এই টি-শার্টই এখন ফেডেরারের মেজাজের প্রতীক।
তেত্রিশেও নিজের চেয়ে আট-দশ-বারো বছরের মহাতারকা জুনিয়রদের ‘হুমকি’ দিচ্ছেন তিনি আরও একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম পরের দু’সপ্তাহে জিতে ফেলার!
মঙ্গলবারই প্রথম রাউন্ডে যাঁকে সামলাবেন সেই অস্ট্রেলীয় মারিনকো মাটোসেভিচ কোর্টে বদমেজাজের জন্যই বেশি পরিচিত! গত সপ্তাহেই চেয়ার আম্পায়ারকে গালি দেওয়ার সঙ্গে কোর্টের ধারে থাকা ক্যামেরায় লাথিও কষান। এহেন প্রতিপক্ষকেও চিরাচরিত অভ্যাসবশত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার পর তিনি বলছেন, “ওর ভয়ঙ্কর কিছু শটের কথা নিশ্চয়ই মাথায় রাখব, তবে ওর সেই ভয়ঙ্করতা আমার র্যাকেটেই নিয়ন্ত্রিত হবে।”
প্র্যাকটিস কোর্টে তাঁকে দেখা যাচ্ছে, হিটিং পার্টনারের মজা করে দেওয়া টিটিকিরি উপভোগ করে তাঁকে পাল্টা আওয়াজ দিতে! তাঁর সঙ্গে অনুশীলনে চূড়ান্ত দুই গেম জেতার বাজিতে হেরে গিয়ে কুড়ি বার ডন-বৈঠক পর্যন্ত দিতেও পিছপা নন! হিটিং পার্টনার কিন্তু মোটেই কোনও এলেবেলে নন গ্রিগর দিমিত্রভ!
এবং তিনি রজার ফেডেরার তেত্রিশ বছর বয়সেও তাঁর গেঞ্জির বুকে ‘বেটারার’ লিখে নিজের পনেরোতম যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন! ফিট, ফুরফুরে, খেলার মজায় খেলাএ রকম মেজাজে!
যা দেখে ক্রিস এভার্ট বলছেন, “কোনও ব্যাপারেই কিছুই হয়নি গোছের এমনই টেম্পারামেন্ট ওর যে, মানসিক ভাবে কখনও ফুরিয়ে যায় না। হার, ব্যর্থতাকেও পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারে। আমি যখন কোনও ম্যাচ হারতাম, হোটেলের ঘরে ফিরে গুম হয়ে সেটা হজমের চেষ্টা করতাম। ফেডেরার কোনও ম্যাচ হেরে গেলে সেই ব্যর্থতা পরিবার, সার্পোট স্টাফ সবাইকে নিয়ে ডিনার পার্টি করে স্রেফ ভুলে যায়!”
এই ফেডেরারকে দেখে ফ্লাশিং মেডো ভাবতে শুরু করেছে, আঠারো নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামটা তিনি এখান থেকেই তুলবেন। তাঁর সম্পর্কে নিউইয়র্ক মিডিয়া বলে দিচ্ছে, ‘টেনিসের কাল রিপকেন’! মেজর লিগ বেসবলের প্রবাদপ্রতিম, টানা ২১ মরসুম খেলা, যার মধ্যে ১৯ মরসুমই অলস্টার টিমে নির্বাচিত, যাঁর টানা ২৬৩২ ম্যাচ খেলার রেকর্ড এমএলবি-তে ৫৬ বছর ধরে অটুট! ফেডেরারও কি এহেন তুলনায় খুশি? “এই মুহূর্তে আমি সেই কন্ডিশনে, যে রকম কন্ডিশনে এক বছর আগে থাকতে চেয়েছিলাম। গত বছর এই সময়টা প্রচণ্ড খারাপ যাওয়ার কারণ শারীরিক। স্কিল আমার তখন যা ছিল, এখনও তাই আছে। কিন্তু শারীরিক ভাবে আমি এ বার একশো দশ ভাগ ফিট। নিজেকে আরও ভাল প্লেয়ার মনে হচ্ছে,” বলেছেন এ বছর উইম্বলডন-সহ আটটা টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা ফেডেরার।
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের শেষ প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট সিনসিনাটিতে চ্যাম্পিয়ন রজার শুধু ২০১২-র পর প্রথম মাস্টার্স খেতাব পেয়েছেন তাই নয়, মাস্টার্সে ৩০০তম ম্যাচ জেতার নজিরও গড়েন। যার পরে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে দ্বিতীয় বাছাই সুইসের দিকে বেশি করে তাকাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আর ফেডেরার তাকাচ্ছেন কোচ স্তেফান এডবার্গের দিকে। “সাপোর্ট স্টাফের সঙ্গে পরিবার নিয়েও সার্কিটে গত কয়েক বছর ধরেই ঘুরছি। গত কয়েক মাস তাতেও একটা বাড়তি উদ্দীপনা পাচ্ছি। এডবার্গ এখনও আমার আইডল। ওর সঙ্গে কফি খেতে খেতে এখনও ভাবি, আমার উল্টো দিকে এডবার্গ বসে আছে! গত কালও হোটেলের ঘরে ওর দিকে বিস্ময়ের সঙ্গে তাকিয়ে ছিলাম। ওকে বলিনি, কিন্তু অনুভূতিটা সে রকমই হচ্ছিল!”
সোজা কথা, ‘একশো দশ ভাগ ফিটনেস’-এর সঙ্গে ‘আইডল’ স্তেফান এডবার্গ-ও ফেডেরারের ‘বেটারার’ হওয়ার পিছনে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy