আমার জন্য ‘ফিল গুড’ ফ্যাক্টর একটা উদ্বুদ্ধকারী শক্তির মতো কাজ করে থাকে। চণ্ডীগড় আমার কাছে ভারতের সেরা শহরগুলোর মধ্যে একটা। রাস্তার দু’ধারে সবুজে সবুজ চোখের পক্ষে কী আরামদায়ক! আমি সর্বদা প্রশংসা করে এসেছি রাস্তার উপর বাড়ির প্রধান দরজা না করার আইডিয়াকে। বাড়ির লোকজনের নিরাপত্তার জন্য যেটা একটা দরকারি চিন্তা। ‘সিটি বিউটিফুল’-এর ইতিবাচক মনোভাব আর ধীর গতিকে আমি ভালবাসি। আমরা সাধারণত ম্যারিয়ট কিংবা তাজ-এ উঠি। দু’টো জায়গারই সার্ভিস খুব ভাল। তবে দু’টোর মধ্যে তাজ একটু বেশি নিরিবিলি বলে আমি ওখানে উঠতে একটু বেশি পছন্দ করি। যদিও আমাকে বলতেই হচ্ছে শেষ কয়েক বছরে চণ্ডীগড়ও ব্যস্ত শহর হয়ে উঠেছে। এ সব ছাড়াও আই এস বিন্দ্রা স্টেডিয়ামকেও আমি ভালবাসি।
উপরের ওই সব কিছু মিলেমিশে আমার মধ্যে এমন একটা পজিটিভ অনুভূতি আনে যেটা আমি ম্যাচে খুব বেশি বার সঙ্গে নিয়ে নামি না। মঙ্গলবারটা কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। মনোরম চণ্ডীগড়-ক্যানভাসের বাইরে আমাকে তাতিয়ে তুলেছিল নিজের দুই খুদে তুতোভাইয়ের উপস্থিতি— একাংশ আর আরহান। আমার কাছে ওরা স্রেফ এক বাণ্ডিল আনন্দ। ওদের মধ্যে বড়টা— একাংশ দিল্লির হয়ে খেলে। আর ছোটটা— আরহান আদ্যন্ত খেলা পাগল। আমি আর একাংশ হলাম প্লে স্টেশনের ফুটবলে ভয়ঙ্কর প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রথম কয়েকটা বছর আমি ধারাবাহিক জিততাম। কিন্তু ইদানীং ‘প্রবীণ’ আর বেশি পরিণত একাংশ স্কোরলাইনটা বরাবর করে ফেলেছে। আমি জাস্ট ম্যাচের রাশটা হাতে নিতে পারছি না। আমি খুব খারাপ ‘লুজার’ আর অনেক সময় সেটা আমার সঙ্গেই থেকে যায়।
তরুণ আরহানের সঙ্গে আবার খুব মজা়-টজা হয়। আমি জানি আমার উপস্থিতিকে ও ভয় পায় আর আমার সামনে কখনও স্বাভাবিক হতে পারে না। তবে শুনেছি বোলিং অ্যাকশন নকল করাটা ওর খুব প্রিয়। মর্নি মর্কেল আর সুনীল নারিনকে সত্যিই দারুণ নকল করে। কিন্তু আমার সামনে করে দেখাতে ভীষণ লজ্জা পায় ও। ও জানে না, এক বার যখন ওই রকম বোলিং অ্যাকশন নকল করছিল, আমি পর্দার আড়াল থেকে লুকিয়ে পুরোটা দেখেছি। আলা! সাউথ আফ্রিকান দৈত্যের তিন ফুট দশ ইঞ্চির সংস্করণ, আমার ছোট্ট ভাইটি রান আপের মাথায় গিয়ে মিস্টার মর্কেলের মতোই এক পাক ঘুরে খুদে খুদে স্টেপেও ও রকম লাফাতে লাফাতে দৌড়ে বল করল। ওহ, কী দুষ্টমিষ্টিই না!
আরহানও নিশ্চয়ই প্রচুর কেকেআর সমর্থকের মতোই পঞ্জাবের বিরুদ্ধে মর্কেলের বোলিং পারফরম্যান্সে গর্বিত হবে। পঞ্জাব ব্যাটসম্যানদের যে ১১টা ডট বল করেছে মর্কেল সেগুলো সোনা। ৬.৭৫ ইকনমিটা শীর্ষস্তরের ক্রিকেটে ওর অভিজ্ঞতারই প্রমাণ দিচ্ছে আরও বেশি করে। আমি আরও এক বার মনে করছি, আমাদের জোরে বোলাররা এই ম্যাচে টিমের জয়ের ভিত গড়েছে। আরহানের আর এক ফেভারিট সুনীল উপর্যুপরি দ্বিতীয় গ্রেট ম্যাচ খেলল। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ও আউট করার আগে পকেটে ভরে নিয়েছিল। নারিনের চার ওভারে ২২ রান দেওয়াটা আদৌ বেশি দেখাবে না যখন কেউ ভাববে যে, এটা নতুন অ্যাকশনে বল করা একজন স্পিনারের মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ।
এ বার মঙ্গলবারের ম্যাচের আমার ফেভারিট মুহূর্ত: প্রথমটা যখন মুরলী বিজয়ের ডিফেন্স ভেদ করল পীযূষ চাওলা। বিজয় কেবল ভাল শটই মারছিল তাই নয়, নিজের ব্যাটিংকে প্রায় চ্যালেঞ্জহীন করে রেখেছিল। চাওলা যে গুগলিটায় বিজয়কে বোল্ড করল সেটা একটা মুক্ত। অন্য ফেভারিট মুহূর্তটা মোহিত শর্মাকে মারা রবিন উথাপ্পার পুল শটটা। আমি রাজি আছি প্রচুর টাকা খরচ করে রবিনের ওই শট দেখতে যেতে।
সব মিলিয়ে আরও একটা ভাল কাজের দিন কাটল। বাড়ি ফিরছি আর আগামিকাল পর্দার আড়ালে কী ভাবে পজিশন নেব তার ফন্দি আঁটছি। আমি তো শুনেছি আরহান নাকি দারুণ নকল করে রবিনকেও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy