আসলে কোরিয়ানের পিঠে এখন ইস্টবেঙ্গল। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ইস্টবেঙ্গল-২ : মহমেডান-১(ডং-২) (করিম)
ডং...ডং..ডং!
না, কোনও মন্দির বা গির্জার ঘণ্টাধ্বনি নয়। এই শব্দব্রহ্ম লাল-হলুদের ‘কোরিয়ান ঘণ্টা’র! ডু ডং। যাঁর হুঙ্কার রবিবার বারাসত স্টেডিয়াম থেকে যুবভারতীর গ্যালারি পৌঁছে গেল কি? কলকাতা লিগে ৬ সেপ্টেম্বরের মহাডার্বির সতর্কবাণী! ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ফেসবুকে উপচে পড়ছে, ‘তোদের মৃত্যুঘণ্টা শুনতে পাচ্ছিস...ডং, ডং, ডং, ডং!’
পাঁচ ম্যাচে সাত গোল। চারবার ম্যাচের সেরা। কোরিয়ানের আবির্ভাব যেন ইস্টবেঙ্গলে এক ঘরের ছেলেরও অভাব মুছে দিচ্ছে। অ্যালভিটো ডি’কুনহা। সেই দুরন্ত গতি। বাঁ পায়ের নিখুঁত শ্যুটিং। স্বয়ং অ্যালভিটোও মেনে নিচ্ছেন, ‘‘বারাসতেই ভিভা কেরলের বিরুদ্ধে এ রকম একটা গোল করেছিলাম। ডংকে দেখে নিজের সোনালি দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।’’
অ্যালভিটোর পরে লাল-হলুদে অনেক ফুটবলার এসেছেন-গিয়েছেন। কিন্তু অ্যাটাকিং মিডিওর ভূমিকায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেননি। পেন ওরজি মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করতেন, গোল চিনতেন না। ডং মাঝমাঠ শাসনের পাশাপাশি নিজে গোলটাও দুর্ধর্ষ চেনেন। বর্ষীয়ান লাল-হলুদ কর্তা স্বপন বল বলছিলেন, ‘‘আরাতা, সুয়োকা— ফার ইস্ট থেকে যে সব বিদেশি আমাদের ক্লাবে খেলেছে, তাদের মধ্যে ডং-ই সেরা। ওর আসল প্লাস পয়েন্ট গোল করার ক্ষমতা।’’
ডং কেন সেরা, তার জলজ্যান্ত জবাব রবিবারের মিনি ডার্বি। লিগে এখনও পর্যন্ত হ্যাটট্রিক-সহ সাতটা গোল করলেও মহমেডান ম্যাচে তাঁর দু’টো গোল বাড়িতে ফ্রেম করে টাঙিয়ে রাখার মতো। বিশেষ করে প্রথমটা। যে ভাবে বাঁ দিক থেকে কাট করে ভিতরে ঢুকে সাদা-কালো ডিফেন্ডারদের এক ধারে টেনে দ্বিতীয় পোস্টে বলটা রাখলেন, অনবদ্য! ম্যাচ সেরার পুরস্কার দিতে আসা চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় তো বলে দিলেন, ‘‘ডংয়ের প্রথম গোলটা দেখে মেসির মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল!’’
কে বলবে, কিছু ঘণ্টা আগে কলকাতা লিগে বলের মান নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন ডং। উল্টে এখন মনে হচ্ছে, মহমেডান কোচ বরং সেটা করলে বেশি মানাতো! ডং যতটা নিখুঁত, ততটাই এলোমেলো মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশিরা। একটাও শট তিন কাঠির নীচে রাখতে পারলেন না। তবে সাদা-কালো কোচের স্ট্র্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। কেন তিনি ডংকে এত জায়গা দিলেন? নুরুদ্দিন গোলের সন্ধান দিতে পারছেন না দেখেও কেন করিমকে (শেষ মিনিটে মহমেডানের সান্ত্বনা গোল যাঁর) এত পরে নামালেন? মৃদুল শুধু বললেন, ‘‘আমাদের দু’টো ভুলে ওদের দু’টো গোল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy