Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
বাগান অধিনায়ক কাতসুমি

আই লিগের মাঠ নিয়ে এখনও জেরবার দুই প্রধান

আই লিগ শুরু হতে আর দিন পনেরোও বাকি নেই। অথচ কলকাতার দুই প্রধানের মাঠ নিয়ে চূড়ান্ত ডামাডোল ও অব্যবস্থা।

রবীন্দ্র সরোবর। ঝকঝকে এই স্টেডিয়ামে কি আদৌ খেলার সুযোগ পাবেন সনিরা!

রবীন্দ্র সরোবর। ঝকঝকে এই স্টেডিয়ামে কি আদৌ খেলার সুযোগ পাবেন সনিরা!

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:১৬
Share: Save:

আই লিগ শুরু হতে আর দিন পনেরোও বাকি নেই। অথচ কলকাতার দুই প্রধানের মাঠ নিয়ে চূড়ান্ত ডামাডোল ও অব্যবস্থা।

যে মাঠে ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের টিমের খেলার কথা সেই বারাসত স্টেডিয়াম এখন জঙ্গলে ভর্তি। অন্ধকার। সেখানে গিয়ে দেখা গেল প্রেসবক্স, পুলিশের ঘর সংস্কার করা হলেও দর্শকরা যে রাস্তা দিয়ে গ্যালারিতে ঢুকবেন সেখানে বড় বড় আগাছায় ভর্তি। শোনা গেল, দিনের বেলাতেই সেখানে বিষাক্ত সাপ ঘোরাফেরা করে। রাতে খেলার সময় কী হবে তাই ভেবে পাচ্ছেন না স্টেডিয়াম কর্মীরা। সাড়ে চোদ্দো হাজার দর্শকের জন্য মাত্র চারটে বাথরুম। তাও সব ক’টা লাগোয়া রেললাইনের দিকে। বাকি দু’দিকে কোনও বাথরুম নেই। ড্রেসিংরুমের হালও একই। স্যাঁতস্যাঁতে। এমনিতে অ্যাস্ট্রোটার্ফ বলে মাঠ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বারপোস্টের পিছন দিকে অনুশীলন অঞ্চলে এখনও লম্বা লম্বা ঘাস। মাস দুয়েক আগে ফেডারেশন কর্তারা যখন পরিদর্শনে এসেছিলেন তখন সেই সব পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। কালো কালো ছোপ দেখে অবাক হয়েছিলেন দিল্লির কর্তারা। ফিরে তাঁরা চিঠিও দিয়েছিলেন আইএফএ-কে। কী কী করতে হবে জানিয়ে। দশ-বারো দিনের মধ্যে কী ভাবে সব অব্যবস্থা সামাল দেওয়া হবে কেউ জানে না। লাল-হলুদ কর্তারা সব কিছুই ছেড়ে দিয়েছেন আইএফএ-র উপর। ইস্টবেঙ্গলের মাঠ সচিব দীপঙ্কর (বাবু) চক্রবর্তী বললেন, ‘‘ফেডারেশন আইএফএ-কে চিঠি পাঠিয়ে যা যা করতে বলেছিল তার অর্ধেক কাজই হয়নি। জানি না কবে তা হবে? আমরা চিন্তায় আছি।’’

ইস্টবেঙ্গল তবু মাঠ পেয়েছে। মোহনবাগান এখনও পুরো নিশ্চিত নয় কোথায় হোম ম্যাচ খেলবে তা নিয়ে। রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের মাঠ তৈরি। এখনও ঝকঝকে। আইএসএল সংগঠকদের বিচারে সেরা টার্ফের পুরস্কারও পেয়েছে আটলেটিকো দে কলকাতা। জানা গিয়েছে, অন্ধকার স্টেডিয়ামকে আধুনিক বানাতে এটিকে কর্তৃপক্ষ খরচ করেছিলেন প্রায় আট কোটি টাকা।

কিন্তু ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে সেই মাঠের ঘাসের কোনও পরিচর্যা হয়নি। জল না পেয়ে জায়গায় জায়গায় হলুদ হয়ে যাচ্ছে। বাগান কর্তারা মাঠ হাতে না পাওয়ায় সেখানে কিছু করতে পারছেন না। দিতে পারছেন না জল। চালাতে পারছেন না ঘাস কাটার মেশিন। রবীন্দ্র সরোবর পেতে হলে অবশ্য তিনটে হার্ডল টপকাতে হবে মোহনবাগানকে। রাজ্য সরকার, এটিকে এবং পরিবেশ আদালত।

রাজ্য সরকারের কাছে মাঠ চেয়ে বাগান কর্তারা ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রীকে। আটলেটিকো কলকাতার কর্তাদের সঙ্গে ফ্লাড লাইট ও ড্রেসিংরুম-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। কত টাকা দিতে হবে তা নিয়ে দরকষাকষি চলছে। পাশাপাশি পরিবেশ আদালত থেকেও সম্মতি জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। কারণ, এটিকের খেলার অনুমতি দেওয়ার সময় পরিবেশ আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, জোসে মলিনার টিমের খেলা শেষ হওয়ার পর ফ্লাডলাইট জ্বেলে আর কোনও খেলা করা যাবে না। সেই নির্দেশের কপি ইতিমধ্যে সৃঞ্জয় বসু-দেবাশিস দত্তদের হাতে তুলে দিয়েছেন এটিকে কর্তারা। বাগান কর্তারা আশাবাদী পাখিদের বা গাছগাছালির কোনও সমস্যা হবে না এই মুচলেকা দিয়ে তাঁরা খেলার সম্মতি আদায় করতে পারবেন আদালত থেকে। এটিকে অবশ্য ইতিমধ্যেই তাদের স্টেডিয়ামের বাইরের রাস্তার লাইট, প্রেসবক্স এবং ভিভিআইপি বক্সের জিনিসপত্র খুলতে শুরু করে দিয়েছে। সনি নর্ডি, কাতসুমিরা শেষ পর্যন্ত তিনটে হার্ডল টপকে যদি সরোবরে ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তা হলেও সবুজ-মেরুন সমর্থকরা আইএসএলের পরিবেশে খেলা দেখতে পারবেন সরোবরে। সনি-জেজেরাও পাবেন ভাল একটি মাঠে খেলার সুযোগ। বাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছি। এটিকে কর্তাদের সাহায্য চেয়েছি। আমরা নিশ্চিত বাগান খেলবে সরোবরেই।’’

এ দিকে ইস্টবেঙ্গল এ দিন শিলিগুড়িতে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে নেমে পড়লেও সোমবার থেকে অনুশীলন শুরু করবে বাগান। বাগান কর্তারা চাইছেন, জানুয়ারির শুরুতেই সনি, জেজে, এডু-সহ সব ফুটবলারকেই শহরে নিয়ে আসতে। বাগানের এ বারের অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন কাতসুমি। ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কত্ব করবেন রবার্ট। মাঠের পাশাপাশি বিদেশি নির্বাচন নিয়ে তীব্র সমস্যা লাল-হলুদ কর্তারা। কিতচির অ্যালেক্স আকান্দে হাতছাড়া হওয়ায় তাঁর জায়গায় ত্রিনিদাদ টোবাকোর একজন স্ট্রাইকারকে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিস্থিতি যা তাতে প্রথম ম্যাচে দুই বা তিন জন বিদেশি নিয়েই নামতে হবে ট্রেভর মর্গ্যানকে।

অন্য বিষয়গুলি:

East Bengal Mohun Bagan Play Ground
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE