পোস্তর সঙ্গে বাঙালির প্রেম চিরন্তন। সেখানে ঘটি-বাঙালের কাজিয়া না করাই ভাল। ঘটি বাড়িতে যদি বিউলির ডালের সঙ্গে পোস্তর সঙ্গত হয়, তা হলে ও পারের পছন্দে আম-ডালের সঙ্গে ঝাল ঝাল পোস্ত মন্দ লাগে না। পোস্ত মানেই ঝরঝরে আলুপোস্ত বা আলু-পেঁয়াজ পোস্তর কথাই মনে আসে। গরমের দিনে আবার সজনে ডাঁটার পোস্ত, পটল পোস্তও খাসা। ঘটি বাড়িতে পোস্তর ঝোল অতি উপাদেয় খাদ্যতালিকাতেই পড়ে। পোস্তর বড়া মানে তো বিলাসিতা প্রায়! মা-ঠাকুরমাদের হাতে তৈরি পেল্লায় এক একটি পোস্তর বড়া এক সময়ে পাত আলো করে থাকত। সেই সঙ্গেই থাকত তেঁতুলের ক্বাথ দিয়ে পোস্তর বড়ার টক।
গরমের দিনে বাঙালির মেনুতে অনেক বদল আসে। তেলে-ঝালে ঝোলের জায়গায় টক ডাল, পাতলা মাছের ঝোল কিংবা শুক্তোই পাতে জায়গা করে দেয়। তেঁতুল দিয়ে মাছের টক, আম দিয়ে মাছের ঝোল এই সময়ে বেশ উপাদেয়, পেটও ঠান্ডা রাখে। তাই পোস্ত বড়ার টক গরমের দিনে মন্দ লাগবে না। বাংলার হারিয়ে যাওয়া রান্নার মধ্যে এটিও একটি। আগেকার দিনে মা-ঠাকুরমারা কী ভাবে এই পদটি রাঁধতেন, তার সহজ প্রণালী রইল।
পোস্ত বড়ার টক
উপকরণ
৩-৪ চা-চামচ পোস্ত
১টি বড় পেঁয়াজ কুচোনো
২টি কাঁচালঙ্কা কুচিয়ে নেওয়া
১টি শুকনো লঙ্কা
আধ চা-চামচ পাঁচফোড়ন
৪ চা-চামচ তেঁতুলের ক্বাথ
এক চিমটে হলুদ
স্বাদমতো নুন
৩ চামচ সর্ষের তেল
আরও পড়ুন:
প্রণালী
পোস্তদানা ভিজিয়ে রাখুন। তার পর অল্প নুন দিয়ে ভাল করে বেটে নিন। এ বার তাতে কাঁচালঙ্কা কুচি, পেঁয়াজকুচি মিশিয়ে অল্প ময়দা দিয়ে বড়ার আকারে গড়ে নিন। পোস্ত কতটা নেবেন, সেই অনুযায়ী বড়ার মাপ হবে।
কড়ায় সর্ষের তেল গরম করে বড়াগুলি লাল লাল করে ভেজে তুলুন। ওই তেলেই পাঁচফোড়ন ও শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। হালকা নেড়ে তাতে তেঁতুলের ক্বাথ দিয়ে এক কাপের মতো জল দিন। আঁচ কমিয়ে তাতে নুন, হলুদ, চিনি ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে ফোটান। ফুটে গেলে গ্যাস বন্ধ করে নামিয়ে নিন। এ বার তেঁতুলের ঝোলে পোস্তর বড়াগুলি চুবিয়ে দিয়ে ঢেকে রাখুন। গরম ভাতে পরিবেশন করুন।