Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Women News

এক মেয়ে আইএস ডেরায় মরতে চাইতেন, অন্য জন গিয়েছেন মারতে

তিন বছর আগে ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালে তাঁকে অপহরণ করে মোসুলে নিয়ে গিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। সেই বছরই নভেম্বর মাসে পালিয়ে আসেন মুরাদ।

নাদিয়া মুরাদ (বাঁ দিকে) ও অ্যানা টাইগার ম্যান (ডান দিকে)

নাদিয়া মুরাদ (বাঁ দিকে) ও অ্যানা টাইগার ম্যান (ডান দিকে)

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ১৭:৫৮
Share: Save:

কেউ গ্ল্যামারের র‌্যাম্প ছেড়ে হাতে তুলে নিয়েছেন বন্দুক, কেউ চালিয়ে যাচ্ছেন আইনি লড়াই। লক্ষ্য একটাই। গুঁড়িয়ে দিতে হবে ইসলামিক স্টেটকে। একজন সরাসরি ভুক্তভোগী, অন্য জন সুদূর কানাডায় বসে শুধুই আইএস বিরোধী। ইয়াজিদি বন্দি আর কানাডার মডেল। এই দু’জনকে মিলিয়ে দিয়েছে লড়াই। খতম করতে হবে আইএস।

‘‘কোজোর স্কুলে জঙ্গিরা যখন পুরুষ আর মহিলাদের আলাদা আলাদা করে দাঁড় করিয়েছিল, ভাবছিলাম আমাদেরও যেন পুরুষদের মতোই মেরে ফেলা হয়। প্রতি দিন সিরিয়ান, ইরাকি, তিউনিশিয়ান, ইউরোপিয়ানদের হাতে বিক্রি, ধর্ষিতা হওয়ার থেকে প্রাণে মরে যাওয়া অনেক ভাল।’’ কথাগুলো বলার সময়ও আতঙ্কে গলা কাঁপছিল আইএস-এর ডেরা থেকে পালিয়ে আসা নাদিয়া মুরাদের।

তিন বছর আগে ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালে তাঁকে অপহরণ করে মোসুলে নিয়ে গিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। সেই বছরই নভেম্বর মাসে পালিয়ে আসেন মুরাদ। ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে নিজের কাহিনি শোনান মুরাদ। এর পর থেকেই নিজের গোষ্ঠী ইয়াজিদির মহিলা ও উদ্বাস্তুদের জন্য আইনি লড়াই লড়ছেন ২৪ বছরের মুরাদ। পেয়েছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের শাকারভ পুরস্কারও। তাঁর সঙ্গেই এই পুরস্কার ভাগ করে নিয়েছেন আরেক ইয়াজিদি মহিলা লামিয়া আজি বাশার।

মুরাদের সঙ্গেই অপহৃত হয়েছিলেন ১৯ বছরের বাশার। যৌনদাসীর জীবন থেকে পালিয়ে আসার সময় ল্যান্ডমাইন ফেটে এক চোখ নষ্ট হয়ে যায়। বাশার বা মুরাদ পালিয়ে এলেও এখনও আইএস-এর হাতে বন্দি ৩,০০০ মহিলা।

আরও পড়ুন: মিসড কল থেকেই জীবনসঙ্গী খুঁজে পেল অ্যাসিডে পোড়া মুখ

আর এই সব বন্দি মেয়েদের উদ্ধারের লক্ষ্যে আর এক মেয়ে বন্দুক হাতে নেমেছেন গ্ল্যামার জগতের হাতছানি ভুলে। অ্যানা টাইগার বি-ম্যান। কানাডিয়ান এই মডেল যোগ দিয়েছেন কুর্দিশ অল-ফিমেল মিলিটারি ইউনিটে। বললেন, ‘‘মডেল থাকাকালীনই আমি ভিতর থেকে অনুভব করছিলাম কিছু একটা করতে হবে। তবে লড়াইটা শুধু আইএস-এর বিরুদ্ধে নয়। লড়াইটা মহিলাদের অধিকার, সম্মানের জন্য। আইএস নির্মূল হয়ে যাওয়ার পরও এই লড়াই চলতে থাকবে। আইএস ওঁদের যৌনদাসী করে রেখেছে। জোর করে বিয়ে করছে। সন্তান উত্পাদনের যন্ত্র ছাড়া মেয়েরা কিছুই নয় ওদের কাছে। মডেলিংও মাঝে মাঝে আমার খুব সেক্সিস্ট মনে হতো। জানতাম আমি যা করতে চাইছি তা কানাডায় বসে হবে না। আমি অস্ত্রচালনা করতে আগেই জানতাম। শিকারে গিয়েছি অনেক বার। কিন্তু মানুষকে তাক করে গুলি চালাতে হাত কাঁপতো। নিজেকে বুঝিয়েছি, ওরা মানুষ নয়। আমি মধ্য এশিয়ার মানুষদের বাঁচাতে চাই তাই এখানে এসেছি। আমি নিজের মধ্যে সেই পরিবর্তনটা এনেছি যা পৃথিবীতে দেখতে চেয়েছি। জানি আমার মৃত্যু হতে পারে এ ভাবে। কিন্তু বয়স হয়ে গিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে থাকার থেকে এ রকম কিছুর জন্য প্রাণ দেওয়া আমার কাছে অনেক গ্রহণযোগ্য।’’

অন্য বিষয়গুলি:

IS Islamic State Nadia Murad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE