০-৪ হওয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে ভারত অধিনায়ক। ছবি: এএফপি
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো অধিনায়ককেও যে একটা সময় কাঠগড়ায় উঠতে হবে, তা সত্যিই ভাবা যায়নি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে চার নম্বর ওয়ান ডে- টা এ ভাবে হারার পরে ধো নির ভবিষ্যৎ নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।
নেহাত ধোনিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। না হলে হয়তো ধোনিকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াই হত। জানি না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কেমন করবে ভারত। যদি ভরাডুবি চলতে থাকে, তা হলে তার পরের ওয়ান ডে সিরিজে (মে মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট) ধোনিকে নেতৃত্ব থেকে বাদ দেওয়া হলে অবাক হব না। এবং সে ক্ষেত্রে ধোনির আন্তর্জাতিক কেরিয়ারও হয়তো শেষ হয়ে যাবে।
তবে শুধু ধোনির কাঁধে যাবতীয় দোষ চাপিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের কোনও উন্নতি হবে কি না, এটা অবশ্যই একটা বিতর্কের বিষয়। মানছি বুধবার কোহলি, ধবন আউট হয়ে যাওয়ার পর যখন আস্কিং রেট ৬-এরও নীচে, তখন ধোনির যে ভাবে দায়িত্ব নিয়ে দলকে জেতানো উচিত ছিল, তা ও পারেনি।
কিন্তু প্রশ্ন হল, ধোনি না পারলে কি আর কেউ তা পারবে না? বুধবার যে সুযোগটা গুরকিরাত সিংহ মান, ঋষি ধবন, জাডেজারা পেয়েছিল, সেটা কাজে লাগালে ওরা নায়ক হয়ে যেত। সেই তাগিদটাই দেখা গেল না এই তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে। তা হলে এটাই বুঝতে হবে যে ওদের সেই ক্ষমতা নেই। আজ যুবরাজ সিংহ, আশিস নেহরাদের দলে ফেরাতে হচ্ছে একই কারণে।
আরও একটা প্রশ্ন। ধোনির জায়গায় কে? এই প্রশ্নে যারা বিরাট কোহলির নাম বলছেন, তাদের বলি, সব ফর্ম্যাটে একসঙ্গে নেতৃত্ব সামলানোর মতো পরিণত কোহলি হয়েছে কি না, তা ভেবে দেখতে হবে।
বুধবার ক্যানবেরার ম্যাচের হারটা সিরিজ হারের চেয়েও যন্ত্রণাদায়ক। কারণ এই ম্যাচটা জিতলে একটা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটানোর সুযোগ ছিল ভারতের সামনে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন শো তাড়া করে এর আগে কেউ জেতেনি। সেরা স্কোর ছিল ’৯৭-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৮৪-৩। আর ভারত তো ৩৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জেতার এত কাছে এসে গিয়েছিল। কিন্তু অবিশ্বাস্য ভাবে ৪৬ রানে নয় উইকেট হারালাম আমরা।
সমস্যা হল, আমাদের দল হারলে আমরা বড় ব়ড় সমস্যাগুলো নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে বসি। বোলিং ভাল হচ্ছে না, ব্যাটিং ভাল হচ্ছে না, ফিল্ডিং ভাল হচ্ছে না— এই বলে চেঁচামেচি করতে থাকি। ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে ভাবিই না।
খুচরো রান নেওয়ার প্রবণতা কম। বিপক্ষের চেয়ে বেশি ডট বল খেলা। ফিল্ডিংও এমন কিছু উচ্চ মানের নয়। প্রতি ইনিংসে বাড়তি ১৫-২০ রান দিয়েই যাচ্ছে আমাদের ফিল্ডাররা। আমাদের বোলিং এর আগেও খুব একটা আহামরি ছিল না, এখনও নেই। ম্যাক্সওয়েল বুধবার ইশান্ত শর্মার শেষ ওভারে ১৮ রান তুলল। ইশান্তের মতো অভিজ্ঞ পেসারকে শেষ ওভারে একটাও গুড লেংথ বা ইয়র্কার না দিতে দেখে অবাক হলাম।
এই সব ছোটখাট বিষয়গুলো নিয়ে তো টিম ম্যানেজমেন্টকেই ভাবতে হবে। আর ক্যাপ্টেন টিম ম্যানেজমেন্টেরই অংশ। তাই এই ভুলের দায় ক্যাপ্টেনেরও যথেষ্ট রয়েছে। ধোনির সামনে কিন্তু আর একটাই সুযোগ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া
ওয়ার্নার বো ইশান্ত ৯৩
ফিঞ্চ ক ইশান্ত বো উমেশ ১০৭
মার্শ ক কোহলি বো উমেশ ৩৩
স্মিথ ক গুররিকত বো ইশান্ত ৫১
ম্যাক্সওয়েল ক মণীশ বো ইশান্ত ৪১
বেইলি ক রোহিত বো ইশান্ত ১০
ফকনার বো উমেশ ০
ওয়েড রান আউট ০
হেস্টিংস ন.আ. ০
অতিরিক্ত ১৩
মোট ৫০ ওভারে ৩৪৮-৮
পতন ১৮৭-২২১-২৮৮-২৯৮-৩১৯-৩১৯-৩২১-৩৪৮।
বোলিং: উমেশ ১০-১-৬৭-৩, ভুবনেশ্বর ৮-০-৬৯-০, ইশান্ত ১০-০-৭৭-৪, গুরকিরত ৩-০-২৪-০, ঋষি ৯-০-৫৩-০, জাডেজা ১০-০-৫১-০।
ভারত
রোহিত ক ওয়েড বো রিচার্ডসন ৪১
ধবন ক বেইলি বো হেস্টিংস ১২৬
কোহলি ক স্মিথ বো রিচার্ডসন ১০৬
ধোনি ক ওয়েড বো হেস্টিংস ০
গুরকিরত ক শন বো লায়ন ৫
জাডেজা ন.আ. ২৪
রাহানে ক স্মিথ বো রিচার্ডসন ২
ঋষি ক ওয়ার্নার বো রিচার্ডসন ৯
ভুবনেশ্বর ক স্মিথ বো রিচার্ডসন ২
উমেশ ক বেইলি বো মার্শ ২
ইশান্ত ক ওয়েড বো মার্শ ০
অতিরিক্ত ৬
মোট ৪৯.২ ওভারে ৩২৩
পতন ৬৫-২৭৭-২৭৭-২৭৮-২৮৬-২৯৪-৩০৮-৩১১-৩১৫।
বোলিং: লায়ন ১০-০-৭৬-১, রিচার্ডসন ১০-০-৬৮-৫, হেস্টিংস ১০-০-৫০-২, ফকনার ৭-০-৪৮-০, মার্শ ৯.২-০-৫৫-২, ম্যাক্সওয়েল ১-০-১০-০, স্মিথ ২-০-১৬-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy