রিঙ্কু সিংহ। ছবি: টুইটার।
আয়ারল্যান্ডকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩৩ রানে হারিয়ে দিল ভারত। যশপ্রীত বুমরার দলের তোলা ৫ উইকেটে ১৮৫ রানের জবাবে আয়ারল্যান্ড থেমে গেল ৮ উইকেটে ১৫২ রানেই। প্রথম দু’টি ম্যাচে জেতায় সিরিজ়ও ভারতের পকেটেই। ফলে বুধবার তৃতীয় ম্যাচ হয়ে দাঁড়াল নিয়মরক্ষার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় হারের পর এই জয় নিঃসন্দেহে ভারতকে আত্মবিশ্বাসী করবে। এমনিতেই দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ় খেলতে নেমেছে ভারত। টি-টোয়েন্টি দলের একাধিক ক্রিকেটার বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। বুমরার প্রত্যাবর্তনের সিরিজ়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই পকেটে পুরে নিল ভারত।
দ্বিতীয় ম্যাচে ভাল খেললেন রিঙ্কু সিংহ। আইপিএলে ভাল খেলার সুবাদে জাতীয় দলের টিকিট মিললেও প্রথম ম্যাচে বৃষ্টির কারণে ব্যাট করার সুযোগ পাননি। দ্বিতীয় ম্যাচে চাপের মুহূর্তে নামতে হয়েছিল তাঁকে। প্রথম আবির্ভাবেই সসম্মানে পাস রিঙ্কু। শুরুটা ধীরে করেছিলেন। প্রতিটি বল ধরে ধরে খেলছিলেন। শেষ বেলায় কেকেআরের ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে বেরোল মনকাড়া কিছু শট। ২১ বলে ৩৮ রান করে শুরুতেই বুঝিয়ে দিলেন নিজের প্রতিভা। যোগ্য সঙ্গত দিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং সঞ্জু স্যামসন। ওপেনার রুতুরাজ তৃতীয় উইকেটে সঞ্জুর সঙ্গে মিলে যোগ করেন ৬৮ রান।
প্রথম ওভারে মাত্র দু’রান উঠেছিল ভারতের। কিন্তু দ্বিতীয় ওভার থেকেই আগ্রাসী হয়ে ওঠেন যশস্বী জয়সওয়াল। জশ লিটলকে দু’টি চার এবং একটি ছয় মেরে সেই ওভার থেকে ১৬ রান তোলে। আইপিএলে খেলার সুবাদে লিটলের বোলিং যশস্বীর কাছে চেনাই। তার ফায়দা তুলতে দেরি করেননি। কিন্তু অতি আগ্রাসী হওয়ার মূল্য চোকাতে হয় ভারতের তরুণ ওপেনারকে। চতুর্থ ওভারেই সাজঘরে ফেরেন। ক্রেগ ইয়ংয়ের শর্ট বলে পুল করতে গিয়েছিলেন। ব্যাটে-বলে ঠিক ঠাক সংযোগ না হওয়ায় ডিপ মিড উইকেটে কার্টিস ক্যাম্ফারের হাতে ধরা পড়েন।
তিলক বর্মার কাছে সুযোগ থাকলেও কাজে লাগাতে পারলেন না। এক রানেই ফিরলেন ব্যারি ম্যাকার্থির বলে। পর পর দুই উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা চাপে ভারত। সেই চাপ কাটিয়ে দিলেন সঞ্জু স্যামসন এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়। প্রথম দিকে কিছুটা সামলে নিয়ে দু’জনেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে শুরু করলেন। ১১তম ওভারে লিটলের প্রথম তিনটি বলে তিনটি চার মারেন সঞ্জু। পঞ্চম বলে মারেন ছয়। সেই ওভার থেকে ওঠে ১৮ রান।
দুই ক্রিকেটারই একসঙ্গে অর্ধশতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু সঞ্জুও অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে গিয়ে আউট হলেন। বেঞ্জামিন হোয়াইটের বলে মিড অনের দিকে চালাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটে লেগে বল স্টাম্প ভেঙে দেয়। সিরিজ়ে প্রথম বার ব্যাট করতে নামেন রিঙ্কু। কিন্তু তিনি শুরুর দিকে কিছুটা ধরে খেলায় আক্রমণের দায়িত্ব নিতে হয় রুতুরাজকে। ১৫তম ওভারে হোয়াইটের বলে চার মেরে অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি।
পরের ওভারেই ম্যাকার্থির বলে ফিরে যান রুতুরাজ। অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বলে ছয় মারতে গিয়েছিলেন রুতুরাজ। লং অফে ক্যাচ নেন হ্যারি টেক্টর। শিবম দুবে যোগ দেন রিঙ্কুর সঙ্গে। ভারতের রানের গতি এর পর হঠাৎই কমে যায়। দুই নতুন ব্যাটার ক্রিজে এলেও আয়ারল্যান্ডের বোলারদের শাসন করতে পারছিলেন না।
পরিস্থিতি বদলে যায় শেষ দু’ওভারে। প্রথম ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ না পাওয়া রিঙ্কু নিজের প্রতিভা বোঝালেন ১৯তম ওভারে। ম্যাকার্থির বলে দু’টি ছয় এবং একটি চার মারেন তিনি। সেই ওভারে তিনটি ওয়াইড করেন আয়ারল্যান্ডের বোলার। এক ওভারে ওঠে ২২ রান। এক সময় ১৪ বলে ১৪ রানে ব্যাট করতে থাকা রিঙ্কুর রানের গতি আচমকাই অনেকটা বেড়ে যায়। শেষ ওভারেও একই চিত্র। মার্ক অ্যাডেয়ারকে দু’টি ছয় মেরে শুরু করেন শিবম। চতুর্থ বলে আবার ছয় মারেন রিঙ্কু। পঞ্চম বলে আবার ছয় মারতে গিয়ে ইয়ংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় রিঙ্কুকে। শেষ বলে ওয়াশিংটন সুন্দর এক রানের বেশি নিতে পারেননি।
আয়ারল্যান্ডের শুরুটা খারাপ হয়নি। বুমরার ওভারে ৮ এবং আরশদীপের ওভারে ১০ রান ওঠে। তৃতীয় ওভারে প্রসিদ্ধ বল করতে এসেই জোড়া ঝটকা দেন আয়ারল্যান্ডকে। তৃতীয় বলে পল স্টার্লিংকে ফেরান তিনি। ষষ্ঠ বলে ফেরেন লোরকান টাকার। দু’টি ক্ষেত্রেই পুল করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিক না হওয়ায় বল আকাশে উঠে যায়। ষষ্ঠ ওভারে রবি বিষ্ণোই ফিরিয়ে দেন হ্যারি টেক্টরকে। এর পর ক্যাম্ফার এবং অ্যান্ডি বালবির্নি মিলে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। পরে ক্যাম্ফারকেও ফেরান বিষ্ণোই।
আয়ারল্যান্ডের বাকি ব্যাটাররা খেলতে না পারলেও থামানো যাচ্ছিল না বালবির্নিকে। ভারতের কোনও বোলারকেই রেয়াত করছিলেন না তিনি। আস্কিং রেট বেড়ে চললেও বালবির্নি যে ভাবে খেলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল শেষ বেলায় ভারতের হাত থেকে ম্যাচ না বেরিয়ে যায়। আরশদীপ সিংহের সৌজন্যে সেটা অবশ্য হল না। তাঁর বলে খোঁচা দিয়ে বালবির্নি ফিরতেই আয়ারল্যান্ডের আশা শেষ হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy