ফের মাথা হেঁট আর্মান্দোর।
সালগাওকর ৩ (ডুহু, ডাফি, মাসকারানাস)
ইস্টবেঙ্গল ১ (ডুডু)
পাড়ার মাঠই এখন বধ্যভূমি আর্মান্দো কোলাসোর!
মারগাও মাঠে খেলতে নামলেই হারছে অথবা ড্র করছে ইস্টবেঙ্গল। গত ছ’টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে এই হল। শনিবারও সেই পয়েন্ট খোয়ানোর ট্র্যাডিশনই বজায় থাকল। তবে এ দিন ডেরেক পেরিরার দলের কাছে লাল-হলুদ হারল কার্যত আত্মসমর্পণ করে!
‘অসুস্থতার’ মধ্যে অনুশীলনে নামছেন। রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নির্দেশ দিচ্ছেন চিত্কার করে। কিন্তু সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাইছেন না লাল-হলুদের গোয়ান কোচ। এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ দিন ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে আর্মান্দো পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সহকারী সুজিত চক্রবর্তীকে। সুজিত টিমের তিন গোল হজম করা দেখে এতটাই অস্বস্তিতে যে বলে দিয়েছেন, “আমরা হতাশ। ভেবেছিলাম অন্তত একটা পয়েন্ট পাব। তবে কয়েক দিন পরে ডার্বি আছে। সেখানে ভাল খেলার চেষ্টা করব।” কিন্তু আদতে বুধবার ডার্বিটাই যে হচ্ছে না। ডার্বি হলে কী ফল হত, তা ভেবে রীতিমতো চিন্তিত কর্তা-সমর্থকরা। তাঁদের গলায় হতাশা।
এ দিনের ম্যাচটা ছিল সেই অর্থে দুই গোয়ান কোচের মগজাস্ত্রের যুদ্ধ। যে যুদ্ধে পেরিরা কার্যত ভোকাট্টা করে দিয়েছেন আর্মান্দোকে।
অঙ্ক কষে লাল-হলুদের মাঝমাঠকে মুঠোয় পুরে নিয়েছিল সালগাওকর। জাল ছিঁড়ে ইস্টবেঙ্গল বেরোনোর রাস্তাই পেল না। পারবেই বা কী করে? কোচের কোনও স্ট্র্যাটেজিই ছিল না! র্যান্টি-ডুডুদের মধ্যেও ছিল না ম্যাচ জেতার তাগিদ। যে ভাবে সুসাক-দীপক-রাজুকে বোকা বানিয়ে ডুহু-ডাফিরা গোল করে গেলেন তাতে প্রশ্ন উঠতেই পারে টিমটার অনুশীলন ঠিকমতো হয় তো! মরসুমের ষাট শতাংশ ম্যাচ খেলার পরও কেন সমঝোতা নেই টিমে? মাঝমাঠ কেন এত অগোছালো? কেন টিমটার কোনও উইং প্লে নেই?
মার্কোস ফালোপাকে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা কোচের পদ থেকে সরিয়ে দেন ফুটবলারদের নাম মনে রাখতে পারতেন না অভিযোগ তুলে। সে রকমই আর্মান্দোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই পারে অসুস্থতা আর টিম ফেলে রেখে বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নেওয়ার তাগিদে স্ট্র্যাটেজিটাই ঠিকঠাক হচ্ছে না। ভুগছে পুরো টিম। যেমন এ দিন হল। অ্যাটাকিং থার্ড দিয়ে বা পেনিট্রেটিভ জোনে ডুহু-ডাফিদের ধ্বংসাত্মক হতে দেখেও গুরবিন্দারকে বসিয়ে রাখলেন কোচ। সুসাককে বদলে যখন নামালেন, তখন বিপক্ষের জয় নিশ্চিত। ক্লিফটন ডায়াস, লোকাস ল্যামেরেদের সামনে পড়ে বারবার দীপক মণ্ডল ব্যর্থ হচ্ছেন দেখেও তাঁকে বদলাননি আর্মান্দো। সুখবিন্দর সিংহের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। মাঝমাঠে মেহতাব ছিলেন না। খাবরা, সেন্ট্রাল মিডিও হিসাবে নেমে জঘন্য খেললেন। র্যান্টির অবস্থা আরও খারাপ। গোল করতেই পারছেন না।
এ দিন অবশ্য ম্যাচের আগেই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন র্যান্টি। ভোরে খবর পান মাতৃবিয়োগ হয়েছে। কান্নাকাটি করছিলেন। ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহা আর ডুডু তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে মাঠে নামান। র্যান্টি চিকিত্সার জন্য সামনের সপ্তাহেই কলকাতা নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন মাকে। সে জন্যই শোকটা ছিল বেশি। র্যান্টি অবশ্য দেশে যাচ্ছেন না। থেকে যাচ্ছেন। অন্তত সে রকমই জানাচ্ছেন অ্যালভিটো।
ইস্টবেঙ্গল: শুভাশিস, দীপক, সুসাক (গুরবিন্দর), রাজু, সৌমিক, সুখবিন্দার (সুবোধ), খাবরা, জোয়াকিম, অবিনাশ (রফি), ডুডু, র্যান্টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy