Ajit Agarkar and Fatima Ghadially are spending a romantic and blissful married life dgtl
cricket
জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার আগে থেকেই প্রেম, বাধা পেরিয়ে ফতিমাকে বিয়ে করেন আগরকর
জাতীয় দলের দরজা আগরকরের সামনে খুলে যায় ১৯৯৮ সালে। সে বছর এপ্রিল মাসে তিনি প্রথম ওয়ান ডে-তে সুযোগ পান অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। টেস্টে অভিষেক সে বছরই অক্টোবরে, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ১৬:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
আলাপ হয়েছিল এক বন্ধুর মাধ্যমে। সেখান থেকেই প্রেম। সব বাধা পেরিয়েই প্রেমিকা অন্য ধর্মাবলম্বী তরুণী ফতিমা ঘড়িয়ালিকে বিয়ে করেছিলেন অজিত আগরকর। জীবনের মসৃণ এবং বন্ধুর দুই সময়েই আগরকরের পাশে ছিলেন তাঁর অর্ধাঙ্গিনী।
০২১৮
ফতিমার ভাই মাজহারও ছিলেন ক্রিকেটার। তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ক্রিকেটের সূত্রে আগরকর এবং মাজহার বন্ধু ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে আগরকরের খেলা দেখতে আসতেন মাজহার। মাঝে মাঝে ভাইয়ের সঙ্গী হতেন ফতিমাও।
০৩১৮
মাজহার ও আর এক ক্রিকেটার রোহন গাওস্করের সূত্রে আলাপ হয়েছিল আগরকর এবং ফতিমার। সেটা নয়ের দশকের শেষের দিকে। তখনও আগরকর সুযোগ পাননি জাতীয় দলে। প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটার আগরকরের প্রেমে পড়লেন ফতিমা। অন্য দিকে ফতিমায় মুগ্ধ আগরকরও।
০৪১৮
আগরকরের স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। তবে ছোট থেকে তিনি মন দিয়েছিলেন ব্যাটিংয়ে। খেলার গতি বদলে যায় কৈশোরে, রমাকান্ত আচরেকরের প্রশিক্ষণে। দ্রোণাচার্যের চোখ বুঝেছিল শিষ্যের বিশেষত্ব লুকিয়ে আছে বোলিংয়ে। তাঁর কথাতেই ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি আগরকর মন দেন পেস বোলিংয়ে।
০৫১৮
আচরেকরের আর এক বিশ্বসেরা শিষ্য তেন্ডুলকরের মতো আগরকরও স্কুল পরিবর্তন করে ভর্তি হয়েছিলেন সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরে। তবে স্কুল স্তরেও ঝোড়ো ব্যাটিং বজায় রেখেছিলেন আগরকর। অনূর্ধ্ব ১৫ এবং অনূর্ধ্ব ১৯ স্তরে লাগাতার বড় রান আসতে থাকে তাঁর ব্যাট থেকে।
০৬১৮
সে সময় কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে শুধু বোলার বা শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে বম্বে (এখন মুম্বই) দলে সুযোগ পাওয়া ছিল শক্ত। তাই আগরকরকে অলরাউন্ডার হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন আচরেকর। কপিল দেব, ইয়ান বোথাম, মাইকেল হোল্ডিং, অ্যালান ডোনাল্ডের মতো ক্রিকেটারকে আদর্শ করে নিজেকে তৈরি করেন আগরকর।
০৭১৮
জাতীয় দলের দরজা আগরকরের সামনে খুলে যায় ১৯৯৮ সালে। সে বছর এপ্রিল মাসে তিনি প্রথম ওয়ান ডে-তে সুযোগ পান অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। টেস্টে অভিষেক সে বছরই অক্টোবরে, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে।
০৮১৮
অন্যান্য পেসারদের মতো শারীরিক উচ্চতা না থাকলেও ফাস্ট বোলিংয়ে সমস্যা হয়নি আগরকরের। ৯০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিবেগেও বোলিং করেছেন তিনি। ওয়ান ডে-তে তিনি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
০৯১৮
১৯১ ওয়ান ডে-তে আগরকরের মোট উইকেট ২৮৮। সেরা গড় ৪২ রানে ৬ উইকেট। মোট রান করেছেন ১২৬৯। সর্বোচ্চ ৯৫। ২৬ টেস্টে উইকেট পেয়েছেন ৫৮টি। সেরা গড় ৪১ রানে ৬ উইকেট। মোট রান ৫৭১। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৯।
১০১৮
জন রাইটের আমলে আগরকরের উত্থান পিঞ্চ হিটার হিসেবে। এই সময়ে তাঁর কিছু ঝোড়ো ইনিংসের মধ্যে অন্যতম ছিল ২০০০ সালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। ২১ বলে ওয়ান ডে-তে বিশ্বে দ্রুততম ৫০ রানের পাশাপাশি তিনি সেই ম্যাচে ৩ উইকেটও পান।
১১১৮
আগরকর সেই মুষ্টিমেয় ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম, যাঁদের লর্ডসের মাটিতে শতরানের রেকর্ড আছে। ২০০২ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১০৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
১২১৮
ডেনিস লিলির রেকর্ড ভেঙে আগরকর ওয়ানডে-তে দ্রুততম ৫০ উইকেট নেন। মাত্র ২৩টি ওয়ান ডে-তে তিনি ৫০ উইকেট পান। টেস্টে দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ উইকেট এবং ১০০০ রান যোগ হয় তাঁর নামের পাশে। পরে শ্রীলঙ্কার অজন্তা মেন্ডিস ১৯ টি ওয়ানডে ম্য়াচে ৫০ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব অর্জন করেন।
১৩১৮
আগরকরের নামে রয়েছে একটি লজ্জার রেকর্ডও। ১৯৯৯-২০০০ মরসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে পর পর ৭ ম্যাচে তিনি শূন্য রানে আউট হন। এর পর তাঁর ক্রিকেটীয় মহলে তাঁর পরিচয় হয়ে গিয়েছিল ‘বম্বে ডাক’।
১৪১৮
আইপিএল-এ তিনি খেলেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং দিল্লি ডেয়ারডেভিলস-এর হয়ে। ২০১৩ সালে তাঁর অধিনায়কত্বে ৪০তম বার রঞ্জি ট্রফি জয়ী হয় মুম্বই।
১৫১৮
বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঝলসে উঠলেও ফর্মের ধারাবাহিকতার অভাবে ব্যাহত হয়েছে তাঁর কেরিয়ার। ২০১৩ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। এখন তাঁকে দেখা যায় ক্রিকেট অ্যানালিস্টের ভূমিকাতেও।
১৬১৮
জীবনের সব ওঠাপড়ায় তাঁর পাশে ছিলেন স্ত্রী ফতিমা। ৩ বছরের প্রেমপর্বের পরে ২০০২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বিয়ে করেছিলেন আগরকর।
১৭১৮
তাঁদের ঘরোয়া বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুধুমাত্র পরিজন এবং কাছের বন্ধুদের জন্য। পরে রাজকীয় পার্টির আয়োজন করেছিলেন আগরকর। পার্টিতে হাজির ছিলেন সস্ত্রীক সচিন তেন্ডুলকর-সহ টিম ইন্ডিয়ার তৎকালীন সদস্যরা।
১৮১৮
একমাত্র সন্তান রাজকে নিয়ে আগরকর এবং ফতিমার সংসার এখন ভরপুর। কাজ এবং পরিবারের মাঝে ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে ভালবাসেন অতীতের এই অলরাউন্ডার।