Popsicle: How an 11-year-old Boy accidentally invented the Popsicle dgtl
ice cream
Popsicle: ফি বছরে বিক্রি দু’শো কোটি, ১১ বছরের খুদের ভুলে জন্ম কাঠি আইসক্রিমের!
দুপুরবেলা বাড়ির খোলা বারান্দায় বসে শরবতে চুমুক দিতে দিতে কখন যেন নিজের ঘরে ঢুকে পড়েছিল ওই খুদে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৪৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
লাল-নীল-হলদে রঙের সেই কাঠি আইসক্রিম (পপসিকল) খাওয়ার দিনগুলির কথা মনে পড়ে? ছুটির ঘণ্টা বাজলেই ছুটে যেতেন আইসক্রিমওয়ালার কাছে। হাতখরচ বাঁচিয়ে জমানো পয়সা দিয়ে কিনে ফেলতেন রঙিন কাঠি আইসক্রিম। কখনও বা কাঠফাটা রোদে কাঠি আইসক্রিম কিনে দেওয়ার জন্য মা-বাবার কাছে বায়না জু়ড়তেন। কী করে তৈরি হয়েছিল এই আইসক্রিম?
ছবি: সংগৃহীত।
০২১৫
ভেবেচিন্তে তৈরি করা নয়। কাঠি আইসক্রিমের জন্ম হয়েছিল একেবারেই আচমকা। তা-ও আবার ১১ বছরের এক খুদের হাত ধরে।
ছবি: সংগৃহীত।
০৩১৫
দুপুরবেলা বাড়ির খোলা বারান্দায় বসে শরবতে চুমুক দিতে দিতে কখন যেন নিজের ঘরে ঢুকে পড়েছিল ওই খুদে। বারান্দায় রয়ে গিয়েছিল সেই শরবতের গ্লাসটি। তাতে কিছুটা চিনি মেশানো সোডা-শরবত আর একটি কাঠি পড়েছিল। ওই কাঠি দিয়েই মাঝেমধ্যে শরবত নাড়িয়ে নাড়িয়ে চুমুক দিচ্ছিল সে। গ্লাসের কথা বেমালুম ভুলে যাওয়ায় রাতভর ঠান্ডায় তা পড়েছিল ওই বারান্দায়। পরের দিন সকালে উঠে খুদের নজরে পড়ে, গ্লাসের শরবত জমে বরফ! তার মাঝে কাঠিটি খাঁড়া হয়ে রয়েছে। কাঠিতে সাঁটা সেই বরফগোলা চেখে মনে হয়েছিল— দারুণ স্বাদু তো!
ছবি: সংগৃহীত।
০৪১৫
প্রায় ১১৭ বছর আগে এ ভাবেই হঠাৎ কাঠি আইসক্রিম তৈরি করে ফেলেছিলেন আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায় বাসিন্দা ফ্রান্সিস উইলিয়াম এপারসন। পরিচিতরা অনেকেই যাঁকে ফ্র্যাঙ্ক নামে ডাকতেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৫১৫
কাঠিতে সাঁটা ওই বরফের গোলা তৈরির কথা বন্ধুবান্ধবদের কাছে বলেছিলেন এপারসন। তারাও চেখে তারিফ করেছিল। এর পর পাড়ায় ও তার আশপাশে ওই কাঠি আইসক্রিম বিক্রি করতে শুরু করেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৬১৫
কাঠিটিকে হাতলের মতো ধরে তাতে সাঁটা বরফ চেটে খাওয়ার কথাও এপারসন জানান ক্রেতাদের। ওই বরফগোলার একটি গালভরা নামও রাখেন— এপসিকল। নিজের পদবির সঙ্গে ‘আইসিকল’ শব্দটি মিশিয়ে তৈরি নাম।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৫
বাড়ির আশপাশে কাঠি আইসক্রিম বিক্রি করেই দু’পয়সা রোজগার করছিলেন এপারসন। ওই ‘আবিষ্কার’-এর ১৮ বছর পর নিজের এলাকার বাইরে তা বিক্রির কথা চিন্তাভাবনা শুরু করেন। সেটি ১৯২৩ সাল। জমাট বাঁধা বরফের গোলা বিক্রির জন্য বেছে নেন ক্যালিফোর্নিয়ারই নেপচুন বিচ নামে একটি বিনোদনমূলক পার্ক এলাকা। ওই পার্কে কচিকাঁচাদের কাছে এপসিকল তখন সুপারহিট!
ছবি: সংগৃহীত।
০৮১৫
এপসিকলের জনপ্রিয়তা দেখে পেটেন্টের আবেদন করেন এপারসন। সেটি ১৯২৪ সাল। যদিও তত দিনে এপসিকলের নামবদল হয়েছে। ২৯ বছরের এপারসনের ছানাপোনারা তার নাম রেখেছিল পপ’স সিকল বা পপসিকল। সে নামেই কাঠি আইসক্রিমের পেটেন্ট করিয়েছিলেন এপারসন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৫
পপসিকলের বিজ্ঞাপনে এপারসন লিখেছিলেন, ‘হাত দিতে হয় না। কাঁটা-চামচ বা প্লেটের দরকার নেই। দারুণ দেখতে এই জমাটবাঁধা মিঠাইটি সহজেই মুখে পোরা যায়।’ বিজ্ঞাপনে পপসিকলের কাঠ নিয়েও গালভরা মন্তব্য করেছিলেন এপারসন। জানিয়েছিলেন, বার্চ বা পপলার কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে ওই কাঠি।
ছবি: সংগৃহীত।
১০১৫
কাঠি আইসক্রিমের জন্মগাথা যে প্রামাণ্য তা নয়। তবে এপারসনকেই এর জনক বলে মনে করেন অধিকাংশ। যদিও এই রূপকথায় শেষটা সুখের হয়নি। আর্থিক দুর্দশায় পড়ে ১৯২০ সালে জো লো কোম্পানিকে পপসিকলের সমস্ত সত্ত্ব বিক্রি করে দেন তিনি। সেই সংস্থাই এপারসনের আবিষ্কারকে আমেরিকা জুড়ে জনপ্রিয় করার কারিগর।
ছবি: সংগৃহীত।
১১১৫
গোড়ায় মোট সাতটি রঙের পপসিকল বিক্রি করা হত। ১৯২৯-১৯৩৯ সালে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহামন্দার সময় একটি প্যাকেটে জোড়া কাঠিযুক্ত দু’টি পপসিকল বিকোনো শুরু হয়েছিল। তার দাম ছিল মাত্র পাঁচ সেন্ট। যাতে একই পরিবারের দু’টি বাচ্চার জন্য নামমাত্র মূল্যে একটি পপসিকলের প্যাকেট কিনে দিতে পারেন মা-বাবা।
ছবি: সংগৃহীত।
১২১৫
পেপসিকলের প্রতিদ্বন্দ্বীও আমেরিকার বাজারে এসে গিয়েছিল। চকোলেটে সাঁটা কাঠি আইসক্রিম নিয়ে বাজার ধরতে শুরু করে দিয়েছিল গুড হিউমার নামে একটি সংস্থা। তাতে কপিরাইট আইনভঙ্গের মামলা ঠুকে দেয় জো লো কোম্পানি।
ছবি: সংগৃহীত।
১৩১৫
আইসক্রিম-যুদ্ধে আদালতের রায় ছিল, জমাট বাঁধা বরফের কাঠি আইসক্রিম বেচবে জো লো। এবং চকোলেটে সাঁটা কাঠি আইসক্রিম বিক্রি করতে পারবে গুড হিউমার। এর পরেও অবশ্য ওই দুই সংস্থার আইনি যুদ্ধ থামেনি। মিল্ক পপসিকল বাজারে আসার পর শরবত এবং আইসক্রিমের সংজ্ঞা নিয়ে এ বার পরের পর মামলায় ঠোকাঠুকি চলে দুই সংস্থায়।
ছবি: সংগৃহীত।
১৪১৫
১৯৮৯ সালে আইসক্রিম-যুদ্ধের অবসান হয়। পপসিকল ব্র্যান্ডের মালিকানা কিনে নেয় ইউনিলিভার। পরে তারা গুড হিউমারেরও দখল নেয়। ফলে যুযুধান দু’পক্ষই এক ছাতায় তলা এসে দাঁড়ায়।
ছবি: সংগৃহীত।
১৫১৫
তত দিনে অবশ্য প্রয়াত পপসিকলের জনক। ১৯৮৩ সালে এপারসনের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ওকল্যান্ডের মাইন্টেন ভিউ কবরখানায়। যদিও তত দিনে কাঠি আইসক্রিমের সঙ্গে নিজেকে পাকাপাকি ভাবে জুড়ে ফেলেছেন এপারসন। আজকাল ফি বছরে বিক্রি হয় কমপক্ষে ২০০ কোটি পপসিকল!