিতে এনরিকের মতো যোদ্ধাই পারেন জেতাতে।
রিয়াল কাশ্মীর ও মিনার্ভার বিরুদ্ধে গোল করে ফের প্রমাণ করলেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন ‘গোল মেশিন’।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy