নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনকে কলকাতা বৈঠকে যখন প্রবল কোণঠাসা করে ফেলা চলছে, সমান্তরাল ভাবে আরও একটা নাটক উদ্ভুত হল বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুরকে নিয়ে। বিতর্কের সূত্রপাত টিভি চ্যানেলের খবরে। যেখানে অভিযোগ ওঠে, ভারতীয় বোর্ডের কাছে অনুরাগ নিয়ে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে আইসিসি। যা নাকি গত ২২ এপ্রিল এসেছে। যেখানে নাকি লেখা, কর্ণ গিলহোত্র নামের এক সন্দেহভাজন বুকির সঙ্গে দেখা গিয়েছে অনুরাগকে। আইসিসি ডেটাবেসে যে বুকির নাম আছে। যে খবর বেরিয়ে পড়তে তুমুল জল্পনার সৃষ্টি হয়। বলা হতে থাকে, প্রথম ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তো আবার কলঙ্কে আক্রান্ত হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেল বুকির সঙ্গে অনুরাগের ছবিও দেখাতে শুরু করায় উত্তেজনা আরও বাড়ে। কেউ কেউ বলতে থাকেন, এর পিছনে আবার শ্রীনির প্রভাব নেই তো? কারণ চিঠিটা পাঠিয়েছেন আইসিসি সিইও ডেভ রিচার্ডসন। যে চিঠির একটা কপি মার্ক করা হয়েছে বোর্ড প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়াকে। আর একটা শ্রীনিকে। মিডিয়াকে ডালমিয়া জানাননি এটা। ধরে নেওয়া যায়, তা হলে শ্রীনিই সেটা করেছেন। যেহেতু আইসিসি চেয়ারম্যান বোর্ডে এখন নিজে আক্রান্ত।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষ হওয়ার পরে আর দেখা যায়নি বোর্ড সচিবকে। বৈঠক শেষ হওয়ার পরেও মিডিয়া অপেক্ষা করে ছিল অনুরাগের জন্য। কিন্তু তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। পরে শোনা যায়, হোটেলের পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন অনুরাগ। কোনও পাল্টা বিবৃতিও আসেনি তাঁর পক্ষ থেকে।
তবে তিনি প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠমহল পাল্টা দিল। বলা হল, দিনে শ’য়ে শ’য়ে লোকের সঙ্গে দেখা করতে হয় অনুরাগকে। তিনি তো সাধারণ কোনও ব্যক্তিত্ব নন, হিমাচলপ্রদেশে বিজেপির প্রধান মুখ। বিজিওয়াইএম নেতা। অফিসই তাঁর চারটে। যেখানে সব সময়ই কারও না কারও সঙ্গে দেখা করতে হচ্ছে। কেউ গ্রাম থেকে মিষ্টি নিয়ে আসছে, কেউ সেলফি তুলতে চাইছে। অনুরাগের পক্ষে কী ভাবে জানা সম্ভব যে, যার সঙ্গে ছবি তুলছেন সে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কি না? কিন্তু এখানে তো ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে গিলহোত্র নামের ওই বুকিকে চণ্ডীগড়ে এক অনুষ্ঠানে কেক খাইয়ে দিচ্ছেন অনুরাগ। বোর্ড সচিব পদে আসার কয়েক দিনের মধ্যে যেটা ঘটেছে বলে দাবি। এ বার বোর্ড সচিবের ঘনিষ্ঠমহলের বক্তব্য, অনুরাগ যে সংশ্লিষ্ট ওই লোককে চেনেন না, বলা হচ্ছে না। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে সে লোকটা কী করে, সে বুকি কি না, সেটা বোর্ড সচিবের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, আরও বলা হচ্ছে অনুরাগ হিমাচল ক্রিকেটসংস্থার প্রেসিডেন্ট হয়েও আজ পর্যন্ত কাউকে বলেননি যে অমুককে টিমে নাও। সেই লোক জেনেশুনে এমন কারও সঙ্গে দেখা করবে, সেটা অবিশ্বাস্য।
অনেকের ধারণা এর ফলে বোর্ডে বিজেপি গোষ্ঠীর সঙ্গে শ্রীনির সমঝোতা হওয়ার যে শেষ আশা ছিল, সেটাও শেষ হয়ে গেল। বিজেপির বিরুদ্ধে এমন বেপরোয়া আক্রমণে গিয়ে শ্রীনি হয়তো আরওই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy