Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Uma Maheswari

কোভিডে মৃত্যু স্বামীর, নিজের ক্যানসার! সব বাধা পেরিয়ে পোশাকের নিজস্ব ব্র্যান্ড গড়েন উমা

মা-মেয়ে জানিয়েছেন, এই ছোট্ট উদ্যোগের মাধ্যমে তেলঙ্গানার স্থানীয় হস্তশিল্পী এবং নকশাদারদের কাজকে ছড়িয়ে দিতে চান।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ১৩:০৬
Share: Save:
০১ ১৭
স্বামীকে হারিয়েছিলেন কোভিডে। স্বামীর মৃত্যুর দিনে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল তাঁরও। মাস দু’য়েক পর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। ধরা পড়েছিল জরায়ুর ক্যানসার। সব বাধাকে তুচ্ছ করে মেয়ের সঙ্গে মিলে ডিজাইনার পোশাকের ব্যবসা শুরু করেছিলেন ৬০ বছরের উমা মহেশ্বরী।

স্বামীকে হারিয়েছিলেন কোভিডে। স্বামীর মৃত্যুর দিনে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল তাঁরও। মাস দু’য়েক পর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। ধরা পড়েছিল জরায়ুর ক্যানসার। সব বাধাকে তুচ্ছ করে মেয়ের সঙ্গে মিলে ডিজাইনার পোশাকের ব্যবসা শুরু করেছিলেন ৬০ বছরের উমা মহেশ্বরী।

০২ ১৭
মা-মেয়ের দাবি, পোশাকের ব্যবসাকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসাবে দেখেন না তাঁরা। বরং এই ছোট্ট উদ্যোগের মাধ্যমে তেলঙ্গানার স্থানীয় হস্তশিল্পী এবং নকশাদারদের কাজকে ছড়িয়ে দিতে চান। কর্মীদের শক্ত জমিতে দাঁড় করানোও লক্ষ্য তাঁদের।

মা-মেয়ের দাবি, পোশাকের ব্যবসাকে অর্থ উপার্জনের উপায় হিসাবে দেখেন না তাঁরা। বরং এই ছোট্ট উদ্যোগের মাধ্যমে তেলঙ্গানার স্থানীয় হস্তশিল্পী এবং নকশাদারদের কাজকে ছড়িয়ে দিতে চান। কর্মীদের শক্ত জমিতে দাঁড় করানোও লক্ষ্য তাঁদের।

০৩ ১৭
উমার সঙ্গে পোশাকের ব্যবসায় হাত মিলিয়েছেন মেয়ে রিতেশা জয়রাজ। ২৮ বছরের এই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বসবাস করেন আমেরিকায়। তবে ব্যবসার খুঁটিনাটিতে মাকে সাহায্য করার জন্য আমেরিকা থেকে হায়দরাবাদে ঘন ঘন আসা-যাওয়া রয়েছে তাঁর।

উমার সঙ্গে পোশাকের ব্যবসায় হাত মিলিয়েছেন মেয়ে রিতেশা জয়রাজ। ২৮ বছরের এই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বসবাস করেন আমেরিকায়। তবে ব্যবসার খুঁটিনাটিতে মাকে সাহায্য করার জন্য আমেরিকা থেকে হায়দরাবাদে ঘন ঘন আসা-যাওয়া রয়েছে তাঁর।

০৪ ১৭
প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা, শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও মা-মেয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর, লড়াইয়ের কাহিনি জায়গা করে নিয়েছে সংবাদমাধ্যমে। সেখানে তাঁদের যাত্রাপথের গোড়ার কথা শুনিয়েছেন রিতেশা।

প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা, শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও মা-মেয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর, লড়াইয়ের কাহিনি জায়গা করে নিয়েছে সংবাদমাধ্যমে। সেখানে তাঁদের যাত্রাপথের গোড়ার কথা শুনিয়েছেন রিতেশা।

০৫ ১৭
রিতেশা বলেন, ‘‘২০২০ সালের জুনে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন মা। তার কিছু দিন পরেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বাবার। সে সময় মনে হত, সব এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।’’

রিতেশা বলেন, ‘‘২০২০ সালের জুনে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন মা। তার কিছু দিন পরেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বাবার। সে সময় মনে হত, সব এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।’’

০৬ ১৭
রিতেশাদের পরিবারে বিপদ আরও এসেছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা যে দিন মারা গিয়েছিলেন, সে দিনই মায়ের কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সময়টা কঠিন হলেও শোকের সময় ছিল না।’’

রিতেশাদের পরিবারে বিপদ আরও এসেছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা যে দিন মারা গিয়েছিলেন, সে দিনই মায়ের কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সময়টা কঠিন হলেও শোকের সময় ছিল না।’’

০৭ ১৭
রিতেশা জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুশোক ভুলতে কিছু একটা করার কথা মাথায় এসেছিল তাঁদের। ২০২০ সালের নভেম্বরে এই নতুন প্রজেক্ট শুরু করেন মা-মেয়ে।

রিতেশা জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুশোক ভুলতে কিছু একটা করার কথা মাথায় এসেছিল তাঁদের। ২০২০ সালের নভেম্বরে এই নতুন প্রজেক্ট শুরু করেন মা-মেয়ে।

০৮ ১৭
হায়দরাবাদের স্থানীয় কারিগরের নিপুণ হাতের কাজ তুলে ধরেছেন নিজেদের নকশা করা পোশাকে। তাঁতে বোনা কাপড়ে ইকত ডিজাইন ফুটে ওঠে এই ব্র্যান্ডের পোশাক থেকে ব্যাগপত্রে।

হায়দরাবাদের স্থানীয় কারিগরের নিপুণ হাতের কাজ তুলে ধরেছেন নিজেদের নকশা করা পোশাকে। তাঁতে বোনা কাপড়ে ইকত ডিজাইন ফুটে ওঠে এই ব্র্যান্ডের পোশাক থেকে ব্যাগপত্রে।

০৯ ১৭
সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে শাড়ি, কুর্তা ছাড়াও হুডি থেকে ট্রেঞ্চ কোট, সবই তৈরি করছেন উমা এবং রিতেশা। নিজের ব্র্যান্ডের পরিচিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি অতিমারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশেও দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা।

সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে শাড়ি, কুর্তা ছাড়াও হুডি থেকে ট্রেঞ্চ কোট, সবই তৈরি করছেন উমা এবং রিতেশা। নিজের ব্র্যান্ডের পরিচিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি অতিমারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশেও দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা।

১০ ১৭
যাত্রা শুরু হলেও তা মসৃণ পথে হয়নি। রিতেশা জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুর দু’মাস পরে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন তাঁর মা। অস্ত্রোপচারের পর হৃদ্‌পিণ্ডে স্টেন্ট বসাতে হয়েছিল।

যাত্রা শুরু হলেও তা মসৃণ পথে হয়নি। রিতেশা জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুর দু’মাস পরে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন তাঁর মা। অস্ত্রোপচারের পর হৃদ্‌পিণ্ডে স্টেন্ট বসাতে হয়েছিল।

১১ ১৭
সব কিছু যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল, ঝড় ওঠে তখনই। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জরায়ুর ক্যানসার ধরে পড়ে উমার। রিতেশা বলেন, ‘‘এত দ্রুত একের পর এক আঘাত লেগেছিল যে তার ধাক্কা সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল।’’

সব কিছু যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল, ঝড় ওঠে তখনই। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জরায়ুর ক্যানসার ধরে পড়ে উমার। রিতেশা বলেন, ‘‘এত দ্রুত একের পর এক আঘাত লেগেছিল যে তার ধাক্কা সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল।’’

১২ ১৭
একের পর এক ধাক্কা সামলে ব্যবসার কাজে মন দিয়েছিলেন উমা এবং তাঁর মেয়ে। উমা বলেন, ‘‘আমার শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে মেয়ের অবসাদ ধরা পড়ে। মেয়েকে সাহায্য করার জন্য উপায় খুঁজছিলাম। ছোটবেলা থেকেই ওর যে ডিজাইনার পোশাকের ব্র্যান্ড তৈরির স্বপ্ন ছিল, তা জানতাম। মনে হয়েছিল, সে স্বপ্নপূরণে এটাই সেরা সময়।’’

একের পর এক ধাক্কা সামলে ব্যবসার কাজে মন দিয়েছিলেন উমা এবং তাঁর মেয়ে। উমা বলেন, ‘‘আমার শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে মেয়ের অবসাদ ধরা পড়ে। মেয়েকে সাহায্য করার জন্য উপায় খুঁজছিলাম। ছোটবেলা থেকেই ওর যে ডিজাইনার পোশাকের ব্র্যান্ড তৈরির স্বপ্ন ছিল, তা জানতাম। মনে হয়েছিল, সে স্বপ্নপূরণে এটাই সেরা সময়।’’

১৩ ১৭
মাত্র আড়াই লক্ষ টাকায় নিজেদের প্রথম ব্যবসা শুরু করেছিলেন উমারা। সেকেন্দ্রাবাদে একটি কর্মশালা শুরু করেন তাঁরা। ইকত (স্থানীয় কারিগরেররা যে পদ্ধতিতে ডাই করেন) ডিজাইনের পোশাকআশাক তৈরি করে বিক্রি করাই ছিল উদ্দেশ্য।

মাত্র আড়াই লক্ষ টাকায় নিজেদের প্রথম ব্যবসা শুরু করেছিলেন উমারা। সেকেন্দ্রাবাদে একটি কর্মশালা শুরু করেন তাঁরা। ইকত (স্থানীয় কারিগরেররা যে পদ্ধতিতে ডাই করেন) ডিজাইনের পোশাকআশাক তৈরি করে বিক্রি করাই ছিল উদ্দেশ্য।

১৪ ১৭
ব্র্যান্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাস দু’য়েক পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের সংস্থার তৈরি পোশাক প্রথম বার বাজারে এসেছিল।

ব্র্যান্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাস দু’য়েক পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের সংস্থার তৈরি পোশাক প্রথম বার বাজারে এসেছিল।

১৫ ১৭
নিজেদের ব্র্যান্ডের পোশাকে ইকত ডিজাইনের নকশার ব্যবহারের নেপথ্যে ছোটবেলা বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে রিতেশার। তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলায় দেখতাম, প্রতি গ্রীষ্মে বিছানার পুরনো চাদর কেটে আমার স্কুলব্যাগ তৈরি করতেন মা। পাড়া-প্রতিবেশীদের বাচ্চাদের জন্য ইকতের নকশায় জামাকাপড় তৈরি করে দিতাম। এমনকি, এখনও পুরনো চাদর, শাড়ি দিয়ে এ ভাবে বালিশের কভার তৈরি করেন আমার শাশুড়ি।’’ ইউটিউবের ভিডিয়োর মাধ্যমে প্রতি দিনই নতুন নকশা শিখছেন বলে জানিয়েছেন রিতেশা।

নিজেদের ব্র্যান্ডের পোশাকে ইকত ডিজাইনের নকশার ব্যবহারের নেপথ্যে ছোটবেলা বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে রিতেশার। তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলায় দেখতাম, প্রতি গ্রীষ্মে বিছানার পুরনো চাদর কেটে আমার স্কুলব্যাগ তৈরি করতেন মা। পাড়া-প্রতিবেশীদের বাচ্চাদের জন্য ইকতের নকশায় জামাকাপড় তৈরি করে দিতাম। এমনকি, এখনও পুরনো চাদর, শাড়ি দিয়ে এ ভাবে বালিশের কভার তৈরি করেন আমার শাশুড়ি।’’ ইউটিউবের ভিডিয়োর মাধ্যমে প্রতি দিনই নতুন নকশা শিখছেন বলে জানিয়েছেন রিতেশা।

১৬ ১৭
তাঁদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কর্মীদের নিজের পরিবারের মতোই আপন করে নিয়েছেন উমারা। রিতেশা বলেন, ‘‘ব্যবসার প্রতিটি প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন মা। গোটা ইউনিটের জন্য নিজেই খাবার তৈরি করেন তিনি। নিজের জীবনের যেন নতুন উদ্দেশ্যে খুঁজে পেয়েছেন তিনি!’’

তাঁদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কর্মীদের নিজের পরিবারের মতোই আপন করে নিয়েছেন উমারা। রিতেশা বলেন, ‘‘ব্যবসার প্রতিটি প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন মা। গোটা ইউনিটের জন্য নিজেই খাবার তৈরি করেন তিনি। নিজের জীবনের যেন নতুন উদ্দেশ্যে খুঁজে পেয়েছেন তিনি!’’

১৭ ১৭
প্রিয়জনের মৃত্যুশোক ভোলার জন্য ব্যবসা শুরু করেছিলেন উমা। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় তাঁতি, বিশেষ করে তেলঙ্গানার নিজস্ব পোচমপল্লি ইকত শৈলী গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার আমাদের লক্ষ্য।’’

প্রিয়জনের মৃত্যুশোক ভোলার জন্য ব্যবসা শুরু করেছিলেন উমা। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় তাঁতি, বিশেষ করে তেলঙ্গানার নিজস্ব পোচমপল্লি ইকত শৈলী গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার আমাদের লক্ষ্য।’’

সব: ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy