ফাইনালের পথে। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলীয় ওপেনে সেরেনা ও শারাপোভা। ছবি: গেটি ইমেজেস
কাগজে-কলমে স্বপ্নের ফাইনাল। নির্মম পেশাদারি বিশ্লেষণে হয়তো আরও একটা একপেশে ম্যাচ! অস্ট্রেলীয় ওপেনে মেয়েদের ফাইনাল সেরেনা উইলিয়ামস বনাম মারিয়া শারাপোভা লাইন-আপে দাঁড়ানোয় এখন টেনিসমহলের যা গণ-ব্যাখ্যা।
টেনিসবিশ্বের এক বনাম দুইয়ের মেগা ফাইনাল। অথচ দু’জনের হেড-টু হেডে টেনিসের গ্ল্যামার গার্লের বিরুদ্ধে পেশিবহুল কৃষ্ণাঙ্গী মার্কিন কন্যা এগিয়ে ১৬-২। শারাপোভার দু’টোমাত্র জয়ও এগারো বছর আগে। ২০০৪-এ উপর্যুপরি উইম্বলডন ফাইনাল আর লস অ্যাঞ্জেলিসে ডব্লিউটিএ ট্যুর চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাবি যুদ্ধে। যা নিয়ে সেই সময় সতেরো বছরের টিনএজার রুশ লিখেছিলেন, “সেরেনাকে টানা দু’বার হারানোর মহানন্দে স্প্যাগো-এ একটা দুর্দান্ত ডিনার সারলাম। তবে ডেজার্ট খাওয়ার সময় ছিল না। এলএ-র জঘন্য ট্র্যাফিক জ্যামে টুর্নামেন্টের প্লেয়ার্স-বাস অনেক দেরিতে টিম হোটেলে পৌঁছনোয়। আমার ফেরার ফ্লাইটের বেশি দেরি নেই আর!”
আপাতত শনিবারের মেলবোর্ন পার্কে টেনিসমহল দেখতে আগ্রহী, সেরেনাকে দুইয়ের পর তৃতীয়বার হারাতে শারাপোভার আর কত দেরি? এ দিন দুই মহাতারকাই সেমিফাইনাল যে ভাবে বিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে জিতেছেন, তাতে ফাইনাল এককথায় পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। ম্যাডিসন কিসকে ম্যাচ শেষে সেরেনা “ও-ই মার্কিন টেনিসের যোগ্য পতাকাবাহী,” সার্টিফিকেট দিলেও কোর্টে ৭-৬ (৭-৫), ৬-২ চুরমার করে আগের রাউন্ডে উনিশের টিনএজারের কাছে নিজের দিদির হারের মধুর বদলা নেন। অন্য সেমিফাইনালে মাত্র পাঁচটা গেম খরচা করে মাকারোভাকে ধ্বংস করেন শারাপোভা। ৬-৩, ৬-২। সেরেনা যদি সর্দি-জ্বরের (এ দিন ম্যাচের মতোই কোর্টের ভেতর টিভি সাক্ষাৎকারের সময়েও তাঁকে কাশতে শোনা গেছে) সমস্যাকে পাত্তা না দিয়ে ফাইনালে ওঠেন, তা হলে শারাপোভা আবার দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ালিফায়ার পানোভার বিরুদ্ধে তিনটে ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে কোনওক্রমে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার পর থেকে এ যাবত চার বাছাই প্রতিদ্বন্দ্বীকে সব মিলিয়ে মাত্র ১৫টা গেম পেতে দিয়েছেন। নিজে ফাইনালে উঠেছেন টানা চারটে রাউন্ড স্ট্রেট সেটে জিতে।
কিন্তু গত এগারো বছর ধরে সেরেনার সামনে পড়লেই টেনিস সুন্দরীকে এমন বিবর্ণ দেখাচ্ছে কেন? রড লেভার এরিনায় নিজের ছবিটাকে উজ্জ্বল করে তুলতে মাশার গেমপ্ল্যান কী? শারাপোভা বলছেন, “সেরেনার একটা বিশেষ ক্ষমতা, ও নিজের খেলার দাপটে আপনাকে আপনার স্বাভাবিক খেলার বদলে কিছু অস্বাভাবিক শট মারতে বাধ্য করবে। এবং আপনি যতক্ষণে আবিষ্কার করবেন, আপনি অন্য রকম খেলছেন, ততক্ষণে ম্যাচ আপনার হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। এ বার সেটা হতে না দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করব। তার জন্য কিছু বিশেষ গেমপ্ল্যান আছে আমার। তবে শনিবার সন্ধের আগে পর্যন্ত সেটা পর্দার পিছনেই থাক!” আর যে গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জিতলেই দুই মার্কিন কিংবদন্তি ক্রিস এভার্ট আর মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার আঠারো টপকে সেরেনা উনিশ নম্বর মেজরে পৌঁছে ইতিহাস গড়বেন, সেই চূড়ান্ত লড়াই নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “আমার থিওরি হল, এখন দু’টো দিন বিশ্রাম করো আর পরের ম্যাচটা যতটা পারো ভাল খেলো!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy