ট্রেভর জেমস মর্গ্যান।—ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন: ফের এক বার আই লিগ জয়ের দৌড়ে ইস্টবেঙ্গল। কী মনে হচ্ছে? এ বার অধরা খেতাব জিততে পারবে লাল-হলুদ?
মর্গ্যান: অবশ্যই! শুধু এ বারই নয়, ২০১০ থেকে যে কোনও মরসুমেই আই লিগ খেতাব আসতে পারত ইস্টবেঙ্গলে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, শেষ পর্যন্ত খেতাব জিততে পারেনি লাল-হলুদ।
প্রশ্ন: আপনি ফেড কাপ, কলকাতা লিগ, সুপার কাপ পেলেও অধরাই থেকে গিয়েছে আই লিগ। এ বার লিগ জিতলে আপনার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন কি সত্যি হবে?
মর্গ্যান: আমি এ বার দলের সঙ্গে যুক্ত নই। ফলে আমার অপূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব নয়। তবে হ্যাঁ, ইস্টবেঙ্গল এই মরসুমে আই লিগ জিতলে সমর্থকদের মতোই খুশি হব আমি।
প্রশ্ন: কাপ জয়ের একেবারে কাছে এসে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল। এই সময়টা আপনিও দেখেছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে ফুটবলারদের মানসিক চাপ কী ভাবে কমাতেন?
মর্গ্যান: কলকাতার মিডিয়া এবং বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে অনেকটাই চাপে পড়ে যায় ফুটবলাররা। আমি চেষ্টা করতাম প্লেয়ারদের এই বিষয় থেকে দূরে রাখতে। কারণ দিনের শেষে খেলাটা এগারো বনাম এগারোর। এবং লক্ষ্য থাকে একটাই— ৩টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
প্রশ্ন: খালিদের কোচিং স্টাইল বার বার সমালোচনার মুখে পড়েছে। আপনার কী মনে হয়?
মর্গ্যান: ব্যক্তিগত ভাবে ওর সম্পর্কে বেশি কিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে, যে ধরনের কোচিং স্টাইলে ও বিশ্বাস করে সেই রকমই ও খেলাবে দলকে। আমার মনে হয় না সমালোচনার চাপে কোচিং স্টাইলে বা দল গঠনে পরিবর্তন আনবে ও। সবাইকে সন্তুষ্ট করা তো আর সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: এক সময়ে আপনি যেখানে ছিলেন আজ খালিদও সেখানেই দাঁড়িয়ে। খালিদের এই ধারাবাহিকতা দেখে কেমন লাগছে?
মর্গ্যান: ও যখন মুম্বই এফসির কোচ ছিল সেই সময় মু্ম্বইকে হারিয়ে পয়েন্ট আনা বেশ কষ্টকর ছিল। ওর কোচিংয়ে গত বছর আই লিগ জিতেছে আইজল। ওর কোচিংয়ে দারুণ ভাবে লিগ জয়ের দৌড়ে ইস্টবেঙ্গলও। কোচ হিসেবে খালিদের এই ধারাবাহিকতা নিঃসন্দেহে তারিফ পাওয়ার যোগ্য।
প্রশ্ন: শোনা যায় অ্যালভিটো নাকি কোচের কাজে হস্তক্ষেপ করে। আপনি কখনও সম্মুখীন হয়েছিলেন এই পরিস্থিতির?
মর্গ্যান: আমার সময় অ্যালভিটোকে নিয়ে কখনও সমস্যায় পড়তে হয়নি। ও যে কোনও কাজে উৎসাহ দিত।
প্রশ্ন: শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে জিততে পারলেই অনেকটা সহজ হয়ে যাবে লাল-হলুদের লিগ জয়ের রাস্তা। কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে লাজং ম্যাচ?
মর্গ্যান: শিলংয়ে গিয়ে ওদের বিরুদ্ধে খেলাটা সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে বিগত দু’টি মরসুমে লাজংয়ের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের যা ফর্ম তা আত্মবিশ্বাস বাড়াবে গোটা দলের।
প্রশ্ন: ইতিমধ্যে সমর্থকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া চেঞ্চো দেশের হয়ে খেলবে আপনার কোচিংয়ে। কেমন লাগছে ওঁর খেলা?
মর্গ্যান: এখনও ওর খেলা সামনে থেকে দেখিনি। তবে, মিনার্ভার জার্সিতে এই মরসুমে দারুন খেলছে ও। ওর কিছু খেলা আমি দেখেছি ইউটিউবে। ও এমন এক জন প্লেয়ার যাঁকে নিয়ে বিপক্ষকে আলাদা পরিকল্পনা রাখতে হয়।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতে কি ফের এক বার ইস্টবেঙ্গলের হট সিটে দেখা যাবে আপনাকে?
মর্গ্যান: এখনই বলতে পারছি না। সবই সময়ের ব্যাপার। যদি ফের সুযোগ পাই তা হলে নিশ্চয়ই দেখতে পারেন।
প্রশ্ন: ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কিছু বলতে চান?
মর্গ্যান: যে সমর্থন লাল-হলুদ সমর্থকরা আমায় দিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
প্রশ্ন: চতুর্থ সংস্করণেই সমর্থকদের মধ্যে থেকে আইএসএলের ক্রেজ উধাও হয়ে গিয়েছে। আইএসএল কি জৌলুস হারাচ্ছে?
মর্গ্যান: সমালোচনা করা সব সময়ই সহজ। আমি মনে করি আইএসএলের ফলে উপকৃত হচ্ছে জাতীয় দলই। কারণ বড় বড় ফুটবলারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে ভারতীয় ফুটবলাররা। তা ছাড়া আইএসএলে যাঁরা কোচিং করাচ্ছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতাও প্রচুর।
প্রশ্ন: ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যত্ কী?
মর্গ্যান: আইএমজি, এআইএফএফ এবং অন্য সংস্থা যারা ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত, তাদের একসঙ্গে বসে ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করতে হবে। আমি জানি অনেক প্রতিকূলতা আসবে, কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি তাতে লাভ হবে ভারতীয় ফুটবলেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy