প্রায় ৪ লক্ষ কিলোমিটার দূরে থাকা চাঁদের মাটি প্রথম আনা হয়েছিল ৫ দশক আগে। আর ৩ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকা কোনও গ্রহাণু (‘অ্যাস্টারয়েড’)-র মাটি পৃথিবীতে পৌঁছল তার ৫১ বছর পর। ভারতীয় সময়ে শনিবার মধ্যরাত পেরনোর কিছু পরেই, হায়াবুসা ২ মহাকাশযান নেমেছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায়।
মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’)-এর সদস্য গ্রহাণু ‘রিউগু’-কে খুঁড়ে তার মাটি উপড়ে নিয়ে আসল ‘জাপান স্পেস এজেন্সি (জাক্সা)’-র মহাকাশযান ‘হায়াবুসা-২’। এই প্রথম কোনও গ্রহাণুর মাটি তুলে আনল সভ্যতা।
বিশ্বে প্রথম এই কৃতিত্বের জন্য জাপানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে নাসা। হায়াবুসা-২-এর এই গ্রহাণু- বিজয়কে নাসা বলেছে ‘একটি ঐতিহাসিক ঘটনা’। গত ২০ অক্টোবরই আরও একটি গ্রহাণু ‘বেন্নু’কে খুঁড়েও তার মাটি উপড়ে নিতে সফল হয়েছে নাসার পাঠানো মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’। যার পৃথিবীতে ফেরার কথা ২০২৩-এর গোড়ায়।

গ্রহাণু ‘রিউগু’।
পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সম্পদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে চাঁদে ও গ্রহাণুতে খনিজের সন্ধান জরুরি হয়ে পড়েছে সভ্যতার। গ্রহাণুতে হায়াবুসা-২ এবং ওসিরিস-রেক্স-এর পদক্ষেপ তারই মাইলস্টোন হয়ে থাকল।
কোনও গ্রহ বা উপগ্রহে নামার চেয়ে অনেক বেশি জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ কোনও গ্রহাণুতে নামা। কারণ, তার পিঠ অসম্ভব রকমের এবড়োখেবড়ো। আর তার পিঠও ততটা লম্বা, চওড়া নয়। তাই কোনও গ্রহাণুতে পা ছোঁয়ানোর বিপদ অনেক বেশি। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে মহাকাশযান। আর সেই গ্রহাণুর খননকাজ আরও জটিল। কারণ, খোঁড়ার জন্য সমতল জায়গা খুবই কম মেলে গ্রহাণুতে। যার আশপাশে খাড়াই পাহাড়। সেই পাহাড়ের খাঁদে ধাক্কা লেগে ভেঙে চুরমার হয়ে যেতে পারে মহাকাশযান।
Today marks a historic event as precious samples from asteroid Ryugu have been brought to Earth by @JAXA_en’s Hayabusa2 mission. We congratulate Japan on being the 1st nation to carry out a successful asteroid retrieval mission, twice! https://t.co/MhVwJA1w4z pic.twitter.com/91oMKtAii4
— Thomas Zurbuchen (@Dr_ThomasZ) December 5, 2020
জাপানের হায়াবুসা-২ এবং নাসার ওসিরিস-রেক্স-এর কৃতিত্ব এটাই, কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই তারা নামতে পেরেছে গ্রহাণুতে। তার বুকে খননকাজও সারতে পেরেছে নিরাপদে। হায়াবুসা-২ এর নাম ইতিহাসে থেকে গেল সভ্যতা প্রথম এই জাপানি মহাকাশযানের দৌলতেই গ্রহাণুকে খুঁড়ে উপড়ে আনা মাটি পৃথিবীতে আনতে পারল গবেষণার জন্য।
যা আগামী দিনে কোনও গ্রহাণুতে কী কী খনিজ পদার্থ রয়েছে, সেগুলি আমাদের জন্য কতটা জরুরি তা বুঝতে সাহায্য করবে।