কেমন হল কেকেআরের দল? ফাইল ছবি
সবচেয়ে কম টাকা নিয়ে শুক্রবার মিনি নিলামে লড়াই করতে নেমেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সে। নিলামের প্রথম পর্বে তাদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি। যে দর উঠছিল ক্রিকেটারদের, তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না কেকেআরের। তবে দিনের শেষে বেশ কিছু ক্রিকেটারকে তুলে নিয়ে কেকেআর মোটের উপর যে দল তৈরি করেছে, তা সন্তোষজনকই। শাকিব আল হাসান বাদে খুব বড় নাম কেকেআর নেয়নি। তবে ভুললে চলবে না, কেকেআরের কোচ হিসাবে রয়েছেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। আনকোরা ক্রিকেটারদের নিয়েও ট্রফি জিততে যাঁর জুড়ি নেই।
ফেব্রুয়ারিতে যে বড় নিলাম হয়েছিল, সেখানেও শেষ বেলায় একঝাঁক ক্রিকেটার নিয়েছিল কলকাতা। এ বারও তাই দেখা গেল। আগের নিলামের বেশ কিছু ফাটকা অবশ্য কাজে দেয়নি। আইপিএলে প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি শ্রেয়স আয়ারের দল। এ বার অবশ্য কোচের পদে বদল হয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিজ্ঞ নাম চন্দ্রকান্ত দায়িত্বে। ঘরোয়া কোন ক্রিকেটার কোন ম্যাচে বাজি মারতে পারেন, সেটা তাঁর থেকে ভাল কেউ জানে না। ফলে আনকোরা ক্রিকেটার নিলেও তার পিছনে যে চন্দ্রকান্তের ভূমিকা রয়েছে, সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এ বারের নিলামে কাদের নিয়েছে কেকেআর। সবচেয়ে বেশি দেড় কোটি টাকা দিয়ে শেষ বেলায় শাকিব আল হাসানকে কিনেছে কলকাতা। তার আগে এক কোটি টাকায় তারা কেনে নামিবিয়ার অলরাউন্ডার ডেভিড উইজ়াকে। এ ছাড়া নারায়ণ জগদীশন, বৈভব অরোরা, মনদীপ সিংহ, লিটন দাস, কুলবন্ত খেজরোলিয়া এবং সূয়স শর্মাকে। কারও জন্যেই এক কোটি খরচ করতে হয়নি। ফলে দিনের শেষে কেকেআরের হাতে রয়ে গিয়েছে ১.৬৫ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার, যে যে লক্ষ্য নিয়ে তারা নিলামে এগিয়েছে, তার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছে। তাদের দরকার ছিল একজন ওপেনার। জগদীশন এবং লিটন সেই জায়গা পূরণ করতে পারেন। দলে দরকার ছিল একজন উইকেটকিপার। জগদীশন এবং লিটন দু’জনেই উইকেটকিপিংও করতে পারেন। তবে একটু হলেও এগিয়ে থাকবেন জগদীশন। কারণ, তিনি স্বদেশি ক্রিকেটার এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিজ্ঞ। লিটন সেখানে এক বারও আইপিএলে খেলেননি। ডেথ ওভারে এক জন অভিজ্ঞ বোলার দরকার ছিল কলকাতার। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি তারা। মূলত হাতে টাকা না থাকার জন্যেই। তবে পণ্ডিত যদি গড়ে নিতে পারেন, তা হলে এই বিভাগে কেকেআরের চমক হতে পারেন খেজরোলিয়া।
আন্দ্রে রাসেলের বিকল্পও এই ফাঁকে তৈরি করে নিয়েছে কেকেআর। অভিজ্ঞ উইজ়া রাসেলের পরিবর্তে কোনও ম্যাচে খেলতেই পারেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে নামিবিয়া যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলেও তাঁকে একাধিক ম্যাচে ভাল খেলতে দেখা গিয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে একমাত্র বাধা হল বয়স। তিনি প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি।
এর মাঝেই শাকিবকে আবার দলে ফেরাল কলকাতা। বাংলাদেশের টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের নাম ডাকা হলেও প্রথম দফায় আগ্রহ দেখায়নি আইপিএলের কোনও ফ্রাঞ্চাইজ়ি। আগের বারও আইপিএলের নিলামে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নেয়নি শাকিবকে। যদিও শেষ বেলায় বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে তুলে নিল কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি। কেকেআর দলে নিল বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটনকেও। দু’জনকেই তাঁদের ন্যূনতম দামে কিনেছে কলকাতা। শাকিবকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকায় এবং লিটনকে ৫০ লাখ টাকায় কিনল দু’বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
জগদীশন এই আইপিএলে কেকেআরের চমক হতে পারেন। চলতি মরসুমে দারুণ ছন্দে রয়েছেন আইপিএলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলের প্রাক্তন সদস্য। কিছু দিন আগে ভারতের ঘরোয়া এক দিনের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা বিজয় হজারে ট্রফিতে ২৭৭ রান করেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে বিশ্বের যাবতীয় এক দিনের ম্যাচে (ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক) এক ইনিংসে এত রান আর কারও নেই। অরুণাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে সেই ইনিংসে মাত্র ১৪১ বলে ২৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন জগদীশন। মেরেছিলেন ২৫টি চার ও ১৫টি ছক্কা। এ ছাড়াও চলতি মরসুমে পর পর পাঁচটি লিস্ট এ (৫০ ওভারের) ম্যাচে শতরান করার নজির গড়েন জগদীশন। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে এই নজির গড়েন তিনি।
Memories we love to recall #TATAIPLAuction #IPLAuction #AmiKKR #GalaxyOfKnights pic.twitter.com/Ptj8HF1svS
— KolkataKnightRiders (@KKRiders) December 23, 2022
আইপিএলে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি জগদীশন। ২০১৮ সালের নিলামে তাঁকে চেন্নাই দলে নিলেও প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পান ২০২০ সালে। ২০২২ সালের নিলামেও তাঁকে নিয়েছিল চেন্নাই। শুক্রবারের নিলামে জগদীশনের ন্যূনতম দাম ছিল ২০ লাখ টাকা। তাঁকে ধরে রাখতে আগ্রহী ছিল চেন্নাইও। নিলামে কলকাতার সঙ্গে লড়াই হয় তাদের। শেষ পর্যন্ত ৯০ লাখ টাকায় ২৬ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে দলে নিল কলকাতা।
আইপিএলে তেমন খেলার সুযোগ না হলেও তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে পরিচিত মুখ জগদীশন। ২০১৬-১৭ মরসুমে তামিলনাড়ুর হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচেই সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। একই মরসুমে রাজ্য দলের হয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও অভিষেক হয়েছিল জগদীশনের। ২০২১ সালে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় তিনিই ছিলেন তামিলনাড়ুর সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আটটি ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৩৬৪ রান।
কেকেআরের পুরো দল: শ্রেয়স আয়ার (অধিনায়ক), নীতীশ রানা, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, বেঙ্কটেশ আয়ার, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, শার্দূল ঠাকুর, লকি ফার্গুসন, উমেশ যাদব, টিম সাউদি, হর্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী, অনুকূল রায়, রিঙ্কু সিংহ, শাকিব আল হাসান, ডেভিড উইজ়া, নারায়ণ জগদীশন, বৈভব অরোরা, মনদীপ সিংহ, লিটন দাস, কুলবন্ত খেজরোলিয়া এবং সূয়স শর্মা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy