সারা ‘স্মুর’ চকোলেট সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছেন বিশেষ কিছু চকোলেট। ছবি- সংগৃহীত
প্রথম বার তিনি মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার মতো জনপ্রিয় রান্নার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ২০১৪ সালে। সে বারই তিনি আলু-ফুলকপির তরকারি রেঁধে জিতে নিয়েছিলেন ৫০ হাজারেরও বেশি ভারতীয়র মন। রাতারাতি তাঁরা ইনস্টাগ্রামে ফলো করা শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা সারা টোডকে। ২০২২ সালে তিনি ফের এক বার অংশ নেন এই প্রতিযোগিতায়। এ বার তিনি পৌঁছান চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত। এ বারও তিনি রেঁধে খাইয়েছেন বহু ভারতীয় পদ। ভারতের সঙ্গে তাঁর কী যোগ? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
সারা বললেন, ‘‘আসলে আমার প্রাক্তন ছিলেন পঞ্জাবি। আমার যখন ছেলে হয়, তখন কয়েক বছর আমি ভারতে ছিলাম। রোজ বাড়িতে পঞ্জাবি খাবার খেতাম। সেই থেকেই আমার ভারতীয় খাবারের প্রতি দুর্বলতা তৈরি হয়। ভারতীয় রান্না নিয়ে আরও অনেক গবেষণা শুরু করি। আর চেষ্টা করি আপনাদের বিভিন্ন প্রদেশের রান্না শেখার।’’
সারার গবেষণার ধরন ঠিক কেমন? তিনি উত্তরে বললেন, ‘‘নামী-দামি রেস্তরাঁগুলোয় গিয়ে কোনও লাভ হয় না। আসল রান্না শিখতে গেলে রোজকার জীবনে মানুষ যা বাড়িতে খান, সেই খাবার খেতে হবে। তাই আমি বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে, সেখানকার মানুষদের সঙ্গে মিশে, তাঁদের ঘরে তৈরি খাবার খেয়ে শেখার চেষ্টা করি।’’
সারাকে মনে করিয়ে দেওয়া গেল যে, ভারতীয় খাবার বলে আদতে কিছু হয় না। এখানে একেক জায়গার খাবার একেক রকম। কাশ্মীরের খাবারের সঙ্গে চেন্নাইয়ের খাবারের মিল নেই। গুজরাতের খানার সঙ্গে ওড়িশার খানার কোনও মিল নেই। সারার ব্যক্তিগত ভাবে কোন খাবার পছন্দ? হেসে সারা বললেন, ‘‘এ তো বলা প্রায় অসম্ভব। তবে গোয়ান খাবারের প্রতি আমার বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে।’’
গোয়াতে এর মধ্যেই নিজস্ব রেস্তরাঁ খুলে ফেলেছেন সারা। তা ছাড়াও মুম্বইয়ে খুলেছেন তাঁর দ্বিতীয় রেস্তরাঁ। এবং খুব তাড়াতাড়ি তৃতীয় রেস্তরাঁও খোলার পরিকল্পনা রয়েছে সারার। তাই এখন মন দিয়েছেন সে দিকেই।
সম্প্রতি তিনি ‘স্মুর’ চকোলেট সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছেন বিশেষ কিছু চকোলেট। প্যারিসের ‘ল কর্ডন ব্লু’ থেকে রন্ধনশিল্প নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাই ফরাসি খাবারের প্রতিও তাঁর টান রয়েছে। ‘মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া’য় বার বার তিনি বলেছেন, ফরাসি আর ভারতীয় রান্নার মিশেল তৈরি করতে চান তিনি। কিন্তু এই দুই ধরনের রান্না কি মিলিয়ে দেওয়া সম্ভব? সারা বললেন, ‘‘শিল্পী হিসাবে আমার কাজই জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো জড়ো করে তা আমার রান্নায় ফুটিয়ে তোলা। আমি ফ্রান্সে দীর্ঘ দিন পড়াশোনা করি আর ভারতে আমার ছেলে জন্মের পর বেড়ে ওঠে। তাই দু’জায়গার সঙ্গেই আমার গভীর যোগ রয়েছে। চেষ্টা করি এই দুই কায়দায় রান্নাকে কোথাও মিলিয়ে দিতে।’’
কিন্তু ভারতীয় স্বাদ-মশলা সম্ভার তো অনেক। একেক মশলার স্বাদ একেক রকম। কোনওটা কড়া, কোনওটা হালকা। কোন মশলা নিয়ে রান্না করতে সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন সারা? ফরাসি রান্নায় তো সব স্বাদই কিঞ্চিৎ হালকা। কী করে মিলবে দুই ধরনের রান্না। সারা অবশ্য সব প্রশ্নের উত্তর এখনও জানেন না। তিনি স্বীকার করে নিলেন ভারতীয় মশলা নিয়ে তাঁর অনেক এখনও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি। সবে তিনি চিনছেন, বুঝছেন।
সারার ছেলে ফিনিক্সের বয়স এখন ১১। মায়ের হাতের সব রান্নাই তাঁর পছন্দের। তবে সবচেয়ে ভালবাসে ফুলকপির পরোটা আর ল্যাম্ব কারি খেতে। আর সারার কী পছন্দ?
অনেক কিছুই খেতে ভালবাসেন সারা। এক বার তিনি কলকাতায়ও এসেছিলেন। তিনি বললেন, ‘‘কলকাতার বিরিয়ানির স্বাদ এখনও ভুলতে পারিনি। বাঙালি রান্না এখনও শেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আপনাদের শহরে গিয়ে অনেক ভাল-মন্দ খেয়েছিলাম, সেটা মনে আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy