Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

সুনীতিবাবুর প্রশ্নের ভুল ধরলেন ছাত্র

মাস্টারমশাই রাগলেন না। বরং সুকুমার সেনকে আলাপ করিয়ে দিলেন শহীদুল্লাহর সঙ্গে। অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়মাস্টারমশাই রাগলেন না। বরং সুকুমার সেনকে আলাপ করিয়ে দিলেন শহীদুল্লাহর সঙ্গে। অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। দ্বারভাঙ্গা বিল্ডিংয়ের পূর্ব দিকে ছোট্ট এক চিলতে ঘর। গায়ে পাড় দেওয়া শাল অনেকটা পইতের মতো করে জড়ানো। পরনে ধুতি, পাঞ্জাবি। পায়ে শুঁড়তোলা নাগরা জুতো। উনি ক্লাস নিতে এলেন। সংস্কৃত ভাষার ক্লাস। সে দিনের বিষয়, ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার পুনর্নির্মাণ। কী ভাবে, কোন বিবর্তনের পথ ধরে সেই নির্মাণ সম্ভব, তা সামনের সাত-আট জন ছাত্রকে বোঝাতে ব্ল্যাকবোর্ডে নাগাড়ে লিখে চলেছেন সেই অধ্যাপক। ছাত্ররা সকলেই বিলেত-ফেরত সেই অধ্যাপকের পাঠে মন্ত্রমুগ্ধ।

ক্লাস শেষ। এক ছাত্র উঠে জিজ্ঞেস করলেন, ‘স্যর, এমন প্রশ্ন কি পরীক্ষায় আসতে পারে?’ শুনেই মাস্টারমশাই যেন ভীষণ রেগে গেলেন। ছাত্রকে বললেন, ‘আপনার কি মনে হয়, এটা জিজ্ঞেস করার মতো প্রশ্ন?’ মাথা হেঁট হয়ে যায় ছাত্রের।

তবে ছাত্রটিও ছাড়ার পাত্র নন। পরীক্ষায় প্রশ্ন এল ক্লাসে পড়ানো সেই বিষয়টি নিয়েই। সেই মাস্টারমশাইয়েরই করা প্রশ্নটা। প্রশ্ন পড়তে গিয়ে ছাত্রের কী যেন মনে হল, একটু ভুল রয়েছে। কোথায় ভুল, তাঁর বিশদ ব্যাখ্যা দিয়ে উত্তরপত্রে জমিয়ে লিখলেন ছাত্রটি।

ছাত্রের নাম, সুকুমার সেন। মাস্টারমশাই সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। তবে তিনিও যে সুনীতিকুমার! প্রখর তাঁর স্মৃতি। এবং সেই সঙ্গে রসিকতা তাঁর মজ্জায়।

এই ঘটনার তিন বছর বাদে।

কী এক সমস্যা নিয়ে সুকুমারবাবু গিয়েছেন মাস্টারমশাইয়ের বাড়ি। সেখানে তখন আরও এক জন মহাপণ্ডিত উপস্থিত। ‘স্যর’ ভাবলেন, একটু মজা করা যাক। ছাত্রের সঙ্গে সেই পণ্ডিতের পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে বললেন, ‘এই যে ইনি আমার প্রশ্নে ভুল দেখিয়েছিলেন।’ আর যাঁর সঙ্গে পরিচয় করালেন ছাত্রের, তিনি ভাষাতত্ত্বের আরও এক ভগীরথ। মহম্মদ শহীদুল্লাহ!

অন্য বিষয়গুলি:

Suniti Kumar Chatterji
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE